এমআরটি পুলিশ সদস্য কর্তৃক ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) চারজন সহকর্মী মৌখিক ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনায় আংশিক কর্মবিরতির পালন করছেন মেট্রো রেলকর্মীরা। ফলে অনেক যাত্রীই বিনা ভাড়ায় মেট্রোরেল ভ্রমণের সুযোগ নিচ্ছেন।
সোমবার (১৭ এপ্রিল) সকাল থেকে মেট্রোরেলের সব স্টেশনে প্যাসেঞ্জার গেটে (পিজি গেইট) এমআরটি বা র্যাপিড পাস ব্যবহার করতে পারছেন না যাত্রীরা। গেটগুলোতে মেট্রোরেলের কোনও কর্মী নেই। কয়েকজন জায়গায় শুধু আনসার সদস্যদের দেখা গেছে।
এর আগে মধ্য রাতে ‘ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড এর সব কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের’ ব্যানারে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ঘটনা তুলে ধরে ৬টি দাবি জানানো হয়। দাবি আদায়ে তার কর্মবিরতি ঘোষণা করে।
সকাল থেকে মেট্রোরেলের কোনও স্টাফদের এখানে দেখা যায়নি। কনকোর্স প্লাজায় প্রতিটি রুম ফাঁকা। নিরাপত্তা কর্মীদের সঙ্গে ২/১ জন স্টাফ আছেন। কিন্তু তারা কোনও কাজ করছেন না।
যাত্রীরা ফ্রিতে যাতায়াত করছেন স্টেশন দিয়ে।
আব্দুল্লাহিল মারুফ নামের এক যাত্রী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন, সকাল সাড়ে ৮টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্টেশনে নামলাম। এক্সিট পয়েন্টে মেশিন অফ। কার্ড পাঞ্চ করা যাচ্ছে না৷ স্টেশন রুমে দায়িত্বপ্রাপ্ত কাউকে পেলাম না৷
এক্সিট গেটে কাস্টমার রিলেশন অ্যাসিস্ট্যান্ট (সিআরএ) বললেন, চলে যান। কোনো সমস্যা নেই। আমি দেখলাম শুধু একক যাত্রার টিকিটও তারা হাতে হাতে সংগ্রহ করছেন।
তিনি আরও লিখেছেন, যথারীতি ট্রেন চলছে তবে ভাড়া লাগছে না। এতে রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।
আকিবুল হাসান নিজাম নামে এক যাত্রী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন, আমি কারওয়ান বাজার হতে পাঞ্চ ছাড়ায় মেট্রোতে উঠলাম এবং আগারগাঁও বের হওয়ার সময় পাঞ্চ করে বের হলাম। টাকা কাটে নি। পরবর্তীতে কী সমস্যা হবে বা জরিমানা গুনতে হবে? কারওয়ান বাজার স্টেশন হতে বলেছিল ফ্রি এন্ট্রি। আগারগাঁওতে টিকিট টাকা ইন করার লোক আছে দেখলাম।
তানজিমা রহমান নামে আরেক যাত্রী লিখেছেন, পল্লবী স্টেশন থেকে পাঞ্চ করে উঠতে হয়েছে, কিন্তু কারওয়ান বাজার স্টেশনে পাঞ্চ ছাড়াই বের করে দিচ্ছে। মেশিনও বন্ধ রাখা হয়েছে। বলছে আজকের জন্য ফ্রি। তাহলে যদি পরে জরিমানা করা হয়, এর দায়িত্ব কার? ৪৫ টাকার জায়গায় কেন আমি ২০০ টাকা জরিমানা দেব?
ডিএমটিসিএল-এর পরিচালক (প্রশাসন) এ. কে. এম. খায়রুল আলম বলেন, গতকাল ঘটনার পরেই ডিএমটিসিএল-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারুক আহমেদ ও সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুর রউফ (বর্তমানে সেতু সচিব) সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগে কথা বলেছেন৷ তারা পুরো বিষয়টি দেখভাল করছেন৷ আশা করি, আজকের মধ্যে পুরো বিষয়টি সুরাহা করা যাবে৷
পিজি গেটে কার্ড পাঞ্চ করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কালকের (রোববার) ঘটনায় মেট্রোরেলের কর্মকর্তা, কর্মচারীরা ক্ষিপ্ত৷ তারা কর্মবিরতির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সেটি তো সবাই জানেন৷ এখন তারা কাজ করছেন না বলে কোনো কার্ডই পাঞ্চ করতে পারছেন না যাত্রীরা৷ আমরা এ বিষয়টি খুব দ্রুত সমাধান করতে চাই৷ তা না হলে আজ বড় অঙ্কের রাজস্ব হারাব৷