আমরা সবাই জানি যে পানি আমাদের শরীরের জন্য অপরিহার্য, কিন্তু শুধু পানি পান করা অনেক সময় একঘেয়ে মনে হতে পারে। তবে আপনি চাইলে কিছু শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যোগ করে পানিকে আরও শক্তিশালী করতে পারেন। যা কেবল স্বাদই বাড়ায় না বরং বিপাক বৃদ্ধি করে, ওজন কমাতে সাহায্য করে এবং সারাদিন ধরে সতেজ ও উজ্জীবিত রাখে। যদি কেবল সাধারণপিানি পান করে বিরক্ত হন, তাহলে আপনার গ্লাসে কিছু দুর্দান্ত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যুক্ত করুন-
১. লেবু
লেবুর পানি ওজন কমানোর জন্য একটি সুপারস্টার। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ লেবু বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেয়, হজমশক্তি বাড়ায় এবং বিপাককে ত্বরান্বিত করে। লেবুতে ফ্ল্যাভোনয়েডও রয়েছে, যা ফ্রি র্যাডিক্যালের বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং চর্বি ভাঙতে সাহায্য করে। উষ্ণ বা ঠান্ডা পানিতে অর্ধেক লেবু ছেঁকে নিন। অতিরিক্ত সুবিধার জন্য এক চিমটি ব্ল্যাক সল্ট বা মধু যোগ করুন। সকালে খালি পেটে অথবা সারা দিন ধরে পান করুন।
২. আদা
আদা কেবল ঠান্ডা এবং ফ্লুর জন্য নয়! এতে জিঞ্জেরল নামে একটি শক্তিশালী যৌগ রয়েছে, যা হজমশক্তি বাড়ায়, পেট ফাঁপা কমায় এবং চর্বি পোড়াতে সাহায্য করে। এটি রক্তে শর্করার মাত্রাও স্থিতিশীল করে, যার ফলে ক্ষুধা কম হয়। তাজা আদা কুচি করে গরম পানিতে মেশান। কয়েক মিনিট ভিজিয়ে পান করুন। স্বাদ বাড়ানোর জন্য এক ফোঁটা লেবু মেশাতে পারেন।
৩. দারুচিনি
দারুচিনি একটি আশ্চর্যজনক মসলা যা রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল করে, ক্ষুধা দমন করে এবং চর্বি জমাতে বাধা দেয়। এটি পলিফেনল, শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে পূর্ণ যা ইনসুলিন সংবেদনশীলতা এবং বিপাক উন্নত করে। একটি ছোট দারুচিনির কাঠি বা আধা চা চামচ দারুচিনির গুঁড়া গরম পানিতে ১০ মিনিটের জন্য ভিজিয়ে রাখুন এবং পান করুন। স্বাদ বাড়ানোর জন্য মধু বা আপেল সাইডার ভিনেগার যোগ করতে পারেন।
৪. পুদিনা
পুদিনা রোজম্যারিনিক অ্যাসিডের মতো অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ, যা প্রদাহ কমাতে এবং হজম উন্নত করতে সাহায্য করে। এটি চর্বি ভাঙতেও সাহায্য করে, যা ওজন কমানোর রুটিনে একটি দুর্দান্ত সংযোজন হতে পারে। এক গ্লাস পানিতে এক মুঠো তাজা পুদিনা পাতা যোগ করুন। এটি কয়েক ঘণ্টা বা পুরো রাত ডিটক্স পানীয়তে ভিজিয়ে রাখুন। অতিরিক্ত বিপাক বৃদ্ধির জন্য লেবুর রস মিশিয়ে নিন।
৫. হলুদ
হলুদে কারকিউমিন থাকে। এটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা প্রদাহ কমাতে, হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে এবং চর্বি পোড়াতে সাহায্য করে। এটি লিভারের ডিটক্সিফিকেশনেও সাহায্য করে, যা স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। হালকা গরম পানিতে ১/৪ চা চামচ হলুদ গুঁড়ো মিশিয়ে নিন। এক চিমটি গোলমরিচের গুঁড়া যোগ করুন (এটি কারকিউমিন শোষণ বাড়ায়)। সকালে বা ঘুমানোর আগে এটি পান করুন।
৬. আপেল সাইডার ভিনেগার
আপেল সাইডার ভিনেগার (ACV) অ্যাসিটিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ। যা ক্ষুধা দমন করে, রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে এবং হজমশক্তি বাড়ায়। এটি স্বাস্থ্যকর অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়া বজায় রাখতেও সাহায্য করে, যা ওজন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। এক গ্লাস পানির সাথে ১ টেবিল চামচ ACV মিশিয়ে নিন। হজমশক্তি বাড়াতে এবং ক্ষুধা দমন করতে খাবারের আগে এটি পান করুন। আরও ভালো স্বাদের জন্য মধু যোগ করুন।
৭. গ্রিন টি
গ্রিন টি ক্যাটেচিনে পরিপূর্ণ, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ফ্যাট জারণ এবং বিপাক বৃদ্ধি করে। এতে অল্প পরিমাণে ক্যাফেইন রয়েছে, যা আপনাকে শক্তি বৃদ্ধি করে এবং ক্যালোরি পোড়াতে উৎসাহিত করে। গ্রিন টি তৈরি করুন এবং ঠান্ডা হতে দিন। একটি সতেজ ডিটক্স পানীয়ের জন্য এটি ঠান্ডা পানি এবং লেবুর সঙ্গে মিশিয়ে নিন। সেরা ফলাফলের জন্য দিনে দুইবার পান করুন।