শনিবার , ২৩শে আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ৮ই ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - শরৎকাল || ২৯শে সফর, ১৪৪৭ হিজরি

শেখ মুজিব আর শেখ হাসিনাকে এক করে দেখবেন না : কাদের সিদ্দিকী

প্রকাশিত হয়েছে- শনিবার, ১৬ আগস্ট, ২০২৫

কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেছেন, শেখ মুজিব আর শেখ হাসিনাকে এক করে দেখবেন না। মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ, শেখ হাসিনাকে এক করে দেখবেন না। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে, ততদিন জয় বাংলা থাকবে। ততদিন বঙ্গবন্ধু থাকবে। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের পিতা থাকবে।

শনিবার(১৬ আগস্ট) বিকেলে টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে মাকড়াই দিবস উপলক্ষ্যে কাদেরিয়া বাহিনী মুক্তিযোদ্ধা মহাসমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন।

কাদের সিদ্দিকী বলেন, বঙ্গবন্ধুর মাথায় প্রস্রাব করা আমার মাথায় প্রস্রাব হয় নাই। স্বাধীনতার মাথায় প্রস্রাব করা হয় নাই। জিয়াউর রহমানের মাথায় প্রস্রাব করা হয় নাই। বাংলাদেশ ও স্বাধীনতার মাথায় প্রস্রাব করা হয়েছে। এর বিচার চাই, বিচার চাই, বিচার চাই। বঙ্গবন্ধুর বাড়ি যারা ভেঙেছেন, মনে রাখবেন তাদেরও বাড়িঘর রয়েছে। তাদেরও কবর রয়েছে, তাদেরও স্মৃতিসংঘ রয়েছে। তাদের কবর হাতে নিয়ে ঘুরতে পারবেন না। বাড়িঘর হাতে নিয়ে যেতে পারবেন না। তাই সীমা অতিক্রম করবেন না।

তিনি এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে উদ্দেশ্য করে বলেন, কে একজন বলেছেন (নাহিদ ইসলাম)- বঙ্গবন্ধু জাতির পিতা নন। বঙ্গবন্ধু যদি জাতির পিতা না হন, তাহলে আপনার পিতা কে? কোনো সন্তানের পিতা না থাকলে সে সন্তান সম্মানী সন্তান হয় না, সে সন্তান কুলাঙ্গার হয়। একটু ভেবে চিন্তে বলবেন।

কাদের সিদ্দিকী বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন করেছেন, শেখ হাসিনার পতন ঘটিয়েছেন। আমি অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে সমর্থন করি। কারণ শেখ হাসিনার পতন আল্লাহ তরফ থেকে হয়েছে। অন্যায়ের জন্য হয়েছে। আপনাদের মুরোদে শেখ হাসিনার পতন হয় নাই। জনগণ রাস্তায় নেমেছিল বলে শেখ হাসিনার পতন হয়েছে। কিন্তু আপনারা যদি শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অন্যায় করতে যান। আমি কাদের সিদ্দিকী বেঁচে থাকতে তার বিরুদ্ধে দাঁড়াবো। আইন অনুযায়ী তার বিচার করুন। তাকে শাস্তি দিন। মাথা পেতে নেব।

তিনি আরও বলেন, শহীদ স্মৃতি উদ্যানে জয় বাংলা স্লোগান দেওয়ার কারণে কাকে কাকে গ্রেপ্তার করেছিলেন। এই মাকড়াইয়ে এখানে দাঁড়িয়ে বলছি- আল্লাহ যদি দুই বছর বাঁচিয়ে রাখে, যারা গ্রেপ্তার করছে, তাদেরকে গ্রেপ্তার করিয়ে চৌদ্দ শিকের ভেতরে দেব।

কাদের সিদ্দিকী আরও বলেন, অধ্যাপক ইউনূসকে আমি সম্মান করতাম। বঙ্গবন্ধুর বাড়ি ভেঙেছে আপনি দেখেছেন, আপনার গ্রামীণ ব্যাংকের বিরুদ্ধে সমস্ত সরকার। বাংলাদেশের অসংখ্য মানুষ রুখে দাঁড়িয়েছিল। আমি কাদের সিদ্দিকী না দাঁড়ালে আপনার অর্ধেক গ্রামীণ ব্যাংক মাটির নিচে চলে যেত। আপনার এক বছরের শাসনে সেটি আর হৃদয় থেকে নিতে পারছি না। আপনাকে আবার আমি অনুরোধ করছি ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন না দিলে এবং নির্বাচন করতে না পারলে শেখ হাসিনার চাইতে আপনার পরিণতি ১০ গুণ খারাপ হবে।

কাদের সিদ্দিকী বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের গায়ে হাত দেওয়ার চেষ্টা করবেন না। মুক্তিযোদ্ধাদের গলায় যারা জুতার মালা দিয়েছেন, আমি সেই মুক্তিযোদ্ধাদের প্রত্যেকের গলায় ফুলের মালা পরিয়ে দেব ইনশাআল্লাহ।

অনুষ্ঠানে সাবেক জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ফজলুর হকের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী, ঘাটাইল উপজেলার সাবেক কমান্ডার এমদাদুল হক খান, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোফাজ্জল হোসেন, হুমায়ুন বাংগাল, ঘাটাইল উপজেলার সাংগঠনিক সম্পাদক আতিকুর রহমান প্রমুখ।

এ সময় বীর মুক্তিযোদ্ধা ও কৃষক জনতা লীগের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।