গেঁটেবাতে ভুগছেন? জেনে নিন কী করবেন
সাধারণত ৩০ থেকে ৫০ বছর বয়সের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দেয়। গেঁটেবাত সেসব স্বাস্থ্য সমস্যার মধ্যে একটি। গেঁটেবাত হলো এক ধরনের আর্থ্রাইটিস যা জয়েন্টে ইউরিক অ্যাসিড স্ফটিক জমা হওয়ার কারণে হয়ে থাকে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এটি বুড়ো আঙুলে প্রভাব ফেলে। এই সমস্যা যে কারও দেখা দিতে পারে, তবে বয়স্ক এবং পুরুষদের ক্ষেত্রে এটি বেশি দেখা যায়। যদিও গেঁটেবাত নিরাময়যোগ্য নয়, তবে এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণের কিছু উপায় রয়েছে।
গেঁটেবাত কী?
গেঁটেবাত একটি দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহজনক আর্থ্রাইটিস। একে ‘রাজাদের রোগ’ বলেও সম্ভোধন করা হয়! এর কারণ হলো, ঐতিহাসিকভাবে এই রোগ ধনী ব্যক্তিদের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল, যারা মাংস এবং অ্যালকোহল সমৃদ্ধ খাবার বেশি খেতেন। যা ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়ায় এবং গেঁটেবাত আক্রমণের কারণ হিসেবে পরিচিত। স্ট্যাটপার্লস পাবলিশিং অনুসারে, গেঁটেবাতের প্রকোপ বয়স, লিঙ্গ এবং উৎপত্তিস্থলের দেশ অনুসারে পরিবর্তিত হতে পারে।
গেঁটেবাতের কারণ
যদিও গেঁটেবাতের সঠিক কারণ অজানা, তবে কিছু কারণ রয়েছে যা মানুষকে ঝুঁকিতে ফেলতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে:
* লাল মাংস, সামুদ্রিক খাবার এবং অর্গান মিটের মতো উচ্চ পিউরিনযুক্ত খাবার।
* অ্যালকোহল সেবন।
* ডিহাইড্রেশন।
* স্ট্রেস।
* অ্যাসপিরিন এবং মূত্রবর্ধক ওষুধ গ্রহণ।
* জেনেটিক কারণ।
গেঁটেবাত নিয়ন্ত্রণের উপায়
দুর্ভাগ্যবশত গেঁটেবাত নিরাময় করা যায় না। তবে ওষুধ এবং জীবনযাপনের পরিবর্তনের মাধ্যমে এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে-
চিকিৎসা চালিয়ে যান: চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসারে অ্যালোপিউরিনল নিয়মিতভাবে নির্ধারিত পদ্ধতিতে গ্রহণ করুন, এটি তাৎক্ষণিকভাবে ব্যথা উপশম করে না কিন্তু ভবিষ্যতের আক্রমণ প্রতিরোধ করার জন্য ধীরে ধীরে ইউরিক অ্যাসিড কমিয়ে দেয়।
উচ্চ পিউরিনযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন: লাল মাংস, অর্গান মিট, সামুদ্রিক খাবার এবং গ্রেভি কমিয়ে দিন, এর সবই ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়ায়।
হাইড্রেটেড থাকুন: প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন (প্রতিদিন কমপক্ষে ২-৩ লিটার)। এই অভ্যাস জয়েন্টগুলোতে ইউরিক অ্যাসিড ঘনীভূত এবং স্ফটিকায়িত হতে বাধা দেবে।
মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করুন: দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপ গাউটের তীব্রতা বৃদ্ধি করতে পারে বা আরও খারাপ করতে পারে। ধ্যান, মৃদু ব্যায়াম বা শখের মতো চাপ কমানোর কাজ করুন।
ওষুধ খাওয়া এড়িয়ে চলুন: অ্যাসপিরিন এবং মূত্রবর্ধক (যদি না চিকিৎসাগতভাবে প্রয়োজনীয় হয়) এর মতো কিছু ওষুধ ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়াতে পারে এবং চিকিৎসার নির্দেশনা অনুসারে এড়িয়ে চলা উচিত অথবা প্রতিস্থাপন করা উচিত।
গেঁটেবাত-বান্ধব খাদ্য গ্রহণ করুন: তাজা ফল, শাক-সবজি, গোটা শস্য, ডাল এবং কম চর্বিযুক্ত দুগ্ধজাত খাবারের দিকে মনোযোগ দিন।
স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখুন: ধীরে ধীরে ওজন কমানো ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কমাতে পারে এবং জয়েন্টের চাপ কমাতে পারে।
বিশেষজ্ঞের পরামর্শ: দীর্ঘস্থায়ী বা ক্রমবর্ধমান গেঁটেবাত ব্যথা জয়েন্টের ক্ষতি বা টফি জমা হওয়ার ইঙ্গিত দিতে পারে। জয়েন্টের ইমেজিং বা ওষুধের সমন্বয় প্রয়োজন হতে পারে।