ইয়েমেনের হুথিদের “সম্পূর্ণরূপে নির্মূল” করা হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি ইরানকে হুথিদের প্রতি সমর্থন বন্ধ করার আহ্বানও পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
ইয়েমেনি এই গোষ্ঠীটি যুক্তরাষ্ট্রের কাছে পরাজিত হবে বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ট্রাম্প। বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই মন্তব্য এমন এক সময়ে এলো যখন হুথিরা লোহিত সাগর অঞ্চলে আমেরিকান যুদ্ধজাহাজ লক্ষ্য করে হামলার পাশাপাশি ইসরায়েলেও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের দাবি করেছে।
বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
এর আগে বুধবার ইয়েমেনের রাজধানী সানাসহ হুথিদের শক্ত ঘাঁটিতে আবারও মার্কিন হামলার ঘটনা ঘটেছে। এমন অবস্থায় ট্রাম্প একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে লিখেছেন, “বর্বর হুথিদের ওপর হামলায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে, এবং দেখুন এটি ক্রমশ আরও খারাপ হতে চলেছে— এটি এমনকি একটি ন্যায্য লড়াইও নয়, এবং কখনও হবেও না। তাদের সম্পূর্ণরূপে নির্মূল করা হবে!”
এর আগে গত শনিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, তিনি হুথিদের বিরুদ্ধে “বড় আক্রমণ” চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন। হুথিদের প্রতিবেদন অনুসারে, সেই সময় থেকে মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত — ইয়েমেনে কয়েক ডজন মার্কিন বিমান হামলা রেকর্ড করা হয়েছে — যার ফলে ৫৩ জন নিহত এবং ১০৭ জন আহত হয়েছের।
হতাহতদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে। চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর এটিই ছিল ইয়েমেনে প্রথম বিমান হামলা। মূলত হুথিরা ইয়েমেনের সানা নিয়ন্ত্রণ করে এবং নিজেদেরকে দেশের সরকারি সশস্ত্র বাহিনী হিসেবে উপস্থাপন করে থাকে।
২০২৩ সাল থেকে হুথিরা লোহিত সাগরে এবং তার আশপাশে জাহাজ লক্ষ্য করে এবং ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করছে। গাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য ইসরায়েলি সরকারকে চাপ দেওয়ার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে এসব হামলা চালানো হচ্ছে বলেও জানিয়েছে তারা।
তবে চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছিল এবং সেই সময় থেকে লোহিত সাগরে আক্রমণ বন্ধ করে দেয় হুথিরা। কিন্তু ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ ওই ভূখণ্ডে মানবিক সহায়তার প্রবেশে ইসরায়েলের অবরোধের জবাবে এই মাসের শুরুতে পুনরায় শুরু করে গোষ্ঠীটি।
এছাড়া ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দুই মাস ধরে বজায় থাকা যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ করার পর হুথিরা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে তাদের সরাসরি সামরিক অভিযানও পুনরায় শুরু করে। গাজায় এই সপ্তাহে ইসরায়েলের নারকীয় তাণ্ডবে শত শত ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনও ইয়েমেনে হুথিদের অবস্থানগুলোতে বোমাবর্ষণ করেছিল। কিন্তু ওয়াশিংটনের সেসব অভিযান সশস্ত্র এই গোষ্ঠীর আক্রমণ থামাতে ব্যর্থ হয়েছিল।
এমন অবস্থায় বুধবার নিজের সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে ট্রাম্প “রিপোর্ট” উদ্ধৃত করে দাবি করেন, ইরান হুথিদের প্রতি তার সমর্থন কমিয়ে দিচ্ছে কিন্তু এখনও “বড় পরিমাণে (সামরিক) সরবরাহ পাঠাচ্ছে”।
তিনি লিখেছেন, “ইরানকে অবিলম্বে এই সরবরাহ পাঠানো বন্ধ করতে হবে। হুথিদের নিজেদেরই লড়াই করতে দিন। যেভাবেই হোক তারা হেরে যাবে, কিন্তু এইভাবে তারা দ্রুত হেরে যাবে।”
ট্রাম্প অবশ্য ইতোপূর্বে ইরানকে হুথিদের ওপর লাগাম টেনে না ধরলে প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন।