কোনো রিয়েল এস্টেট কোম্পানি বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে অননুমোদিতভাবে কোনো হাউজিং সোসাইটি বা কৃষি জমিতে হাউজিং এস্টেট তৈরি করলে শাস্তি পেতে হবে। এমন বিধান রেখে ‘ভূমি জোনিং ও কৃষি ভূমি সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়া তৈরি করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) ভূমি মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে প্রস্তাবিত এ অধ্যাদেশের চূড়ান্ত খসড়া প্রণয়নের লক্ষ্যে একটি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
কর্মশালায় জানানো হয়, ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাপে অপরিকল্পিত নগরায়ণ, আবাসন, উন্নয়নমূলক কার্য, শিল্প কারখানা স্থাপন, রাস্তাঘাট নির্মাণসহ প্রাকৃতিক কারণে প্রতিনিয়ত ভূমির প্রকৃতি ও শ্রেণি পরিবর্তন হচ্ছে। দেশের বিস্তীর্ণ এলাকার কৃষি ভূমির পরিমাণ ক্রমান্বয়ে কমে যাচ্ছে ।
বর্তমানে দেশের মোট ভূমির ৫৯.৭ শতাংশ কৃষি জমি, ১৭.৪ শতাংশ বনভূমি এবং ২০ শতাংশ জলাভূমি। এ বাস্তবতায় ভবিষ্যতের খাদ্যনিরাপত্তার জন্য ‘ভূমি জোনিং ও কৃষি ভূমি সুরক্ষা অধ্যাদেশ’ অপরিহার্য।
কোনো রিয়েল এস্টেট কোম্পানি এই আইনের বিধান লঙ্ঘন করে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে বা কোনো হাউজিং সোসাইটি থেকে কৃষি জমিতে অননুমোদিতভাবে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে হাউজিং এস্টেট তৈরি করা হলে বা হাউজিং এস্টেট তৈরির উদ্দেশ্যে অধিক পরিমাণ কৃষি জমি দখল করে রাখলে বা কোনো ব্যক্তি, গোষ্ঠী, কোম্পানি বা শিল্প মালিক, রিসোর্ট, ব্যবসায়ী, ব্যাংক, বিমা কোম্পানি, পুঁজিপতি বা কোনো এনজিও বা কোনো ক্লাব কৃষি কাজ ব্যতীত বাণিজ্যিক বা বিনোদন অন্য কোনো উদ্দেশ্যে অননুমোদিতভাবে বিধি দ্বারা নির্ধারিত পরিমাণের অধিক কৃষি জমি দখল করে রাখলে এমন ব্যক্তি, গোষ্ঠী, সোসাইটি, এনজিও, ক্লাব বা কোম্পানির ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সম্পৃক্তদের জন্য জেল ও জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।
এই আইনের অধীন অপরাধগুলো মোবাইল কোর্ট আইন-২০০৯, ৫৯নং-এর মোবাইল কোর্ট থেকে বিচার হবে। আইনটি শিগগিরই চূড়ান্ত করা হবে।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এএসএম সালেহ আহমেদ বলেছেন, ভূমি জোনিংয়ের মাধ্যমে ভূমির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করা হবে। এর ফলে বিভিন্ন অঞ্চলের জন্য উপযুক্ত ব্যবহারের পরিকল্পনা করা সম্ভব হবে। যেমন—আবাসিক এলাকা চিহ্নিত করা, প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষা করা এবং পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব কমানো। এতে কৃষি জমি সুরক্ষিত থাকবে এবং খাদ্য উৎপাদনও বাড়বে।
তিনি বলেন, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কৃষি জমি সংরক্ষণের পাশাপাশি ভূমির জোনভিত্তিক পরিকল্পিত ও সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করা কাম্য।
কর্মশালায় আরও উপস্থিত ছিলেন কৃষি সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান।