1. numanashulianews@gmail.com : kazi sarmin islam : kazi sarmin islam
  2. islamkazisarmin@gmail.com : newstv : Md newstv
  3. admin@newstvbangla.com : newstvbangla : Md Didar
নবীকন্যা রুকাইয়া (রা.) এর দাম্পত্য জীবন যেমন ছিল - NEWSTVBANGLA
রবিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৫, ০৭:৩৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম
ঢাকায় রাতে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে জুলাই বিপ্লব নতুনভাবে দেশ গঠনের সুযোগ করে দিয়েছে খালেদা জিয়াকে বাদ দিয়ে দেশের ইতিহাস লেখা যাবে না : চসিক মেয়র ‘হঠাৎ বিকট শব্দ, দৌড়ে গিয়ে দেখি বাড়ির ভেতরে আগুন আর কান্নাকাটি’ পরিবেশ দূষণমুক্ত চাইলে দূষণকারী শিল্পকারখানা বন্ধ করার আহ্বান না ফেরার দেশে নয়া দিগন্তের সাবেক সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন মাহিন সরকারের বিরুদ্ধে ৭.৫ কোটি টাকার ভুয়া গল্প, আসলেই কি ঘটেছে বেলকুচিতে রাতের মধ্যে যেসব এলাকায় ঝড় হতে পারে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতা হত্যা মামায় জাবি ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ললিপপ জনি কেরানীগঞ্জে এসি বিস্ফোরণ, একই পরিবারের ৪ জন হাসপাতালে

নবীকন্যা রুকাইয়া (রা.) এর দাম্পত্য জীবন যেমন ছিল

প্রতিনিধি

মহানবী সা.-এর মেঝো কন্যা ছিলেন হজত রুকাইয়া রা.। মুহাম্মদ সা. নবুয়ত লাভের সাত বছর পূর্বে মক্কায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তিনি তার মা ও বড় বোন হজরত যায়নাবের সঙ্গে ইসলাম গ্রহণ করেন।
রাসূল সা. নবুয়ত লাভের আগে আবু লাহবের ছেলে উতবার সাথে হজরত রুকাইয়া রা.-এর বিয়ে হয়। তখন পর্যন্ত তাদের আকদ হয়েছিল শুধু, স্বামী-স্ত্রী হিসেবে সংসার শুরু হয়নি।

রাসূল সা. নবুয়ত লাভের পর কুরায়শদের সঙ্গে তার চরম বিরোধ শুরু হয়। কুরাইশরা আল্লাহর রাসূল সা.-কে কষ্ট দেওয়ার জন্য সবধরনের পথ ও পন্থা বেছে নেয়। তারা চাপ প্রয়োগ এবং লোভ দেখিয়ে মুহাম্মদ সা. এর মেয়ের স্বামীদের কাছে গিয়ে তাদের তালাক দেওয়ার এবং পিতৃগৃহে পাঠিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দেয়। তাদের ধারণা ছিল, এতে মুহাম্মদ সা.-এর মনোকষ্ট ও দুশ্চিন্তা বৃদ্ধি পাবে এবং তিনি মেয়েদের নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়বেন।

প্রথমেই তারা রাসূল সা.-এর বড় মেয়ের স্বামী আবুল আস ইবনে রাবীর কাছে গিয়ে তার স্ত্রী যায়নাব বিনতে মুহাম্মদকে তালাক দিয়ে পিতৃগৃহে পাঠিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব জানালো। কিন্তু তিনি তাদের মুখের ওপর সাফ না করে দিলেন।

তার কাছে অস্বীকৃতি শুনে তারা গেল রুকাইয়ার স্বামী উতবার কাছে। তাকে তারা এই প্রলোভন দিল যে, সে কুরাইশ গোত্রের যে সুন্দরীকে চাইবে তাকে তার সঙ্গে বিয়ে দেবে। বিবেকহীন উতবা তাদের প্রস্তাব মেনে নিল। সে রুকাইয়া রা.-কে তালাক দিল। তার পরিবর্তে আবান ইবনে সাঈদ ইবনুল আসের মেয়েকে বিয়ের ইচ্ছা প্রকাশ করলো। কুরাইশ নেতারা তার দাবি মেনে নিল।

এরপর বিখ্যাত সাহাবি উসমান রা.-এর সঙ্গে বিয়ে হয় রুকাইয়া রা.-এর। তাদের বিয়ে সম্পর্কে উসমান রা. বলেন—

আমি পবিত্র কাবার আঙ্গিনায় কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে বসে ছিলাম। এ সময় একজন এসে জানালো, উতবা ইবনে আবি লাহাবের সঙ্গে রাসূল সা.-এর মেয়ে রুকাইয়ার বিয়ে হয়েছে। রুকাইয়া মক্কার অন্যতম সুন্দরী তরুণী ছিলেন। তার প্রতি আমার খানিক মানসিক দুর্বলতা ছিল। তার বিয়ের সংবাদে আমি কিছুটা অস্থির হয়ে পড়লাম। সেখান থেকে উঠে সোজা বাড়িতে চলে গেলাম।

আমার খালা ছিলেন একজনা ‘কাহিনা’ (ভবিষ্যদ্বক্তা)। তিনি রুকাইয়ার সঙ্গে আমার বিয়ের ভবিষ্যদ্বাণী করে বললেন—
উসমান! তোমার জন্য সুসংবাদ। তোমার প্রতি সালাম। আল্লাহর ইচ্ছায় তুমি শুভ ও কল্যাণের সঙ্গে মিলিত হবে এবং অমঙ্গল থেকে দূরে থাকবে। আল্লাহর কসম, তুমি একজন ফুলের কুঁড়ির মতো সতী-সাধ্বী সুন্দরী মেয়েকে বিয়ে করবে। তুমি একজন কুমার, একজন কুমারী পাত্রীই লাভ করবে।

খালার ভবিষ্যদ্বাণীর পর উসমান রা. ইসলাম গ্রহণ করেন এবং মক্কায় হজরত উসমানের সাথে হজরত রুকাইয়া রা.-এর আকদ সম্পন্ন হয়।
নবুয়তের পঞ্চম বছরে রুকাইয়া রা. স্বামী উসমান রা.-এর সঙ্গে হাবশায় হিজরত করেন। তাদের হিজরত সম্পর্কে মহানবী সা. বলেছেন, নিশ্চয় তারা দুজন ইবরাহিম ও লূত আ.-এর পর প্রথম হিজরতকারী।

কিছুদিন হাবশায় অবস্থানের পর তারা আবার মক্কায় ফিরে আসেন। মক্কায় কাফেরদের অত্যাচার বেড়ে গেলে আবারও হাবশায় হিজরত করেন। দ্বিতীয়বার বেশ কিছুদিন হাবশায় অবস্থানের পর আবারও মক্কায় ফিরে আসেন। সেখানে কিছুদিন অবস্থানের পর পরিবার-পরিজনসহ এবার চিরদিনের জন্য মদিনায় হিজরত করেন।

তাদের দুজনের ভালোবাসা ছিল প্রবাদতুল্য। তৎকালীন লোকেরা তাদের দাম্পত্য জীবন ও ভালোবাসাকে উপমা হিসেবে ব্যবহার করতেন। লোকেরা বলতেন—
মানুষের দেখা দম্পতিদের মধ্যে রুকাইয়া ও তার স্বামী উসমান হলো সর্বোত্তম।

রুকাইয়া ছিলেন স্বামী-সোহাগিনী, পতি-পরায়ণা। স্বল্পকালের দাম্পত্য জীবনে তারা কখনো বিচ্ছিন্ন হননি। সব বিপদদ-আপদ, প্রতিকূলতা একসঙ্গে মোকাবিলা করেছেন। তিনি নিজে স্বামীর সেবা করে সব যন্ত্রণা লাঘবের চেষ্টা করতেন। স্বামী উসমানও স্ত্রীর জীবনকে সহজ করার চেষ্টা করতেন সবসময়।

একদিন রাসূল সা.- উসমান রা.-এর ঘরে গিয়ে দেখেন রুকাইয়া স্বামীর মাথা ধুইয়ে দিচ্ছেন। তখন রাসূল সা. বললেন—
আমার মেয়ে! তুমি উসমানের সঙ্গে ভালো আচরণ করবে। কারণ আমার সাহাবীদের মধ্যে স্বভাব-চরিত্রে আমার সাথে তার বেশি মিল।
আবু হুরায়ারা রা. বলেন, একদিন আমি নবীজির মেয়ে ও উসমানের স্ত্রীর ঘরে গিয়ে দেখি তার হাতে চিরনী। তিনি বললেন, রাসূল সা. এই মাত্র আমার ঘর থেকে বেরিয়ে গেলেন। তিনি আমাকে দেখে গেলেন, আমি উসমানের মাথায় চিরুনী করছি।

মদিনায় হিজরতের পর দ্বিতীয় হিজরিতে অসুস্থ হয়ে শয্যাশায়ী হন রুকাইয়া রা.। এ সময় রাসূল সা. বদর যুদ্ধের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত ছিলেন। তিনি উসমান রা.-কে তার রুগ্ন স্ত্রীর সেবা-শুশ্রুষার জন্য মদিনায় রেখে নিজে বদর যুদ্ধে চলে যান।

স্ত্রীর পাশে থাকার কারণে উসমান রা. বদরের মতো গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করতে পারেননি। তবে রাসূল সা. তাঁকে বদরের অংশীদার গণ্য করে গণীমতের অংশ দান করেন। উসমান রা. জানতে চান, জিহাদের সওয়াব হবে কি? রাসূল সা. বলেন, তুমি সওয়াব লাভ করবে।

হিজরতের এক বছর সাত মাস পরে পবিত্র রমজান মাসে ইন্তেকাল করেন রুকাইয়া রা.।
রুকাইয়ার মৃত্যুর পর রাসূল সা.-এর তৃতীয় মেয়ে উম্মে কুলসুম রা.-কে উসমান রা.-এর সঙ্গে বিয়ে দেন রাসূল সা.।

প্রিয়তমা স্ত্রী রুকাইয়ার মৃত্যুতে ভীষণ কষ্ট পান উসমান রা.। স্ত্রীর শোকে উসমান রা. বিমর্ষ হয়ে পড়েন। তাকে বিমর্ষ দেখে একদিন মহানবী সা. বললেন, উসমান তুমি এতো বিমর্ষ কেন?

তিনি বললেন, এমন বিমর্ষ না হয়ে কীভাবে স্বাভাবিক থাকবো আমি। আমার ওপর যে বিপদ এসেছে তা সম্ভবত আর কারো ওপর আসেনি। আমার স্ত্রী রাসূল সা.-এর কন্যা ইন্তেকাল করেছেন, এতে আমার কোমর ভেঙে গেছে। রাসূল সা.-এর সঙ্গে আমার যে আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিল তা ছিন্ন হয়ে গেছে। এখন আমার উপায় কী?

তাঁর কথা শেষ না হতেই রাসূল সা. বলে উঠলেন, জিবরিল আ. আল্লাহ কাছ থেকে আমাকে হুকুম দিয়েছেন, যেন আমি তোমাকে রুকাইয়ার সমপরিমাণ মোহরের ভিত্তিতে উম্মু কুলছুমকে তোমার সাথে বিয়ে দেই। তৃতীয় হিজরির রবিউল আওয়াল মাসে হজরত উসমান রা.-এর সঙ্গে উম্মে কুলছুম রা.-এর আকদ সম্পন্ন হয়। আকদের দুই মাস পরে জামাদিউস সানী মাসে তিনি স্বামীর সংসারে যান।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2015
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: রায়তাহোস্ট