ফরিদপুর জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি গোলাম মোহাম্মদ নাসিরকে (৫২) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (৮ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর পল্লবী এলাকার একটি মসজিদ থেকে জুমার নামাজ শেষে বের হওয়ার সময় জনতার রোষানলে পড়েন তিনি। এ সময় জনতা তাকে মারধর করে পল্লবী থানায় সোপর্দ করে।
শনিবার (৯ আগস্ট) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার পুলিশ।
পুলিশ জানায়, নাসিরকে আজ শনিবার ভোর ৪টার দিকে রাজধানীর পল্লবী থানা থেকে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় নিয়ে আসা হয়। পরে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের দায়ের করা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। শনিবার জেলার এক নম্বর আমলি আদালতে সোপর্দ করে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন জানানো হয়েছিল। আদালত রিমান্ড শুনানির দিন পরে ধার্য করার সিদ্ধান্ত দিয়ে তাকে জেল হাজতে পাঠিয়ে দেন।
গোলাম মোহাম্মদ নাসির ফরিদপুর শহরের ওয়ারলেস পাড়ার বাসিন্দা। তার বাবার নাম (মৃত) এস এম বদরুল আলম। তিনি জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহমুদা বেগমের ভাই। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের শ্রমবিষয়ক সম্পাদক। এ ছাড়া তিনি ফরিদপুর পৌরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও জেলা মোটর ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জুলাই গণঅভ্যূত্থানে গত বছর ৩ ও ৪ আগস্ট ফরিদপুর শহরের ভাঙ্গা রাস্তার মোড় এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার ওপর নিজ দলের কর্মী বাহিনী নিয়ে হামলা করেন গোলাম মোহাম্মদ নাসির। এ সময় গুলির ঘটনাও ঘটে। তবে আন্দোলনকারীদের তীব্র প্রতিরোধের মুখে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন গোলাম মোহাম্মদ নাসির ও তার কর্মী বাহিনী।
প্রসঙ্গত, গত বছর ১০ অক্টোবর ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন ফরিদপুর সদরের গেরদা ইউনিয়নের মাহমুদপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. মুজাহিদুল ইসলাম। ফরিদপুরে ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগী সংগঠনের হামলায় তার মেয়ে আহত হয়। এ ঘটনায় বাদী হয়ে তিনি ওই মামলা করেন।
ওই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হকসহ ঢাকা ও ফরিদপুর আওয়ামী লীগের ১২৫ জন শীর্ষ নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয় আরও ৩০০ থেকে ৪০০ জনকে। ওই মামলার ২৭ নম্বর এজাহারভুক্ত আসামি আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম মোহাম্মদ নাসির।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদ উজ্জামান বলেন, ঢাকার পল্লবীতে শুক্রবার দুপুরে স্থানীয় জনতার রোষানলে পড়েন গোলাম মোহাম্মদ নাসির। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে পল্লবী থানায় নিয়ে যায়। তার আটকের খবর পেয়ে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার পুলিশ পল্লবী থানা থেকে তাকে কোতোয়ালি থানায় নিয়ে আসে।