মঙ্গলবার , ১৪ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৩১শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - গ্রীষ্মকাল || ৬ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

হালখাতা করে ধারের টাকা তুললেন স্কুল শিক্ষক

প্রকাশিত হয়েছে- শনিবার, ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজনসহ বিভিন্নজনকে বিভিন্ন সময় টাকা ধার দিয়েছিলেন স্কুল শিক্ষক আব্দুল আওয়াল। কিন্তু ধারের সেই টাকা কোনোভাবে তুলতে না পেরে অবশেষে তিনি হালখাতার অনুষ্ঠান করে টাকা তোলার ব্যবস্থা করেন। নতুন এ পদ্ধতিতে পুরোপুরি সফল না হলেও ধার দেওয়া টাকার অনেকটাই তুলতে সক্ষম হয়েছেন তিনি। তার এ অভিনব পদ্ধতি সামাজিক ধারের সেই টাকা কোনোভাবে তুলতে না পেরে অবশেষে তিনি হালখাতার অনুষ্ঠান করে টাকা তোলার ব্যবস্থা করেন। নতুন এ পদ্ধতিতে পুরোপুরি সফল না হলেও ধার দেওয়া টাকার অনেকটাই তুলতে সক্ষম হয়েছেন তিনি। তার এ অভিনব পদ্ধতি সামাজিক তিনি হালখাতার অনুষ্ঠান করে টাকা তোলার ব্যবস্থা করেন। নতুন এ পদ্ধতিতে পুরোপুরি সফল না হলেও ধার দেওয়া টাকার অনেকটাই তুলতে সক্ষম হয়েছেন তিনি। তার এ অভিনব পদ্ধতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গেছে।জানা গেছে, কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার আন্ধারীরঝাড় এম.এ.এম উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আব্দুল আওয়াল সরকার এলাকায় পরোপকারী হিসেবে পরিচিত। ফলে বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়স্বজনসহ পরিচিতরা বিপদে পড়লেই তার কাছ থেকে টাকা ধার নিতেন। গত তিন বছরে এভাবে ৩৯ জনকে প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা ধার দেন তিনি।

তবে টাকা নিয়ে সময়মতো পরিশোধ করেছেন খুব কম মানুষই। আবার সে টাকা চাইতেও লজ্জা পেতেন আব্দুল আওয়াল। কিছুদিন আগে এক বন্ধুর দোকানের হালখাতা অনুষ্ঠান দেখে তার মাথায় নতুন এ চিন্তা মাথায় আসে। তিনি ধার আদায়ে হালখাতা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। দুই সপ্তাহ আগে ধারের টাকা আদায়ে হালখাতার জন্য চিঠি দেন ধার নেওয়া লোকজনকে। শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) তার ধারের হালখাতা অনুষ্ঠান হয়। পয়লা বৈশাখের আদলে ধার শোধকারী ব্যক্তিদের হাতে বিরিয়ানির প্যাকেট তুলে দেওয়া হয়। বিষয়টি নিয়ে আব্দুল আওয়াল সরকার বলেন, একজনের বিপদ-আপদে আরেকজন পাশে দাঁড়াবে- এটাই স্বাভাবিক। এই ধারণা থেকেই আমি অনেককে ধার দিয়েছিলাম। আমার কাছে টাকা থাকলে কাউকে না করতে পারি না। কিন্তু সে টাকা অনেকেই পরিশোধ করেনি। আবার ধার দেওয়া টাকা ফেরত না পেলেও বন্ধু-বান্ধবের কাছে লজ্জায় চাইতে পারিনি।

তিনি আরও বলেন, এভাবে বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয় স্বজনদের ধার দিতে দিতে একসময় সাড়ে তিন লাখ টাকা জমে যায়। তাই হালখাতা করে ধারের টাকা তোলার চিন্তা আসে মাথায়। এ পর্যন্ত ধারের অর্ধেক টাকা তুলতে পেরেছি। বাকি টাকাটাও ফিরে পাব বলে আশা করছি। অনেকে দূর-দূরান্তে আছে, তারা হালখাতায় আসতে পারেনি। তবে তারা আমাকে ফোন করে টাকা দেওয়ার কথা জানিয়েছে।

জানা গেছে, গত ৩ বছর ধরে ৩৯ জনকে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকা ধার দিয়েছিলেন আব্দুল আওয়াল। হালখাতা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ২০ জন দেড় লাখ টাকা পরিশোধ করেছেন। হালখাতার মাধ্যমে আব্দুল আউয়াল সরকারের কাছে ধারের টাকা ফেরত দিতে পেরে খুশি বন্ধু-বান্ধব ও পরিচিতজনেরাও।

হালখাতায় আসা এক ব্যক্তি বলেন, ৬ মাস আগে আমার মেয়ের ভর্তির জন্য আব্দুল আওয়াল সরকারের কাছ কাছ থেকে সাড়ে ৬ হাজার টাকা ধার নিয়েছিলাম। পরে নানা সমস্যার কারণে টাকা ফেরত দিতে পারিনি। কয়েকদিন আগে তার হালখাতার চিঠি পাই। আজ এসে টাকা পরিশোধ করলাম। ঋণ পরিশোধ করতে পেরে ভালোই লাগছে।