1. numanashulianews@gmail.com : kazi sarmin islam : kazi sarmin islam
  2. islamkazisarmin@gmail.com : newstv : Md newstv
  3. admin@newstvbangla.com : newstvbangla : Md Didar
রমজানে খাদিজা (রা.) এর ইন্তেকালে যেভাবে ভেঙ্গে পড়েন মহানবী (সা.) - NEWSTVBANGLA
বুধবার, ০২ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:২০ পূর্বাহ্ন

রমজানে খাদিজা (রা.) এর ইন্তেকালে যেভাবে ভেঙ্গে পড়েন মহানবী (সা.)

প্রতিনিধি

খাদিজাতুল কোবরা (রা.) ছিলেন মহানবী হজরত মুহাম্মাদ (সা.)-এর প্রথম স্ত্রী এবং নারী-পুরুষের মধ্যে প্রথম ইসলাম গ্রহণকারী। তিনি ছিলেন নবীজির (সা.) সবচেয়ে বড় আশ্রয়, সান্ত্বনা ও সহযোগী। তাঁর ইন্তেকাল ছিল রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর জীবনে এক গভীর শোকের মুহূর্ত।

খাদিজাতুল কোবরা (রা.) এর জন্ম ও পরিবার
খাদিজা বিনতে খুয়াইলিদ (রা.) কুরাইশ বংশের একজন সম্ভ্রান্ত নারী ছিলেন। তাঁর পিতার নাম খুয়াইলিদ ইবনে আসাদ এবং মায়ের নাম ফাতিমা বিনতে যায়েদ। তিনি সততা, ন্যায়পরায়ণতা ও বুদ্ধিমত্তার জন্য বিখ্যাত ছিলেন।

বিবাহ ও দাম্পত্য জীবন

খাদিজাতুল কোবরা (রা.) নবীজির (সা.) এর সততা ও বিশ্বস্ততায় মুগ্ধ হয়ে তাকে বিয়ে করেন। তখন নবীজির বয়স ছিল ২৫ বছর এবং খাদিজা (রা.) ছিলেন ৪০ বছর বয়সী এক ধনী ব্যবসায়ী। তাঁদের দাম্পত্য জীবন ছিল ভালোবাসা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার অনন্য দৃষ্টান্ত।
এই দাম্পত্য থেকে তাঁদের ছয়টি সন্তান জন্মগ্রহণ করে, যার মধ্যে কাসিম, আবদুল্লাহ (তাইয়্যিব ও তাহির নামে পরিচিত), জয়নব, রুকাইয়া, উম্মে কুলসুম এবং ফাতিমা (রা.) ছিলেন।

ইসলামের জন্য খাদিজা (রা.) এর ত্যাগ ও অবদান
খাদিজা (রা.) ছিলেন প্রথম ইসলাম গ্রহণকারী নারী। নবুয়তের শুরুতেই তিনি নির্দ্বিধায় নবীজির (সা.) ওপর ঈমান আনেন, সর্বদা তাঁকে সহায়তা করেন। নবুয়তের প্রথম দিকে মক্কার কাফেরদের অত্যাচার যখন তীব্র ছিল, তখন খাদিজা (রা.) নিজের সম্পদ ব্যয় করে নবীজিকে (সা.) ও মুসলিমদের রক্ষা করতেন।

নবীজির চাচা আবু তালিবের মৃত্যুর দু-মাস পর, অন্য মতে তিন দিন পর, উম্মুল মুমিনিন খাদিজাতুল কুবরা রা. মৃত্যুমুখে পতিত হন। তার মৃত্যু নবুওয়াতের ১০ম বর্ষের রমজান মাসে হয়। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৫ বছর। রাসুলুল্লাহ তখন অতিবাহিত করেছিলেন তার জীবনের ৫০তম বছর।
খাদিজা (রা.) হিজরতের প্রায় তিন বছর আগে, নবুওয়াতের দশম বছরে (৬১৯ খ্রিস্টাব্দে) ইন্তেকাল করেন। এই বছর ইসলামের ইতিহাসে আমুল-হুযন বা শোকের বছর নামে পরিচিত, কারণ এই বছরেই নবীজির (সা.) প্রিয় চাচা আবু তালিবও ইন্তেকাল করেন।

ইন্তেকালের কারণ

মক্কার কাফেরদের অবরোধের ফলে মুসলিমরা দীর্ঘ তিন বছর শিবে আবু তালিবে কঠিন কষ্টের মধ্যে ছিলেন। খাদিজা (রা.)-এর বয়সও তখন প্রায় ৬৫ বছর হয়েছিল। এই দীর্ঘ কষ্ট, খাদ্যাভাব ও শারীরিক দুর্বলতার কারণে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং পরবর্তীতে ইন্তেকাল করেন।

ইন্তেকালের স্থানে ও জানাজা

খাদিজা (রা.) তাঁর নিজ বাড়িতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। রাসূলুল্লাহ (সা.) স্বয়ং তাঁর কবর খনন করেন, অতঃপর তাঁকে মক্কার জন্নাতুল মুআল্লা কবরস্থানে দাফন করা হয়। ইসলামের ইতিহাস অনুযায়ী, তখনও জানাজার নামাজের বিধান নাজিল হয়নি, তাই রাসূলুল্লাহ (সা.) তাকে জানাজা ছাড়াই দাফন করেন।
খাদিজা (রা.) এর ইন্তেকালের পর নবীজির (সা.) শোক

খাদিজা (রা.)-এর মৃত্যু রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর জীবনে এক গভীর শোকের মুহূর্ত নিয়ে আসে। তিনি খাদিজার (রা.) সম্পর্কে বলেন—
তিনি আমার প্রতি ঈমান এনেছিলেন, যখন মানুষ আমাকে অস্বীকার করেছিল। তিনি আমাকে সাহায্য করেছিলেন, যখন অন্যরা আমাকে ত্যাগ করেছিল।‌ (আহমদ, মুসনাদ)

নবীজি (সা.) আজীবন খাদিজা (রা.)-এর স্মৃতি লালন করেছেন। এমনকি অনেক বছর পরও তিনি খাদিজা (রা.)-এর বন্ধুদের প্রতি সম্মান দেখাতেন এবং খাদিজার (রা.) নাম উচ্চারণ করলে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়তেন।

খাদিজাতুল কোবরা (রা.) ছিলেন ইসলামের এক অনন্য দৃষ্টান্ত, যাঁর ভালোবাসা, ত্যাগ ও ঈমান আমাদের জন্য শিক্ষার আলো। তাঁর ইন্তেকাল নবীজির (সা.) জন্য ছিল এক গভীর বেদনার ঘটনা, যা ইসলামের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হয়ে আছে। আল্লাহ তাঁকে জান্নাতুল ফিরদাউস দান করুন এবং আমাদের তাঁর জীবন থেকে শিক্ষা গ্রহণের তৌফিক দান করুন।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2015
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: রায়তাহোস্ট