আব্দুল্লাহ আল নোমান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, সাভার (ঢাকা): ঢাকার আশুলিয়ায় ছয় বছরের শিশু সিনথিয়াকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। সোমবার (০৯ জানুয়ারি) দুপুরে আশুলিয়া থানা পুলিশ আসামি আব্দুল কাদেরকে ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠালে সে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও আশুলিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) জামাল সিকদার।
এর আগে, শনিবার (০৭ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় গ্রেপ্তার কাদেরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী আশুলিয়ার খেজুর বাগান এলাকার নুরুল হক সরকারের মালিকানাধীন টিনসেড বাড়ির পয়োনিষ্কাশন ড্রেন থেকে শিশু সিনথিয়ার মরদেহ উদ্ধার করে র্যাব। পরে রোববার (৮ জানুয়ারি) রাতে গ্রেপ্তার আব্দুল কাদেরকে আশুলিয়া থানায় হস্তান্তর করে র্যাব-৪।
শিশুটির বাবা জসিনূর রহমান আব্দুল কাদের কে প্রধান আসামি করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। আসামি কাদের সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার সায়দাবাদ পুনর্বাসন গ্রামের শাহাদাত হোসেনের ছেলে। শিশু সিনথিয়ার বাবার বাড়ি নীলফামারী জেলায়। মা-বাবার সঙ্গে আশুলিয়ার খেজুর বাগান এলাকায় ভাড়া বাড়িতে থাকত সে। একই বাসায় ভাড়া থেকে পোশাক কারখানায় কাজ করত কাদের।
পুলিশ বলেছে, সুরতহাল প্রতিবেদনে শিশুটিকে হত্যার আগে ধর্ষণের আলামত মিলেছে। তাদের ধারণা, হত্যার আগে শিশুটি ধর্ষণের শিকার হয়েছে। লাশ ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার বাড়ির উঠানে খেলছিল শিশুটি। এসময় চকলেটের প্রলোভন দেখিয়ে শিশুটিকে তার কক্ষে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করে কাদের। শুধু তাই নয়, মুক্তিপণের জন্য শিশুটিকে সে আটকে রাখে। এক পর্যায়ে শিশুটি চিৎকার শুরু করলে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। এর পর লাশ ব্যাগে ভরে পয়োনিষ্কাশন ড্রেনে ফেলে দেয়।
শিশুটির বাবা জানান, বুধবার নিখোঁজ হওয়ার পর মোবাইল ফোনে মুক্তিপণ দাবি করে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিরা। পরে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পৃথক নাম্বারে তাদের ১৫ হাজার টাকাও দেন। সেই সূত্র ধরেই প্রতিবেশী কাদেরকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। এছাড়া কাদেরের ঘরে খাটের নিচ থেকে লাশ লুকিয়ে ফেলার কাজে ব্যবহৃত ট্রলিব্যাগ ও বাড়ির টিনের চাল থেকে শিশুর জামা ও জুতা উদ্ধার করা হয়েছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (অপারেশন) জামাল সিকদার বলেন, ধর্ষণ ও হত্যার কথা স্বীকার করেছে আসামি। ঘটনায় সে একাই জড়িত।