অগ্নিকাণ্ডের কারণে গত বছর বেইলি রোডের ইফতার বাজার জমে ওঠেনি। কিন্তু এ বছর অবস্থা ভিন্ন। এবার জমজমাট বেইলি রোডের ইফতার বাজার। একদিকে ক্রেতাদের ভিড় অন্যদিকে হাসিমুখে ক্রেতাদের সামলাচ্ছে বিক্রেতারা।
শুক্রবার (১৪ মার্চ) রাজধানীর বেইলি রোডের ইফতার বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে৷
সরেজমিনে দেখা যায়, বেইলি রোডের ইফতার, আভিজাত্য ও মুখরোচকতার খাবারের জন্য একটি পরিচিত নাম। এখানে বেশ কয়েকটি নাজমজমাট বেইলি রোডের ইফতার বাজার নামিদামি রেস্টুরেন্ট রয়েছে। পুরান ঢাকার চকবাজারের মতো বেইলি রোডও ইফতারের জন্য সুনাম কুড়াচ্ছে। বেইলি রোডের নবাবী ভোজ, বেইলি পিঠা ঘর, ক্যাপিটাল, বেকারি সুইস ও ফখরুদ্দিন বাবুর্চি ইফতারের পসরা সাজিয়েছে।
জানা গেছে, নবাবী শাহী হালিম ৫০০ থেকে ২ হাজার টাকা, ঘি ও জাফরানে ভাজা নবাবী স্পেশাল শাহী জিলাপি ৪৫০ টাকা কেজি, ঘি ও জাফরানে ভাজা নবাবী স্পেশাল বোম্বে জিলাপি ৩৫০ টাকা কেজি, ঘি ও জাফরানে ভাজা নবাবী স্পেশাল রেশমি জিলাপি ৬০০ টাকা কেজি, নবাবী জর্দা ২৫০ টাকা কেজি, নবাবী ক্ষিরসা ফালুদা ৩৫০ টাকা কেজি, নবাবী জাফরানি পেস্তা বাদাম শরবত ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি, নবাবী বোরহানি ১২০ থেকে ২৩০ টাকা বোতল, নবাবী লাবাং ১২০ টাকা লিটার, সুইট লাচ্ছি ২৫০ টাকা লিটার, চিকেন ঝাল ফ্রাই ১৪০০ টাকা কেজি, বিফ ভুনা ১ হাজার ৬০০ টাকা কেজি, মাটন ভুনা ১হাজার ৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া শাহী ছোলা ৩৫০ টাকা কেজি, পেঁয়াজু ১৫ টাকা পিস, বেগুনি ১৫ টাকা পিস, চিকেন সমুচা ৩০ টাকা পিস, ফুলকপির চপ ৩০ টাকা পিস, অনথন ৩০ টাকা পিস, মধুবান ৫০ টাকা পিস, মুরালি ৩০০ টাকা কেজি, ডিম চপ ৩০ টাকা পিস, স্প্রিং রোল ৩০ টাকা পিস, স্পেশাল বাটার নান ৭০ টাকা পিস, রুমালি রুটি ৪০ টাকা পিস, চিকেন রেশমি কাবাব ২৮০ টাকা পিস, শিক কাবাব ২২০ টাকা পিস, চিকেক সাসলিক ১৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
বেইলি রোডের নবাবী ভোজ থেকে মমতাজ উদ্দিন নামে এক ক্রেতা ইফতার কিনলেন। তিনি বলেন, প্রথম রমজান থেকে আমরা ইফতার নিয়ে থাকি। বেইলিরোডের ইফতার খুব সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যকর। তারা এগুলোকে সবসময় ঢাকনার ব্যবহার করে।পলিথিনে আবদ্ধ রাখে। অন্যান্য বাজারের তুলনার দাম সহনীয়।
আসাদুজ্জামান নামে আরেক ক্রেতা বলেন, নবাবী ভোজে বিভিন্ন আইটেমের হালিম রয়েছে। অন্যান্য জায়গা থেকে এখানকার হালিম খুব ভালো। দামেরও প্রকারভেদ রয়েছে। কেউ চাইলে ৫০০ টাকা নিতে পারে, কেউ চাইলে হাজার টাকার নিতে পারে।
এদিকে বেইলি রোডের ইফতার বাজারের কথা বললেই চলে আসে ক্যাপিটাল ইফতারির কথা। ক্যাপিটালে এ বছর বিফ চাপ, কালো ভুনা, ব্রেন মাসালাসহ মজাদার সব ইফতারের পসরা বসেছে। মাটন চাপ, বিফ চাপ, বিফ কালা ভুনা, বিফ কিমা, বিফ কলিজা, চিকেন ঝাল ফ্রাই এসব আইটেমের চাহিদা বেশি। তবে চাহিদার শীর্ষে আছে হালিম।
এখানকার খ্যাতিমান বেকারি সুইস। এই প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করছে চিকেন কোপ্তা, চিকেন হানি গ্লোসিং, চিলি চিকেন, চিকেন ড্রামস্টিক, রেশমি জিলাপি, সুইস খাসির তেহারি, সুইস গরুর হালিমসহ বিভিন্ন পদের খাবার।
বেইলি রোডের নবাবি ভোজ ও বেইলি পিঠা ঘরে ক্রেতাদের ভিড় দেখা গেছে। অপরদিকে বেইলি পিঠা ঘরের গুড়ের জিলাপিসহ বেশকিছু আইটেম বিক্রি হতে দেখা গেছে বেশ।
বেইলি রোডেই ফখরুদ্দিন বাবুর্চি ইফতারের পসরা সাজিয়েছেন। সেখানেও আছে মুখরোচক সব খাবার। ফখরুদ্দিন বাবুর্চির থেকে ৫ পেকেট বিরানির নিচে আসলেন আমজাদ হোসেন। তিনি বলেন, আমরা প্রতিনিয়তই বিভিন্ন ভাজাপোড়া দিয়ে ইফতার করে থাকি। মাঝেমধ্যে বিরিয়ানি হলে ভালো হয়। তাই আজকে পরিবারের জন্য বিরিয়ানি নিতে আসলাম। আজ বিরিয়ানি আর বোরহানিতে ইফতার করা হবে।