আগামী জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে দেশে উদযাপিত হবে পবিত্র ঈদ উল আজহা। মুসলমানদের অন্যতম ধর্মীয় এ উৎসবকে কেন্দ্র করে কোরবানির পশু কেনাসহ পরিবার-পরিজনের বাড়তি খরচের কথা মাথায় রেখে বেশি বেশি অর্থ পাঠাচ্ছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। ফলে ঈদ ঘিরে বাড়ছে রেমিট্যান্স প্রবাহ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সবশেষ তথ্য বলছে, চলতি মে মাসের প্রথম ১৭ দিনে ব্যাংকিং চ্যানেলে ১৬১ কোটি মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। বাংলাদেশি মুদ্রায় বর্তমান বিনিময় হার হিসাবে (প্রতি ডলার ১২৩ টাকা) এই অঙ্ক ১৯ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। চলমান ধারা অব্যাহত থাকলে মাস শেষে রেমিট্যান্স ৩ বিলিয়ন ডলার পৌঁছাবে বলে আশা করছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা।
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পরই দেশ থেকে অর্থপাচার কমেছে। কমেছে হুন্ডির দৌরাত্ম্য। যে কারণে বাড়ছে রেমিট্যান্সের (প্রবাসী আয়) গতিপ্রবাহ। এর ধারাবাহিকতায় দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছে গত মার্চ মাসে। এপ্রিলেও সে ধারাবাহিকতা অব্যাহত ছিল।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, মে মাসের প্রথম ১৭ দিনে ১৬১ কোটি ডলার রেমিট্যান্সের মধ্যে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৪৯ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। বিশেষায়িত দুই ব্যাংকের মধ্যে এক ব্যাংকের (কৃষি ব্যাংক) মাধ্যমে এসেছে ১৫ কোটি ডলারের বেশি। বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৯৬ কোটি ২৭ লাখ ৬০ হাজার ডলারের রেমিট্যান্স। আর বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৩১ লাখ ৩০ হাজার ডলার।
অন্যদিকে কোনো রেমিট্যান্স আসেনি এমন ব্যাংকের সংখ্যা ৯টি। এর মধ্যে দেশি ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে বিশেষায়িত রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, বেসরকারি খাতের কমিউনিটি ব্যাংক, সিটিজেন্স ব্যাংক, আইসিবি ইসলামী ব্যাংক, পদ্মা ব্যাংক এবং সীমান্ত ব্যাংক পিএলসি। বিদেশি ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে- হাবিব ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান এবং স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া।
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স আসে, আগস্টে আসে ২২২ কোটি ১৩ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার, সেপ্টেম্বরে ২৪০ কোটি ৪১ লাখ ডলার, অক্টোবরে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার, নভেম্বর মাসে ২২০ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে ২৬৪ কোটি ডলার, জানুয়ারিতে ২১৯ কোটি ডলার, ফেব্রুয়ারি মাসে ২৫২ কোটি ৮০ লাখ ডলার, মার্চে ৩২৯ কোটি ডলার এবং এপ্রিলে ২৭৫ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।