২০০ বছর পর খুলে দেওয়া হলো ঐতিহাসিক ফিরোজপুর কেল্লা
দীর্ঘ ২০০ বছর পর সাধারণ মানুষের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যের সীমান্তবর্তী অঞ্চলের ঐতিহাসিক ফিরোজপুর কেল্লা। পর্যটন উন্নয়ন এবং সীমান্ত অঞ্চলের মানুষকে দেশের সামরিক ঐতিহ্যের সঙ্গে যুক্ত করতে এই উদ্যোগ নিয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনীর গোল্ডেন অ্যারো ডিভিশন।
সোমবার (২ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
গোল্ডেন অ্যারো ডিভিশনের জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি) মেজর জেনারেল আর. এস. মনরাল জানান, “ফিরোজপুর কেল্লা শুধু একটি স্থাপত্য নিদর্শন নয়, এটি ১৯ শতকের শিখ সাম্রাজ্যের প্রতিরক্ষা কৌশল ও স্থাপত্যকলার এক অসাধারণ দৃষ্টান্ত। কেল্লাটির ছয়কোণা কাঠামো এবং মজবুত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাই এর ঐতিহাসিক কৌশলগত গুরুত্বের সাক্ষ্য দেয়।”
তিনি আরও বলেন, “এই কেল্লা আবার সাধারণের জন্য খুলে দেওয়ায় অঞ্চলটির সাহস, আত্মত্যাগ ও জাতীয় গর্বের ইতিহাসের সঙ্গে বর্তমান প্রজন্মের সংযোগ গড়ে উঠবে। এটি পাঞ্জাবের সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক পর্যটন মানচিত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন।”
স্টেশন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার বিক্রম সিং জানান, ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে ফিরোজপুরের গুরুত্ব অপরিসীম। এখানকার বহু বিপ্লবী ও শহীদ ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছিলেন। এই কেল্লা ও তার চারপাশ বহু ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী হয়ে রয়েছে, যা আজও জাতীয় গর্ব ও আত্মত্যাগের প্রতীক।
এনডিটিভি বলছে, এই কেল্লা একসময় শিখ সাম্রাজ্যের সীমান্ত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ ছিল। ১৮৩৯ সালে ডিউক অব ওয়েলিংটনের নির্দেশে এটি ব্রিটিশ গ্যারিসনে রূপান্তরিত হয়।
এরপর ১৮৫৮ সালে এটি অস্ত্রাগারে পরিণত হয় এবং সেখানে শুকনো গান কটন স্টোর, গানপাউডার ম্যাগাজিন ও গোলাবারুদের গুদাম তৈরি করা হয়।
এক সময় এই কেল্লা ছিল বন্দুক, গোলাবারুদ, প্রশিক্ষিত ঘোড়া ও ষাঁড় সরবরাহের কেন্দ্র। এখানে একসঙ্গে প্রায় ১০ হাজার ষাঁড়, ১০ হাজার ঘোড়া এবং ১৫০টি উট রাখা হতো।
১৯৪১ সাল পর্যন্ত এই কেল্লা অস্ত্রাগার হিসেবেই ব্যবহৃত হতো। এরপর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শুরুর দিকে কৌশলগত কারণে ব্রিটিশরা অস্ত্রভাণ্ডার সরিয়ে নিয়ে যায় কাসুবেগুতে।