আনুষ্ঠানিক ফল ঘোষণার অপেক্ষায় থাকা বাংলাদেশ বার কাউন্সিল নির্বাচন বাতিল করে পুনঃনির্বাচনের দাবি জানিয়েছে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম।সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনের শহীদ শফিউর রহমান মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে আজ বৃহস্পতিবার এ দাবি জানানো হয়। ফোরামের মহাসচিব এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন।
তিনি বলেন, বার কাউন্সিল নির্বাচনে প্রত্যেক প্রার্থীর নির্বাচনী এজেন্ট দেওয়ার বিধান থাকা সত্ত্বেও সারা দেশের প্রত্যেক জেলা আইনজীবী সমিতির কোথাও নির্বাচনী এজেন্টদের শিট দেওয়া হয়নি। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং বেআইনি বটে। আমরা বার কাউন্সিল নির্বাচনের অনিয়ম ও দুর্নীতির আশ্রয় গ্রহণের জন্য তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
একইসঙ্গে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের গত ১৪ মে অনুষ্ঠিত নির্বাচন বাতিল করে পুনরায় নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছিখোকন বলেন, বার কাউন্সিলের সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ভোটারদের জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট অথবা সংশ্লিষ্ট বারের পরিচয়পত্র প্রদর্শন করে ভোট প্রয়োগের বিধান আছে। কিন্তু অ্যাটর্নি জেনারেল (পদাধিকার বলে বারের চেয়ারম্যান) সংশ্লিষ্ট বারের পরিচয়পত্র না দেখিয়ে ভোটারদের ভোট প্রদানের কোনো নির্দেশ প্রদান করেননি।
বেশ কয়েকটি বারে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। বিশেষ করে ঢাকা আইনজীবী সমিতিতে কোনো ধরনের পরিচয়পত্র না দেখিয়ে নির্বাচনী কর্মকর্তারা ভোট দানের সুযোগ করে দিয়েছেন। যার ফলে প্রকৃত আইনজীবীরা ভোট প্রদানে বঞ্চিত হয়েছেন এবং অন্যদিকে আইনজীবী নন এমন অনেকে ভোট দিয়েছেন।
সম্মেলনে তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির বর্তমান সদস্য সংখ্যা ৯ হাজার ৯২ জন। বাংলাদেশ বার কাউন্সিল নির্বাচনে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ভোট কেন্দ্রে ভোটার করা হয়েছে মাত্র ৮৫৩ জনকে। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ভোট কেন্দ্রে গত ১৪ মের নির্বাচনে তাদের অনুমতি বা অনুরোধ ছাড়াই ভোটার তালিকা জেলা বারের ভোটকেন্দ্রে স্থানান্তর করায় শত শত আইনজীবী সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ভোটকেন্দ্রে ভোট দিতে পারেননি।
এটি একটি নজিরবিহীন ঘটনা। তাদের ভোট ঢাকা আইনজীবী সমিতিসহ বিভিন্ন নিম্ন আদালতের ভোটকেন্দ্রে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। এ সম্পর্কে বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অ্যাটর্নি জেনারেলকে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে গত ১০ মে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চিঠি দিলেও তিনি কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।
অবিলম্বে বার কাউন্সিলের নির্বাচনের দুর্নীতি তদন্ত করে দায়ী ও জড়িত ব্যক্তিদেরকে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ শান্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।
খোকন বলেন, নজিরবিহীন এই দুর্নীতির জন্য বার কাউন্সিল নির্বাচনের নির্বাচন কমিশনার অ্যাটর্নি জেনারেলের পদত্যাগ দাবি করছি।
উল্লেখ্য, গত ১৪ মে সারা দেশের ৭৮টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শেষে রাতেই আলাদা করে কেন্দ্রগুলোতে ফলাফল ঘোষণা করা হয়। সেই তথ্য অনুসারে নির্বাচিত ১৪টি পদের মধ্যে ১২টি পদেই সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় আওয়ামী লীগ। আর বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীরা মাত্র ২টি পদে জয়লাভ করে। এই ফলাফল এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়নি।