আব্দুল্লাহ আল নোমান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, সাভার (ঢাকা): নাটোরের বড়াইগ্রামে চাঞ্চল্যকর ‘ক্লু-লেস’ আমিনুল হত্যাকাণ্ডের মূলহোতাসহ দুইজন এবং মহাসড়কে ছিনতাইয়ের প্রস্তুতির সময় আরমান বাহিনীর নেতাসহ আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-৪)। শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারী) দুপুরে র্যাব-৪ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মোহাম্মদ আব্দুর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা অপরাধে সম্পৃক্ততার কথা র্যাবের কাছে স্বীকার করেছে। এর আগে, বৃহস্পতিবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-৪ এর একটি আভিযানিক দল পৃথক দুটি অভিযান পরিচালনা করে ঢাকার আশুলিয়া থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- আমিনুল হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা মো. বাদশা মিয়া ওরফে মনির (২৮) ও মো. এনামুল হোসেন (২২) এবং আরমান বাহিনীর নেতা মো. আরমান হোসেন (২২), শাহ জামাল (২৭) ও মো. মাসুম (২১)।
গ্রেপ্তার দুই হত্যাকারী।
র্যাব-৪ এর অধিনায়ক জানান, গত ৯ জানুয়ারি সন্ধ্যায় নাটোর জেলার বড়াইগ্রাম মাঝগাঁও গ্রামের কাছে একটি বিলের পাশে গমক্ষেতে স্থানীয় জনগণ একটি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির মৃতদেহ দেখতে পায়। পরে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানায় অবহিত করলে স্থানীয় পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে প্রেরণ করে। স্থানীয় থানা পুলিশ মৃতদেহটি শনাক্ত করলে বড়াইগ্রাম থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়। পরবর্তী সময়ে র্যাব এ মামলার ছায়াতদন্ত শুরু করে আসামিদের গ্রেপ্তার করে। আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেপ্তার বাদশা মিয়া ওরফে মনির পেশায় মাছ ব্যবসায়ী এবং এনামুল হোসেন আশুলিয়ার একটি গার্মেন্টসে চাকরি করতো। তবে এই পরিচয়ের আড়ালে তারা দেশের বিভিন্ন স্থানে মহাসড়কে ডাকাতি, ছিনতাই ও চুরির মতো ঘটনায় লিপ্ত ছিল। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক চুরি-ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের মামলা রয়েছে।
জিজ্ঞাসাবাদে তারা আরও জানায়, তারা সিরাজগঞ্জ এলাকা থেকে নিহত আমিনুলকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করে। তবে তিনি মুক্তিপণ দিতে অপারগতা জানালে আসামিরা উপর্যুপরি আঘাত করে তার মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরে লাশ নাটোরের বড়াইগ্রাম এলাকায় নিয়ে একটি বিলে ফেলে আসে।
গ্রেপ্তার তিন ছিনতাইকারী।
এছাড়াও র্যাব-৪ এর অপর একটি অভিযানে মহাসড়কে ছিনতাইয়ের প্রস্তুতির সময় আরমান বাহিনীর নেতাসহ আরও তিন জনকে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা র্যাবকে জানায়, আরমানের নেতৃত্বে রাতের আঁধারে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক এবং ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের বিভিন্ন এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে পথযাত্রীদের জিম্মি করে ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের মতো ঘটনা ঘটিয়ে আসছিল। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় লোকজন একাধিকবার মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে। এরই ধারাবাহিকতায় স্থানীয় মহাসড়কে ছিনতাইয়ের প্রস্তুতির সময় অভিযান পরিচালনা করে আরমান বাহিনীর নেতা আরমানসহ তিন ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার আসামিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে বলে জানায় র্যাব।