শুক্রবার , ১৪ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ১লা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - বসন্তকাল || ১৪ই রমজান, ১৪৪৬ হিজরি

৬ দিন আন্দোলন-সংগ্রাম শেষে সরকারি তিতুমীর কলেজ সচল

প্রকাশিত হয়েছে- মঙ্গলবার, ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

৬ দিন আন্দোলন-সংগ্রাম শেষে সরকারি তিতুমীর কলেজে সচল হয়েছে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম।

মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দিনভর চলে কলেজের সব কার্যক্রম।

এরা আগে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবিতে কয়েকদিনের আমরণ অনশন, অবরোধ, শাট ডাউন ক্যাম্পাসসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পলান করেন তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা।

জানা গেছে, মঙ্গলবার সকাল থেকেই শুরু হয় প্রশাসনিক কার্যক্রম। এরপর সকাল ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত হয়েছে স্নাতক-স্নাতকোত্তর শ্রেণির ক্লাস। তবে ক্লাসে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির সংখ্যা ছিল অন্য সময়ের তুলনায় কিছুটা কম। এরপর দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে শুরু হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাধীন সাত কলেজের স্নাতক (সম্মান) তৃতীয় বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষা।

সরকারি তিতুমীর কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক শিপ্রা রাণী মণ্ডল বলেন, সম্প্রতি শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি নিয়ে আন্দোলন করেছেন। গতকাল রাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর যাবতীয় কর্মসূচি স্থগিত করে আজ ক্লাসে ফিরেছে। আমরা আশা করছি, সামনে আর এমন অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির মুখোমুখি আমাদের হতে হবে না।

তবে শিক্ষার্থীরা বলছেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সুনির্দিষ্ট আশ্বাসে তারা ক্লাসে ফিরেছেন। যার বাস্তবায়ন দেখাতে হবে আগামী ৭ দিনের মধ্যে। এরমধ্যে যদি প্রতিশ্রুত বিষয়গুলো নিয়ে দৃশ্যমান অগ্রগতি না হয় তাহলে ফের আন্দোলনের ডাক আসতে পারে।

সাম্প্রতিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া অন্যতম শিক্ষার্থী নায়েক নূর মোহাম্মদ বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আশ্বাসে আপাতত ৭ দিন কর্মসূচি স্থগিত থাকবে। এ সময়ে ক্লাস-পরীক্ষা সবই চলবে। আলোচনা সভায় সরকারের পক্ষ থেকে যে-সব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে সেগুলো কতটা দৃশ্যমান হবে তা বিবেচনা করেই পরবর্তীতে কর্মসূচি দেওয়া হবে। কারণ, গতকাল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব বৈঠকে বলেছেন,
বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃতির দাবি বাস্তবায়নে তিতুমীর কলেজ শিক্ষার্থীদের নির্বাচিত সরকার গঠন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, বৈঠকে আমরাও কিছু দাবি জানিয়েছি। যা পূরণের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। দাবিগুলো হচ্ছে —

১. সরকারি তিতুমীর কলেজের জন্য স্বতন্ত্র বোর্ড গঠন।

২. তিতুমীরে ভর্তির জন্য আলাদা ভর্তি কাঠামো তৈরা করা।

৩. পিএইচডি ধারী শিক্ষকসহ ১৫০ জন নতুন শিক্ষক নিয়োগ করা।

৪. আবাসন সংকটের জন্য রাজউক ও টিএন্ডটির ভূমি অধিগ্রহণ করা।

৫. বর্তমান ৯টি বাসের পাশাপাশি নতুন আধুনিক কিছু বাস চালু করা।

৬. জার্নালিজম ও আইন বিভাগ চালু করা।

৭. শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ছাত্র প্রতিনিধি ও কলেজ অধ্যক্ষের সমন্বয়ে শিক্ষার মান যাচাইয়ে পর্যবেক্ষণ কমিটি করা।

প্রসঙ্গত, সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে বেশ কয়েকমাস ধরে আন্দোলন করে আসছিলেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা। এই দাবিতে মিছিল, সড়ক-রেলপথ অবরোধ, স্মারকলিপি প্রদান, ক্লাস বর্জনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। যার প্রেক্ষিতে সম্ভাব্যতা যাচাই-বাছাই করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে একটি বিশেষ কমিটিও গঠন করা হয়। তবে সম্প্রতি এ বিষয়ে ইতিবাচক কোনো সাড়া না পেয়ে গত বুধবার (২৯ জানুয়ারি) বিকেল থেকে দাবি আদায়ে আমরণ অনশনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন শুরু করেন। যা সরকারের আশ্বাসে সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।