1. numanashulianews@gmail.com : kazi sarmin islam : kazi sarmin islam
  2. islamkazisarmin@gmail.com : newstv : Md newstv
  3. admin@newstvbangla.com : newstvbangla : Md Didar
ঘোড়ার মাংস খেলে কী হয়? - NEWSTVBANGLA
রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫, ১১:০২ অপরাহ্ন

ঘোড়ার মাংস খেলে কী হয়?

প্রতিনিধি

বহুকাল আগে থেকে ঘোড়া উপকারী প্রাণী হিসেবে গৃহে পালিত হয়ে আছে। মূলত বাহন হিসেবে ব্যবহার শুরু হলেও পরে নানাবিধ কাজে ঘোড়াকে ব্যবহার করা হয়। মাংসের গুরুত্বপূর্ণ উৎসও ঘোড়া। এখনও অনেক দেশেই ঘোড়া মাংস অত্যন্ত জনপ্রিয়। জাপান এবং কোরিয়ার মতো অঞ্চলে ঘোড়ার মাংসকে সুস্বাদু খাবার হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ঘোড়ার মাংস বেশ জনপ্রিয়

ঘোড়ার মাংসের পুষ্টিগুণ

দক্ষিণ কোরিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দেশটির জনগণের সুস্বাস্থ্য এবং পুষ্টি নিশ্চিতে দৈনিক খাদ্যের বিষয়ে যে সুপারিশ করে থাকে তাকে বলা হয় ডায়েটারি রেফারেন্স ইনটেকস ফর কোরিয়ানস (KDRIs)। ২০০৭ সালে এই কেডিআরআইএস গরু এবং শুকরের মাংসের সঙ্গে ঘোড়ার মাংসের পুষ্টিগুণের তুলনা দেখিয়েছে।

এতে দেখা যায়, গরুর মাংস বা শুকরের মাংসের তুলনায় ঘোড়ার মাংসে প্রোটিনের মাত্রা প্রায় একই (২১.১ বনাম ২১.০ বা ২১.১%), তবে চর্বির মাত্রা (৬.০ বনাম ১৪.১ বা ১৬.১%) বেশ কম।

কেডিআরআইএস অনুসারে, ১০০ গ্রাম ঘোড়ার মাংস (ভেজা অবস্থায়) ৩০-৪৯ বছর বয়সি এবং ৬৩.৬ কেজি ওজনের পুরুষদের জন্য প্রস্তাবিত প্রোটিনের চাহিদার প্রায় ৪০% পূরণ করতে সক্ষম।
এতে আরও দেখা যায়, গরু এবং ঘোড়ার মাংসে মিনারেলের পরিমাণে তেমন পার্থক্য নেই। এছাড়া ১০০ গ্রাম কাঁচা ঘোড়ার মাংসে যথাক্রমে ২৪, ২.৫, ৬.৭, ২১, ২৬ এবং ৪০% পর্যন্ত ফসফরাস, সোডিয়াম, পটাসিয়াম, আয়রন, জিঙ্ক এবং তামা পাওয়া যেতে পারে। তবে এতে ক্যালসিয়াম এবং ম্যাঙ্গানিজের মাত্রা খুবই কম।

ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ঘোড়ার মাংস জনপ্রিয়। এরমধ্যে ইতালি উল্লেখযোগ্য। ইতালিতে ঘোড়ার মাংসের বাহারি রেসিপি আছে, যেগুলো বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়।

ঘোড়ার মাংস খেতে কেমন?

ঘোড়ার মাংস দেখতে গরু, মহিষ এবং উটের মাংসের মতোই। তবে এতে গরুর মাংসের তুলনায় চর্বির পরিমাণ কম থাকে। ফলে রান্নার পর চর্বির যে স্বাদটা গরুর মাংস এবং ঝোলে ছড়িয়ে পড়ে সেটা ঘোড়ার মাংসের ক্ষেত্রে অতটা পাওয়া যায় না।
রান্নার পর ঘোড়ার মাংসের স্বাদ অনেকটাই মহিষের মাংসের মতো লাগে।

বাংলাদেশে ঘোড়ার মাংস

বাংলাদেশে ঘোড়ার মাংস খাওয়া তেমন প্রচলিত না। মাংসের জন্য বাণিজ্যিকভাবে ঘোড়ার উৎপাদন হয় না বললেই চলে। সাধারণত মালামাল পরিবহনের জন্য যেসব ঘোড়া ব্যবহার করা হয় সেগুলোই কিছু কিছু মাংসের জন্য বিক্রি করা হয়।
সম্প্রতি গাজীপুরের হায়দারবাদে বাণিজ্যিকভাবে ঘোড়ার মাংস বিক্রির খবর তাই দেশজুড়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। ঘোড়ার দাম যেমন কম, দেশে এর মাংসের চাহিদাও তেমন কম। ফলে এক কেজি ঘোড়ার মাংস মাত্র ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

জানা গেছে, চলতি বছরের শুরুতে বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি শুরু হয় ঘোড়ার মাংস। ব্যবসায়ীরাও বলছেন, ঘোড়ার মাংসে আগ্রহ বাড়ছে ক্রেতাদের।
ঘোড়ার মাংস বিক্রেতা শফিকুল ইসলাম সংবাদমাধ্যমকে জানান, গরুর মাংসে প্রচুর চর্বি থাকলেও ঘোড়ার মাংসে তেমন কোনো চর্বি নেই। খেতে সুস্বাদ, দামও কম।

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, শুরুতে সপ্তাহের একদিন দুয়েকটি ঘোড়া জবাই হতো। তবে বর্তমানে প্রতি শুক্রবার ১০-১২টি ঘোড়া জবাই করা হচ্ছে। দূর-দূরান্ত থেকে ক্রেতারা আসছেন এসব মাংস সংগ্রহে।
অনেকেই কৌতূহল থেকে ঘোড়ার মাংস কিনছেন। এই মাংস খেতে কেমন সেটা চেখে দেখার আগ্রহ থেকে কেউ কেউ কিনছেন।

ঘোড়ার গোশত খাওয়া হালাল নাকি হারাম

ঘোড়ার মাংস খাওয়া হালাল কি না সেটা নিয়ে অনেকের মনে প্রশ্ন আছে।
এর উত্তরে ফুকাহায়ে কেরাম বলেন, ঘোড়ার গোশত খাওয়া জায়েজ। ঘোড়ার গোশত হালাল। কিন্তু গণহারে ঘোড়ার গোশত খেলে জিহাদের সময় ঘোড়ার মাধ্যমে খেদমত নিতে সমস্যা হতে পারে। তাই ইমাম আবু হানিফা (রহ.) বলেছেন, ঘোড়ার গোশত খাওয়া মাকরুহ। (ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া ৫-২৯০)

বর্তমানে যুদ্ধক্ষেত্রে যদিও ব্যাপকভাবে ঘোড়ার ব্যবহার হয় না, কিন্তু তা একেবারে বন্ধও হয়ে যায়নি। এখনো অনেক দেশের সিকিউরিটি ফোর্সেস তাদের কেন্দ্রগুলোতে ঘোড়া রক্ষণাবেক্ষণ করে। নিয়মিত প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়।
তাছাড়া হাদিস শরিফে এসেছে, হজরত খালিদ ইবনে ওলিদ রা. বলেন, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘোড়ার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন। (সুনানে নাসাঈ ৮/২০৬; সুনানে আবু দাউদ ২/৫৩১) নিষিদ্ধ হওয়ার মূল সূত্র হচ্ছে এ হাদিস।

আর জিহাদের কাজে ব্যবহার হওয়ার বিষয়টি একটি প্রাসঙ্গিক দলিলমাত্র। অতএব জিহাদের কাজে ঘোড়ার ব্যবহার একেবারে বন্ধ হয়ে গেলেও তা খাওয়া উপরোক্ত হাদিসের কারণে মাকরুহ তানযীহি থাকবে। (আহকামুল কুরআন, জাসসাস ৩/১৮৩, ১৮৪; বুখারি ২/৬০৬; মুসলিম ২/১৫০)

তবে সাধারণ সময়ে ঘোড়ার গোশত খেতে কোনো সমস্যা নেই। হজরত জাবের রা. বলেন, খায়বারের যুদ্ধে রসুল সা. গাধার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন, ঘোড়ার গোশত খাওয়ার অনুমতি দিয়েছেন (বুখারি ৫৫২০; মিশকাত ৪১০৭)
অন্য হাদিসে রয়েছে হজরত আসমা রা. বলেন, আমরা রসুল সা-এর যুগে ঘোড়া জবাই করেছি ও গোশত খেয়েছি (বুখারি ৫৫১৯)
ব্যাপকহারে মানুষ ঘোড়ার জবাই করে গোশত খেলে যুদ্ধের সময় ঘোড়া পাওয়া যাবে না। তাই ঘোড়ার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন মহানবী সা.। যদি এমন কোনো পরিস্থিতি হওয়ার সম্ভবনা না থাকে তাহলে ঘোড়ার গোশত খাওয়াতে কোনো সমস্যা নেই।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2015
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: রায়তাহোস্ট