মুন্সীগঞ্জে মাকে হত্যার দায়ে ছেলে জাহান শরীফ রতনকে (৩২) আমৃত্যু কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সোমবার (১৪ জুলাই) বিকেল ৩টার দিকে মুন্সীগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক বেগম খালেদা ইয়াসমিন উর্মি এ রায় দেন।

ঘটনার সময় মাকে রক্ষা করতে এলে জাহান শরীফ রতন তার বোন মনি আক্তারকে দা দিয়ে কোপানোয় অপর একটি ধারায় তাকে আরও ৫ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ডের আদেশ দেন আদালত। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে আদালতের বেঞ্চ সহকারী নজরুল ইসলাম।

দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জাহান শরীফ রতন সদর উপজেলার ইদ্রাকপুর এলাকার মৃত ছাবেদ আলী সেখের ছেলে। রায় ঘোষণার সময় তাকে কারাগার থেকে পুলিশ পাহারায় আদালতে হাজির করা হয়। রায় শেষে তাকে পুনরায় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, জাহান শরীফ রতন মাদকাশক্ত ছিল। মাদকের টাকার জন্য সে প্রায় সংসারে অশান্তির সৃষ্টি করতো। পরে ২০১৭ সালের ২১ সেপ্টেম্বর রতন রাত সাড়ে ৮টার দিকে মাদক কেনার জন্য তার মা জাহানারা বেগমের কাছে টাকা চায়। তার মা টাকা না দেওয়ায় রতন ঘরে থাকা বটি দিয়ে তার মাকে মাথায় কুপিয়ে জখম করে। এ সময় মাকে বাঁচানোর জন্য রতনের বোন মনি আক্তার এগিয়ে এলে তাকেও রতন বটি দা দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। পরে আহত মা মেয়েকে উদ্ধার করে মুন্সীগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মা জাহানারা বেগমকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় রতনকে আটক করে পুলিশে দেয় স্থানীয়রা। ঘটনার পরের দিন নিহতের বড় ছেলে জাহিদ হাসান স্বপন বাদী হয়ে ভাইয়ের বিরুদ্ধে মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় মামলা দায়ের করে। পরে রতন আদালতে মাকে হত্যার কথা স্বীকার করে দোষ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেন। এ ঘটনায় দীর্ঘদিন বিচার কার্য শেষে ৬ জন সাক্ষির স্বাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আদালত রতনকে অমৃত কারাদণ্ড প্রদান করে।

এ ব্যাপারে আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মুহা. নাসিম আখতার (সুমন) বলেন, আদালত সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে মাকে খুন করায় ছেলেকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছে। এ রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্টি প্রকাশ করছে।