আব্দুল্লাহ আল নোমান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, ঢাকা (ঢাকা): ঢাকার সাভারে চাঞ্চল্যকর পরিবহন ব্যবসায়ী শাহাবুদ্দিন হত্যা মামলার প্রধান আসামি রাকিবুল ইসলাম ফয়সালসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে সাভার মডেল থানা পুলিশ। শাহাবুদ্দিনকে হত্যার পর আসামিরা আত্মগোপনে চলে যান এবং দেশের বাহিরে পালানোর চেষ্টা করছিলেন। বুধবার (১ মার্চ) দুপুরে সাভার মডেল থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম, অপস্ অ্যান্ড ট্রাফিক- উত্তর) মোহাম্মদ আব্দুল্লাহিল কাফি। এর আগে, মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দেশীয় অস্ত্রসহ তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
শাহাবুদ্দিন হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন- রাকিবুল ইসলাম ফয়সাল (২৮), কিয়াম উদ্দিন (৬০) ও মো. রিপন (২৪)। তারা সবাই সাভারের হেমায়েতপুরের বাসিন্দা। এর আগে ঘটনার দিন রাতে (১৮ ফেব্রুয়ারী) একই মামলায় প্রধান আসামী ফয়সালের শ্বশুর আব্দুল মান্নানকে (৫০) হেমায়েতপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়। বাকি আসামিরা হলেন- শহিদুল্লাহ (৩৫) ও জাহাঙ্গীর (৩০)। তাদেরকে এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম, অপস্ এন্ড ট্রাফিক- উত্তর) মোহাম্মদ আব্দুল্লাহিল কাফি বলেন, হত্যাকাণ্ডের মূল আসামী ফয়সাল সম্পর্কে নিহত শাহাবুদ্দিনের সৎ ভাগিনা। তাদের মধ্যে দীর্ঘ দিন যাবৎ পারিবারিক বিরোধ ও মামলা মােকদ্দমা চলে আসছিলো। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৮ ফেব্রুয়ারী গ্রেপ্তার রাকিবুল ইসলাম ফয়সালসহ মামলার অন্যান্য অসামীরা নিহত শাহাবুদ্দিনকে হত্যার উদ্যেশ্যে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ধারালাে অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সাভারের হেমায়েতপুর পিকআপ ষ্ট্যান্ড এলাকায় ওৎ পেতে থাকে। পরে শাহাবুদ্দিন সেখানে গেলে তারা অতর্কিতভাবে তার উপর হামলা চালিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে তাকে মারাত্মক জখম করে পালিয়ে যায়। এসময় তাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসলে আরো দুইজনকেও আহত করে হামলাকারীরা। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চারদিন পর অর্থাৎ ২২ ফেব্রুয়ারী রাতে শাহাবুদ্দিনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী মোছা. পিয়ার মন বাদী হয়ে সাভার মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরও বলেন, ঘটনার পর থেকেই আসামীরা সাভার ছেড়ে পালিয়ে যান। এসময় তারা ঢাকা, গাজিপুর, চট্রগ্রাম ও কক্সবাজারে পালিয়ে বেড়ান। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রাজীব কুমার সাহা বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ঢাকা মহানগরী থেকে তাদের গ্রেপ্তার করেন। পরে আসামিদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত রক্তমাখা দুটি ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তার আসামিদের নামে থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার আসামিদের বিরুদ্ধে রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।