রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করতে দ্বিধা করবেন না বলে সতর্ক করেছে সার্বিয়া। সার্বিয়ান প্রেসিডেন্ট আলেকসান্ডার ভুসিক একথা জানিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, পুতিন পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করতে দ্বিধা করবেন না যদি তার দেশের নিরাপত্তা ও সামরিক বাহিনী হুমকির মুখে পড়ে এবং যদি তার অন্য কোনো বিকল্প না থাকে।
বুধবার (২০ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
টানা আড়াই বছরেরও বেশি সময় ধরে চলছে রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধ। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে এই সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে পূর্ব ইউরোপের এই দেশটিকে সহায়তা করে আসছে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্বের একাধিক দেশ।
বিশেষ করে অস্ত্র দেওয়ার পাশাপাশি দেশটিকে ব্যাপকভাবে সামরিক তহবিলও জুগিয়ে এসেছে ওয়াশিংটন। তবে এরপরও যুদ্ধক্ষেত্রে রাশিয়ার অগ্রযাত্রা অব্যাহত রয়েছে। আর এমন অবস্থায় সম্প্রতি প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন রাশিয়ার গভীরে আঘাত হানার জন্য ইউক্রেনকে মার্কিন দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করার অনুমতি দিয়েছেন।
অন্যদিকে ইউক্রেন যদি যুক্তরাষ্ট্রের দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে রাশিয়ার ভূখণ্ডে আঘাত হানে, তবে তার জবাবে তারা “যথাযথ ও কার্যকর” পদক্ষেপ নেবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে রাশিয়া। তবে যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহ করা দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে ইতোমধ্যেই রাশিয়ার অভ্যন্তরে হামলা চালিয়েছে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী।
যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে রাশিয়ার অভ্যন্তরে হামলার অনুমতি দেওয়ার ৪৮ ঘণ্টা অতিক্রান্ত হওয়ার আগেই এ পদক্ষেপ নেয় ইউক্রেনীয় বাহিনী।
এমন অবস্থায় প্রেসিডেন্ট ভুসিক মনে করছেন, বিপর্যয় থেকে বিশ্ব মাত্র এক ধাপ দূরে এবং পরবর্তী পদক্ষেপটি হয়তো পারমাণবিক সংঘাতের দিকে নিয়ে যেতে পারে।
জনসাধারণের উদ্দেশ্যে দেওয়া এক ভাষণে তিনি বলেন, “পরিপূর্ণ বিপর্যয়ের জন্য ১০টি ধাপ আছে, আমরা নবমটি অতিক্রম করেছি। আমি যা মনে করি তা খুলে বলব। আমি মনে করি, কেউ তাদের কাছে থাকা সমস্ত অস্ত্র ব্যবহার করতে দ্বিধা করবে না…পশ্চিমা দেশগুলো বলবে, পুতিন গেম খেলছেন এবং এটি (পরমাণু অস্ত্র) নিয়ে হুমকি দিচ্ছেন, কিন্তু তিনি আসলে ভয় পান, এবং খুব কম লোকই আছেন যারা আমার মতো করে প্রেসিডেন্ট পুতিনকে চেনেন।”
তিনি আরও বলেন, “যদি মস্কো এবং তার বাহিনীর নিরাপত্তা হুমকির সম্মুখীন হয়… তাহলে তিনি এক মুহূর্তের জন্যও দ্বিধা করবেন না।”
সার্বিয়া সংঘাতের সম্ভাব্য এই বৃদ্ধির জন্য মোটেও প্রস্তুত নয় বলেও জানান ভুসিক। তার মতে, “আমরা সম্পূর্ণরূপে অপ্রস্তুত। আমাদের আশ্রয়কেন্দ্রে ২ লাখ ৫৭ হাজার লোকের জন্য জায়গা আছে, এবং আমাদের…আবার অবকাঠামো পুনর্নির্মাণ শুরু করতে হবে, অন্তত দশ লাখ-১৫ লাখের জন্য, যেন তারা আশ্রয়কেন্দ্রে থাকতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা এই বিষয়ে নিরলসভাবে কাজ করব। আমি নাগরিকদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী যে আমরা সময়মতো এই কাজটি শুরু করিনি, তবে আমরা এটি মোকাবিলা করব।”