বরগুনায় চুরির অভিযোগে প্রকাশ্যে এক বৃদ্ধকে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এমন একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। তবে মারধরের শিকার ওই ব্যক্তির পরিচয় জানতে না পারলেও মারধরকারীদের মধ্যে তিনজনকে শনাক্ত করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) দুপুরের পর থেকে ২ মিনিট ১ সেকেন্ডের ওই ভিডিওটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
এ ঘটনায় শনাক্তকারীরা হলেন—ডালিম মাতবর, মঈন ও আবুল বাসার।
বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেওয়ান জগলুল হাসান মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ওই ভিডিওতে দেখা যায়, বরগুনা পৌর শহরের সদর রোড এলাকার হোটেল তাজ-সংলগ্ন একটি কম্পিউটারের দোকানের সামনে প্রথমে এক ব্যক্তি লাঠি দিয়ে ওই বৃদ্ধকে মারছেন। এ সময় অসংখ্য উৎসুক মানুষকে চারপাশে ভিড় করে থাকতে দেখা যায়। তবে কাউকে মারধরের প্রতিবাদ কিংবা বাধা দিতে দেখা যায়নি।
ভিডিওতে দেখা যায়, অপর আরেক ব্যক্তি তার মাথা চেপে ধরে রাস্তায় বাসানোর চেষ্টা করছেন। মারধরের শিকার বৃদ্ধকে বলতে শোনা যায়, ‘পইরা পাইছি’ (ফালানো পেয়েছি)। পরে আরও কয়েকজন মিলে শক্তি প্রয়োগ করে ঘার ও মাথা চেপে ধরে রাস্তায় বসানোর চেষ্টা করেন। এরপর আবারও প্রথম ব্যক্তির সঙ্গে আরও দু-একজন মিলে লাঠি দিয়ে মারতে শুরু করেন। একপর্যায়ে তাদের হাত থেকে দৌড়ে পালিয়ে যান ওই বৃদ্ধ।
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট মো. লুৎফর রহমান ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওটির বিষয়ে জড়িতদের গ্রেপ্তারের আহ্বান জানিয়ে তার ফেসবুক প্রফাইলে লেখেন, ‘বরগুনা শহরে গতকাল প্রকাশ্য দিবালোকে একজন বয়স্ক লোককে কতিপয় লোক হোটেল তাজের মোড়ে ব্যাপক মারধোর করেছে, দফায় দফায় লাঠিপেটা করেছে। দৃশ্যটি হৃদয়বিদারক। এ ব্যাপারে দোষীদের চিহ্নিত করে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ, দোষীদের গ্রেপ্তার এবং সঠিক তদন্তের জন্য বরগুনা জেলার পুলিশ সুপার এবং বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। বরগুনা প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সম্পাদকের দৃষ্টি আকর্ষন করছি, এ ব্যাপারে অতি দ্রুত বিস্তারিত খবরাখবর জেনে-শুনে-বুঝে সংবাদ প্রচার করার জন্য অনুরোধ করছি। আমাদের মনে রাখা উচিৎ, আইন নিজ হাতে তুলে নিয়ে অপরাধীকে রাস্তায় বিচার করার এখতিয়ার কারো নাই, অপরাধী বা সন্দেহভাজন কেউ হলে তাকে আইনে সোপর্দ করতে হবে।’
এ বিষয়ে বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেওয়ান জগলুল হাসান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ফেসবুকে দেখেছি, একজন বয়স্ক লোককে ছিনতাইকারী অভিযোগে মারধর করা হচ্ছে। তবে এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো অভিযোগ আমরা পাইনি। ভিডিওটি দেখে কে কে মারধর করেছেন তাদেরকে আমরা শনাক্ত করতে পেরেছি। যিনি মারধরের শিকার হয়েছেন তার বাড়ি বেতাগী উপজেলায়, তবে এখন পর্যন্ত তাকে আমরা পাইনি। এ ঘটনায় যারা জড়িত তাদেরকে খুঁজে বের করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।