খুলনায় ইজিবাইক চালক মো. হাফিজুল ইসলামকে হত্যা করে ইজিবাইক ছিনতাইয়ের ঘটনায় স্বামী ও স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। জেলা গোয়েন্দা শাখা ও বটিয়াঘাটা থানা পুলিশের সমন্বয়ে একটি চৌকশ দল তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় অভিযান চালিয়ে তাদের ২ জনকে গ্রেপ্তার করে।
মঙ্গলবার (১১ মার্চ) বিকেলে খুলনা জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, মো. হাসান নকিব (৪২) ও তার স্ত্রী মোসা. রেশমা খাতুন (৩২)। গত ৯ মার্চ বাগেরহাট সদর থানাধীন সিএন্ডবি বাজার এলাকা থেকে মো. হাসান নকিবকে এবং খুলনা মহানগরীর খালিশপুর থানা এলাকা থেকে মোসা. রেশমা খাতুনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর তাদের স্বীকারোক্তি মোতাবেক ইজিবাইক, ৫টি ব্যাটারি ও একটি চাপাতি উদ্ধার করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ৬ মার্চ সকালে ভিকটিম মো. হাফিজুল ইসলাম প্রতিদিনের ন্যায় ভাড়ায় চালিত ইজিবাইক নিয়ে বের হয়। কিন্তু রাতে আর ইজিবাইক নিয়ে ফিরে আসেনি। এছাড়া তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। পরদিন ৭ মার্চ সকালে বটিয়াঘাটা টু গাঁওঘরা সড়কের পাশে নিখোঁজ মো. হাফিজুল ইসলামের মৃতদেহ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে গ্রেপ্তারকৃত ২ জনকে পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, হাসান নকিব ও রেশমা খাতুন সম্পর্কে স্বামী-স্ত্রী। তারা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ইজিবাইক চালক হাফিজুলকে হত্যা করে তার ইজিবাইকটি নেওয়ার পরিকল্পনা করে আসছিল। এর প্রেক্ষিতে ৬ মার্চ রাত সাড়ে ১০টার দিকে খুলনা মহানগরীর খালিশপুর লাল হাসপাতাল মোড় থেকে মো. হাসান নকিব ভিকটিমের ইজিবাইকে উঠে এবং ইজিবাইকটি বটিয়াঘাটা থানা এলাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। পথিমধ্যে খালিশপুর নয়াবাটি মোড় থেকে হাসান নকিবের স্ত্রী মোসা. রেশমা খাতুন ইজিবাইকে উঠে। ইজিবাইকটি বটিয়াঘাটা টু গাঁওঘরা এলাকায় পৌঁছালে গ্রেপ্তারকৃতরা জোরপূর্বক ভিকটিমের গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে এবং চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে মৃতদেহটি রাস্তার পাশে ফেলে রেখে ইজিবাইকটি নিয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় বটিয়াঘাটা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা আদালতে ফৌজদারী কার্যবিধি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, একটি ক্লুলেস লোমহর্ষক হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হওয়ার পর খুলনার পুলিশ সুপারের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. খায়রুল আনামের নেতৃত্বে একটি চৌকশ দল অভিযান পরিচালনা করে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আসামিদের গ্রেপ্তার ও ইজিবাইক উদ্ধারসহ চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে সক্ষম হওয়ায় নিহতের পরিবার ও সাধারণ মানুষ সন্তোষ প্রকাশ করেন।