শরীয়তপুরে সদ্য ঘোষিত জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে ঢাকা-শরীয়তপুর সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেছেন ছাত্রদলের একাংশের নেতাকর্মীরা। বুধবার (৪ জুন) দুপুরে শরীয়তপুর সরকারি কলেজের সামনে থেকে বিক্ষোভ করেন তারা। এতে প্রায় এক ঘণ্টা সড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে। সড়কজুড়ে দেখা দেয় যানজট। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।
বিক্ষোভকারীরা জানান, সদ্য ঘোষিত জেলা ছাত্রদলের কমিটি অছাত্র এবং বিবাহিত লোকদের সমন্বয়ে গঠিত হয়েছে। কমিটির আহ্বায়ক একজন শ্রমিক নেতা ও দুই সন্তানের জনক। যা গঠনতন্ত্র পরিপন্থি। দ্রুত কমিটি বাতিল করে নতুন করে কমিটির আহ্বান জানানো হয়। নয়তো কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ার দেন বিক্ষোভকারীরা।
স্থানীয় ছাত্রদল ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শরীয়তপুরে দীর্ঘ ৩ বছর পর জেলায় ছাত্রদলের ৩৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে এইচ এম জাকির হোসেনকে আহ্বায়ক ও সোহেল তালুকদারকে সদস্য সচিবের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
এদিকে কমিটি ঘোষণার পর থেকে একটি পক্ষ সেটি বাতিলের দাবি জানায়। মঙ্গলবার বিকেলে সদ্য ঘোষিত কমিটির একটি পক্ষ কমিটিকে ঘোষণাকে সাধুবাদ জানিয়ে বিজয় মিছিল বের করে। অপরদিকে আরেকটি পক্ষ কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিল দুটির একটি পালং থানার সামনের গেইটের সড়ক ও আরেকটি মিছিল পেছনের গেইটের সড়ক দিয়ে যাওয়ার সময় হঠাৎ করেই একটি পক্ষ আরেকটি পক্ষের ওপর হামলা চালায়। এ সময় বেশ কিছু সময় হামলা, পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটলে অন্তত পাঁচজন আহত হয়। পরে তারা সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন।
বুধবার বিক্ষোভে অংশ নিয়ে ছাত্রদলের একাংশের নেতা খান বাহাদুর আফজাল নূর বলেন, জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে এইচ এম জাকিরকে। তিনি একজন আইনজীবী, বাস শ্রমিক নেতা, দুই সন্তানের জনক এবং সেন্ট্রাল প্রেসিডেন্ট থেকে ১০ বছরের বড়। এ ধরনের একজন লোক দিয়ে আহ্বায়ক কমিটি করা হয়েছে, যা ন্যাক্কারজনক। এই কমিটির বিরুদ্ধে আমাদের লাগাতার কর্মসূচি অব্যাহত রাখা হবে। যতক্ষণ না এই কমিটি বাতিলের ঘোষণা করা হয়।
পালং মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলাল উদ্দিন বলেন, ছাত্রদলের কমিটি নিয়ে বিদ্রোহ দেখা দিয়েছে। এই কমিটি পুনর্গঠনের জন্য কিছু টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করা হয়। আমরা এবং সেনাবাহিনী খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে এসে তাদেরকে কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের জন্য বলা হয়েছে। যাতে সড়কে চলাচলকারীদের ভোগান্তি না হয় সেজন্য তাদের সড়কটি ছেড়ে দিতে বলা হলে তারা সড়ক ছেড়ে দেন।
গতকালের দুই পক্ষের সংঘর্ষে ঘটনায় মামলা হয়েছে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, গতকাল দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষই অভিযোগ দায়ের করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।