জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ বলেছেন, বঙ্গোপসাগরে অস্বাভাবিক জোয়ার ও নিম্নচাপের প্রভাবে নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় বেড়েছে নদীভাঙনের তীব্রতা। প্রতিদিনই নতুন নতুন এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। তাই দ্রুত ভাঙনরোধে স্থায়ী সমাধান ব্লক বাঁধ দরকার।
রোববার (২৭ জুলাই) দুপুরে গত কয়েকদিন ধরে অতি-বৃষ্টি ও জোয়ারে হরণী ইউনিয়নের চেয়ারম্যানঘাট এরিয়ায় নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত স্থান পরিদর্শন করে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় উপস্থিত জনতা ব্লক বাঁধের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।
হান্নান মাসউদ বলেন, হাতিয়ার উপকূলীয় এলাকায় ভাঙন ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। এখানে টেকসই ব্লক বাঁধ না দিলে অদূর ভবিষ্যতে পুরো জনপদ হুমকির মুখে পড়বে। বিষয়টি আমরা বারবার সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। কিন্তু কার্যকর উদ্যোগ আসছে না। হাতিয়াবাসীর জন্য আমি লড়ে যাব ইনশাআল্লাহ।
চেয়ারম্যান ঘাটের ব্যবসায়ী ও স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, নদী ভাঙন ঠেকাতে হান্নান মাসউদ ভাই জিও ব্যাগ ফেলছেন। কিন্তু এতে করেও ভাঙন ঠেকানো যাচ্ছে না। ঐতিহ্যবাহী মাছঘাট আজ বিলীন হওয়ার পথে। হান্নান মাসউদ ভাইকে পেয়ে আমরা আমাদের মনের কথাগুলো বলতে পেরেছি। তবে বর্ষা মৌসুমে জোয়ারের সময় ভাঙনের তীব্রতা দ্বিগুণ হয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে অনেকের বসতঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। চাষের জমি, ঘের, গবাদিপশুর ঘরও হুমকিতে রয়েছে।
চানন্দী ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. শহিদুল্লাহ বলেন, প্রতিবার জোয়ারে একটু একটু করে ভাঙে। এবার মাত্র এক সপ্তাহে আমার ২০ শতাংশ জমি নদীতে চলে গেছে। এখন ঘরটা নিয়ে কোথায় যাব—এই চিন্তায় আছি। পানি উন্নয়ন বোর্ড শুধু অস্থায়ী জিও ব্যাগ ফেলে সাময়িক সমাধান করা হচ্ছে, যা ভাঙন ঠেকাতে কার্যকর নয়।
প্রসঙ্গত, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে অস্বাভাবিক জোয়ারে প্লাবিত হয়েছে নোয়াখালীর উপকূলীয় নিম্নাঞ্চল। জেলার দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় প্রায় তিন কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।জলোচ্ছ্বাসে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে বেড়িবাঁধের বাইরের হাজার হাজার মানুষ। জোয়ারের পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে বসতঘর, রান্নাঘর, আঙিনা, রাস্তাঘাট ও মাছের ঘের। কোথাও হাঁটু পানি, আবার কোথাও কোমর সমান পানি জমে আছে। এসব এলাকায় বসবাসকারী হাজারো মানুষ এখন চরম দুর্ভোগে আছেন।