দুর্নীতি ও সন্ত্রাসী একটি গোষ্ঠীকে সহায়তাসহ বিভিন্ন অভিযোগে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ও ইস্তাম্বুল শহরের মেয়র একরেম ইমামোগলুকে আটক করা হয়েছে। বুধবার ইস্তাম্বুলের এই মেয়রকে কর্তৃপক্ষ আটক করায় দেশটির প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টি (সিএইচপি) বলেছে, এটি ‘‘আমাদের পরবর্তী প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থান’’।
ইস্তাম্বুলের জনপ্রিয় মেয়র একরেম ইমামোগলুর বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ দেশজুড়ে বিরোধীদের ওপর প্রায় মাসব্যাপী ধরপাকড় অভিযানের মাঝে এসেছে। ইমামোগলুর জনপ্রিয়তা আগামী যেকোনো নির্বাচনে ভালো ফলের ইঙ্গিত দিচ্ছে। এর মাঝেই তাকে আটকের ঘটনা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে সমালোচকরা অভিযোগ করেছেন।
তবে তুরস্কের সরকার বিরোধীদের আনা এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, দেশের বিচারবিভাগ স্বাধীন। গত মাসে দেশটির নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির (পিকেকে) কারাবন্দি এক নেতা গোষ্ঠীটির সদস্যদের অস্ত্র সমর্পণের নির্দেশ দেন। এর মাধ্যমে দেশটিতে এক দশকের বেশি সময় ধরে চলা বিদ্রোহের অবসানের পথ তৈরি হয়েছে; আঞ্চলিক শান্তির জন্যও বিদ্রোহীদের এই ঘোষণাকে বড় পদক্ষেপ হিসেবে মনে করা হচ্ছে।
সাম্প্রতিক কিছু মতামত জরিপে ৫৪ বছর বয়সী একরেম ইমামোগলুকে দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানের চেয়ে এগিয়ে থাকতে দেখা গেছে। তার বিরুদ্ধে বর্তমানে পৃথক দুটি তদন্ত চলছে; যার মধ্যে অপরাধমূলক সংগঠনের নেতৃত্বদান, ঘুষ লেনদেন ও টেন্ডার জালিয়াতির অভিযোগ আছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা একটি ভিডিওতে ইস্তাম্বুলের দুই মেয়াদের এই মেয়র বলেছেন, তিনি কোনও কিছুতেই হাল ছাড়ছেন না এবং চাপের মুখেও নিজের অবস্থানে অনড় থাকবেন। আটক করার জন্য আইনশৃঙ্খলাবাহিনী বুধবার সকালের দিকে তার বাড়িতে হানা দেয়। এ সময় ইস্তাম্বুলের মেয়রকে বাড়ি ছেড়ে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সঙ্গে চলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিতে দেখা যায়।
আগামী ২০২৮ সালে তুরস্কে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। সেই নির্বাচনের আগে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দেশটির প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টি (সিএইচপি) আনুষ্ঠানিকভাবে ইমামোগলুর নাম ঘোষণার কথা রয়েছে।