স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখার জন্য ঘরে রান্না করা খাবার খাওয়াকে সর্বোত্তম উপায় বলে মনে করা হয়। যেখানে সাধারণত প্রক্রিয়াজাত খাবার, প্রিজারভেটিভ এবং অস্বাস্থ্যকর চর্বি এড়িয়ে চলার হয়। তবুও ঘরে তৈরি খাবার খাওয়া পর পেট ফুলে যাওয়া বা পেট ফাঁপার অভিজ্ঞতা হয় অনেকের। একটি সাধারণ হজম সমস্যা। যদিও এটি বেশিরভাগ সময়েই ঘটে প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়ার কারণে, তবে বাড়িতে তৈরি খাবারও কখনো কখনো নির্দিষ্ট উপাদান, পরিমাণ এবং খাদ্যাভ্যাসের কারণে অস্বস্তির কারণ হতে পারে। বাড়িতে রান্না করা খাবার খেয়েও পেট ফুলে যাওয়ার সবচেয়ে সাধারণ কারণগুলো জেনে নিন-
১. মসলার অতিরিক্ত ব্যবহার
আমাদের বেশিরভাগ খাবার তৈরির পদ্ধতিই বিভিন্ন ধরনের মসলার ওপর নির্ভর করে। যদিও জিরা, হলুদ এবং আদার মতো মসলা হজমে সহায়তা করে, তবে কিছু মসলা অতিরিক্ত পখাওয়ার ফলে অন্ত্রের আস্তরণে জ্বালাপোড়া করতে পারে বা গ্যাস তৈরি করতে পারে। অতিরিক্ত লাল মরিচযুক্ত খাবার পেটের আস্তরণে জ্বালাপোড়া করতে পারে এবং অ্যাসিড রিফ্লাক্স এবং পেট ফাঁপা সৃষ্টি করতে পারে। হিং গ্যাস কমাতে ব্যবহার করা হয়, কিন্তু কারও কারও ক্ষেত্রে এটি বিপরীত প্রভাব ফেলতে পারে। রসুন এবং পেঁয়াজ বেশিরভাগ তরকারিতেই ব্যবহার করা হয়, এগুলোতে ফ্রুকটান থাকে, যা এক ধরনের গাঁজনযোগ্য ফাইবার। যা কারও কারও হজমে সমস্যা করে, যার ফলে পেট ফুলে যায় এবং গ্যাস তৈরি হয়।
২. উচ্চ-সোডিয়াম খাবার
উচ্চ-লবণযুক্ত খাবার খাওয়ার ফলে পানি ধরে রাখা এবং পেট ফাঁপার মতো সমস্যা হতে পারে, এমনকি যদি তা তাজা উপাদান দিয়েও তৈরি করা হয়। অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ করলে তা টিস্যুতে পানি টেনে নেয়, যার ফলে পেট ফাঁপা হয়। ২০১৯ সালে আমেরিকান জার্নাল অফ গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজির একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, উচ্চ সোডিয়াম গ্রহণ অন্ত্রের মাইক্রোবায়োটা পরিবর্তন করতে পারে এবং তরল ধরে রাখা বৃদ্ধি করতে পারে, যা পেট ফাঁপা বৃদ্ধি করে।
৩. গ্যাস তৈরি করে এমন সবজি
বাঁধাকপি, ফুলকপি এবং ব্রোকলিতে র্যাফিনোজ থাকে, যা অপাচ্য থাকে এবং অন্ত্রে গাঁজন করলে গ্যাস তৈরি হয়। মটরশুটি, মসুর ডাল এবং ছোলা অলিগোস্যাকারাইড সমৃদ্ধ, যা পেট ফাঁপার সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। মূলা এবং পেঁয়াজে সালফার যৌগ থাকে যা গ্যাস তৈরি করে।
৪. খুব দ্রুত বা অসময়ে খাওয়া
খাওয়ার ধরন বা সময়ও হজমের স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলে। খুব দ্রুত খাওয়া, অনিয়মিত খাবারের সময় রাখা, সঠিকভাবে না চিবানো, বিছানায় বসে খাওয়া অথবা খাওয়ার পরপরই শুয়ে থাকা সবই হজমে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। খুব দ্রুত খাবার খেলে অতিরিক্ত বাতাস (অ্যারোফ্যাজিয়া) গিলে ফেলা হতে পারে, যার ফলে পেট ফুলে যেতে পারে। খাবারের সময় নির্দিষ্ট না হলে শরীরের স্বাভাবিক হজমের ছন্দ ব্যাহত করে, যার ফলে হজমশক্তি কমে যায়। রাতে দেরিতে বেশি খাবার খেলে এবং তার ঠিক পরেই ঘুমাতে গেলে হজম প্রক্রিয়া ধীর হয়ে যায় এবং অ্যাসিড রিফ্লাক্স এবং পেট ফুলে যাওয়ার সমস্যা হতে পারে।