পরীক্ষা পদ্ধতি পরিবর্তন, নামাজ-আজানের সময় ২০ মিনিট গান বাজনা বন্ধসহ ১৪ দফা দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজির (আইইউবিএটি) শিক্ষার্থীরা।
আজ (শনিবার) সকাল থেকে আন্দোলনে করেন তারা।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, তারা কিছু দাবি দীর্ঘদিন ধরে জানিয়ে এলেও কর্তৃপক্ষ তা মানেনি। এ কারণে সকাল থেকে আন্দোলন শুরু করেছেন তারা। এতে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়েছেন।
শিক্ষার্থীদের দাবির মধ্যে রয়েছে- পূর্বে যে দাবিগুলো করা হয়েছে, সেগুলো কি জন্য বাস্তবায়ন হয়নি এই মর্মে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সামনে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতে হবে; একই দিনে একের অধিক পরীক্ষা, ছুটির দিনে কোনোপ্রকার পরীক্ষা নেওয়া যাবে না এবং রিডিং ডে’র ছুটি বর্ধিত করতে হবে। এক্সাম সিস্টেম পরিবর্তন, যেমন- মিডটার্ম সেন্ট্রালি বর্জন করতে হবে; কোনো প্রকার অতিরিক্ত ফি ছাড়া বিড়ম্বনা মুক্ত অনলাইন পেমেন্টের ব্যবস্থা করতে হবে।
এ ছাড়া যাদের বহিষ্কার করা হয়েছিল, তাদের ভার্সিটির কোনো পোস্টে পুনর্বহাল করা যাবে না; ইউজিসি রুলস অনুযায়ী ডিপার্টমেন্টাল ডিন দুই বছর অন্তর অন্তর পরিবর্তন করতে হবে; নামাজের আজানের পর ন্যূনতম ২০মিনিট পর্যন্ত সব প্রকার গান বাজনা বন্ধ রাখতে হবে এবং মসজিদে মাইকে আজান দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে; যারা ২৪১ ও ২৪২ ব্যাচের, তাদের ১০০ শতাংশ স্কলারশিপে ৪ বছরে টোটাল খরচ ৩ লাখ ৯৬ হাজার, কিন্তু যারা ২৫১ ব্যাচের, তাদের ১০০ শতাংশ স্কলারশিপে দেখানো হচ্ছে ২ লাখ ৯৪ হাজার। এই ১ লাখ টাকা কমবেশি কেন? সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতে হবে।
পাশাপাশি কনভোকেশনে শিক্ষার্থীর সঙ্গে অন্তত দুজন গেস্টের অনুমতি দিতে হবে; নারী শিক্ষার্থীদের জন্য অন্তত তিনটি কমনরুমের ব্যবস্থা করা এবং প্রয়োজনীয় সুবিধা যেমন- স্যানিটারি প্যাড ও ফার্স্ট এইডের ব্যবস্থা রাখা; ভার্সিটির ক্লিনার এবং সিকিউরিটি স্টাফদের খাবারের জন্য নির্দিষ্ট জায়গা ঠিক করে দেওয়া; ক্লাস ডে-তে ইউনিভার্সিটিতে শুটিং বন্ধ করা এবং শুটিংয়ের নামে ক্যাম্পাসে অশ্লীলতা, অমার্জিত, ধূমপান এসব পরিহার করতে হবে।
ইন্টার্নের সঙ্গে কোর্স নিতে দিতে হবে (অন্তত ৬ ক্রেডিট) এবং ইন্টার্ন ও থিসিসের ক্রেডিট ফি কোথায় ব্যবহৃত হচ্ছে এর ব্যাখ্যা দিতে হবে; ২০ রমজানের পরবর্তী কার্যক্রম অনলাইনে করতে হবে এবং ঈদের পরবর্তী ছুটি বর্ধিত করতে হবে এবং চলমান দাবির পক্ষে এবং আন্দোলনে যুক্ত থাকা সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে হয়রানিমূলক কোনো প্রকার শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে না।
আগের দাবির মধ্যে রয়েছে, কোর্স অফারিং সম্পর্কিত সব সমস্যার সমাধান করতে হবে। যেমন- সার্ভার আপডেট করতে হবে; কমপ্লেইন বক্স সংযোজন এবং যথোপযুক্ত জবাবদিহি নিশ্চিত করা; ড্রেস কোড সংস্কার পূর্ণাঙ্গভাবে মানা হয়নি; শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নির্ধারিত ক্লাস সংখ্যা সীমিত করতে হবে এবং পর্যাপ্ত শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগ করতে হবে। তাছাড়া অনলাইনে মেকাপ ক্লাস নেওয়ার স্বাধীনতা দিতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সহনশীল আচরণ করতে হবে।
এছাড়া ল্যাব ফ্যাসিলিটি উন্নয়নে পর্যাপ্ত অ্যাসিস্ট্যান্ট নিয়োগ এবং ল্যাব ফ্যাসিলিটি বাড়ানো, ল্যাব অ্যাসিস্ট্যান্ট এর উপস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের প্র্যাকটিসের জন্য নির্ধারিত সময়ের বাইরে ও ল্যাব উন্মুক্ত রাখা; ক্যান্টিনে খাবারের গুণগত মান উন্নত করতে হবে এবং আলোচনার ভিত্তিতে খাবারের মূল্য নির্ধারণ করতে হবে; সার্টিফিকেটে প্রয়োজনীয় তথ্য সঠিকভাবে উল্লেখ করতে হবে এবং আইইউবিএটি এর আইইবি ও কেআইবি মেম্বারশিপের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে; রেজিস্ট্রেশন ও রিটেক ফি ৫০ শতাংশ করতে হবে (জরিমানা ক্যানসেলবিষয়ক); ক্রেডিট ট্রান্সফার দেশ ও দেশের বাহিরে জামেলা মুক্ত করতে হবে; নোটিশ ইমেইলে দিতে হবে এবং কনসালটেন্সি রুমে স্টুডেন্টদের পড়ার সুযোগ দিতে হবে।
বিষয়টি নিয়ে বক্তব্য জানতে আইইউবিএটি উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুর রবকে পাওয়া যায়নি।