সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে নারী ও শিশুর প্রতি যৌন সহিংসতা, ধর্ষণ, দলবদ্ধ ধর্ষণসহ নারী বিদ্বেষী বক্তব্য ও অপতৎপরতার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে নারী ও কন্যা নির্যাতন এবং সামাজিক অনাচার প্রতিরোধ জাতীয় কমিটি।
কমিটি বলছে, সংঘবদ্ধ নারী বিরোধী তৎপরতা, নারীকে হেনস্তা, নারী বিদ্বেষ এবং মব সন্ত্রাসের মাধ্যমে নারীর প্রতি সহিংসতা নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে। অভিযুক্তদের মুক্ত করার ব্যাপারে নানা ধরনের অপতৎপরতা দেখা যাচ্ছে। আইনের ফাঁক-ফোকর দিয়ে অপরাধীরা যাতে পার পেয়ে না যায় তা নিশ্চিত করতে হবে।
নারী ও কন্যা নির্যাতন এবং সামাজিক অনাচার প্রতিরোধ জাতীয় কমিটির পক্ষে বুধবার (১২ মার্চ) কমিটির চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার এম. আমীর-উল ইসলাম ও আহ্বায়ক ডা. ফওজিয়া মোসলেম স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আমরা তীব্র ক্ষোভ, গভীর উদ্বেগ ও আতঙ্কের সাথে লক্ষ্য করছি যে, সারাদেশে বিভিন্ন স্থানে নারী ও কন্যার প্রতি যৌন সহিংসতা, ধর্ষণ, দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা সাম্প্রতিক সময়ে আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। একই সাথে নানা অজুহাতে নারী বিদ্বেষ ও অপতৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। পথে ঘাটে যত্রতত্র নারী শারীরিক, মানসিক ও যৌন হেনস্তার শিকার হচ্ছে যা দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। এটা কোনো সুস্থ, স্বাভাবিক সমাজের চিত্র নয়।
সংঘবদ্ধ নারীবিরোধী তৎপরতা, নারীকে হেনস্তা, নারী বিদ্বেষ এবং মব সন্ত্রাসের মাধ্যমে নারীর প্রতি সহিংসতা নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে। এই সংকটময় পরিস্থিতিতে সব বয়সের নারী সবক্ষেত্রে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে এবং নারীর স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। দায়িত্বশীল মহল থেকে সহিংসতার শিকার নারী ও কন্যার নাম ও ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশ করা হচ্ছে।
নারী ও কন্যা নির্যাতন এবং সামাজিক অনাচার প্রতিরোধ জাতীয় কমিটি দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নতির মাধ্যমে নারীর নিরাপত্তা ও নারীর মানবাধিকার নিশ্চিত করার জন্য যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানাচ্ছে। নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণের মাধ্যমে অভিযুক্তকে দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে। অভিযুক্তদের মুক্ত করার ব্যাপারে নানান ধরনের অপতৎপরতা দেখা যাচ্ছে। আইনের ফাঁক-ফোকর দিয়ে অপরাধীরা যাতে পার পেয়ে না যায় তা নিশ্চিত করতে হবে।
নারী ও কন্যাশিশুর প্রতি সহিংসতার প্রতিটি ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ, নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণসহ যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানাচ্ছে। একই সঙ্গে নারীর প্রতি সব প্রকার সহিংসতা ও অপতৎপরতা প্রতিরোধে সচেতন নাগরিক সমাজের সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
এ সময় গণস্বাক্ষর কর্মসূচি পালন করা হয়। এখানে অ্যাড. সুলতানা কামাল, অধ্যাপক ডা. রশিদ-ই-মাহবুব, অ্যাড. এস.এম.এ. সবুর, সোহরাব হাসান, অধ্যাপক ডা.লতিফা সামসুদ্দিন, মফিদুল হক, মাহবুব জামান, শামসুল হুদা, অধ্যাপক এম. এম. আকাশ, ডা. মাখদুমা নার্গিস, ডা: নাজমুন নাহার, রেখা চৌধুরী, ডা. রওশন আরা বেগমসহ ১০৯ জন স্বাক্ষর করেন।