আব্দুল্লাহ আল নোমান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, সাভার (ঢাকা): ঢাকার সাভারে একটি বিদেশী কোম্পানীর কারখানার গোডাউনে দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনায় ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এসময় তাদের কাছ থেকে লুন্ঠিত বিপুল পরিমাণ নগদ টাকা ও চোরাইকৃত মালামাল উদ্ধার করা হয়। বৃহস্পতিবার (০৯ মার্চ) দুপুরে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানান ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আসাদুজ্জামান পিপিএম (বার)। এর আগে, বুধবার (০৮ মার্চ) ঢাকা জেলার বিভিন্ন থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে দুর্ধর্ষ চোর চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা।
গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন- ভোলা জেলার লালমোহন থানার কাদিরাবাদ এলাকার আবুল কালামের ছেলে মো. শাহীন হাওলাদার (২৫)। তিনি ঢাকার সাভারের আমিনবাজার মধুমতি মডেল টাউনে বসবাস করে ট্রাক চালাতেন। ঢাকা জেলার সাভার মডেল থানার মৃত মহিউদ্দিনের ছেলে মো. মারুফ হোসেন রাতুল (১৯)। তিনি বাইক মেকানিক হিসেবে কাজ করতেন। পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা থানার চরবিশ্বাস এলাকার মো. হানিফ খানের ছেলে মো. শিবলু (২৮)। তিনি ঢাকার সাভারের যাদুরচর এলাকার কাজীর বাড়ির ভাড়াটিয়া ও কফিল পাম্পের কর্মচারী। ভোলা জেলার ভোলা সদর থানার আলগী মুরাদ হাওলাদারের বাড়ির মো. রফিকের ছেলে মো. ইসমাইল (১৯)। তিনি ঢাকার সাভারের যাদুরচর এলাকার আলমের বাড়ীর ভাড়াটিয়া ও ওয়াইফাই দোকানের কর্মচারী। নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ থানার গারাগ্রাম এলাকার মৃত আব্দুস সোবহানের ছেলে মো. আনিস (৪৫)। তিনি ঢাকার সাভারের জয়নাবাড়ী এলাকার হাবিব মোল্লার বাড়ীর ভাড়াটিয়া ও ভাংগারী ব্যবসায়ী। এছাড়া অপরজন ঢাকার সাভার মডেল থানার নিমাইরটেক এলাকার মৃত জমসের আলীর ছেলে ও ভাংগারী ব্যবসায়ী মো. নুর ইসলাম (৪০)।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য প্রদান করেন ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান পিপিএম (বার)।
সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান পিপিএম (বার) জানান, গত ১১ ফেব্রুয়ারী রাত সোয়া ২টা থেকে সাড়ে ৩টার মধ্যে সাভার মডেল থানাধীন ভরারী বটতলা এলাকার জামিয়া আবু ইউসুফ এতিমখানা ও মাদ্রাসার পূর্ব পাশে অবস্থিত চায়না ফাস্ট মেটালার্জিকাল গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেডের একটি ডিপো থেকে অজ্ঞাতনামা চোর চক্রের সদস্যরা ডিপোতে থাকা ঢাকা ওয়াসার ৩ হাজার ৮৭৪ পিস পানির মিটার, ডিপোতে থাকা সিসিটিভি ক্যামেরার হার্ডডিস্ক এবং ডিভিআর চুরি করে নিয়ে যায়। যার আনুমানিক বাজারমূল্য ১ কোটি ৩৩ লক্ষ ৬৬ হাজার ৩৯৫ টাকা। পরবর্তীতে উক্ত কোম্পানীর পক্ষে সিকিউরিটি কমান্ডার মো. আহসান হাবীব (৩২) বাদি হয়ে সাভার মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন (যার নাম্বার-২৪)।
উদ্ধারকৃত নগদ টাকা ও মালামাল।
পুলিশ সুপার আরও জানান, পরবর্তীতে উক্ত মামলার রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম- উত্তর) মোহাম্মদ আব্দুল্লাহিল কাফি ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিবি) মোবাশশিরা হাবিব খান কে নির্দেশ প্রদান করলে তারা মামলাটির রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য কাজ শুরু করেন। একপর্যায়ে তাদের সরাসরি তত্ত্বাবধানে ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বিপ্লবের নেতৃত্বে ডিবি পুলিশের একটি চৌকস টিম গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ঢাকা জেলার বিভিন্ন থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ঘটনায় জড়িত ৬ জনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হন। সেইসাথে গ্রেপ্তার আসামিদের দেয়া৷ তথ্যের ভিত্তিতে লুন্ঠন হওয়া ১ হাজার ১৫৮ পিস প্লাস্টিকের তৈরি পানির মিটারের অংশ, ৩১৩ পিস পানির মিটারের ধাতব অংশ ও মালামাল বিক্রয়ের নগদ ৮ লক্ষ টাকা উদ্ধার করা হয়। উক্ত মামলায় একটি ট্রাক ব্যবহৃত হয়েছে। উক্ত ট্রাক উদ্ধার, মামলার মূল রহস্য উদ্ঘাটন এবং মামলার ঘটনায় জড়িত অপরাপর আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা ও তদন্ত অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান পুলিশ সুপার।