প্রাপ্ত বয়স্ক, সামর্থবানদের জন্য রমজান মাসের রোজা ফরজ। কেউ শরীয়ত নির্ধারিত কোনো কারণে রমজানের রোজা রাখতে না পারলে পরবর্তীতে এর কাজা আদায় করতে হবে। রমজানের কাজা রোজা শুধু রমজানের কাজা হিসেবেই আদায় করতে হবে। এতে অন্য কোনো রোজার নিয়ত করা যাবে না। করলেও তা শুধু রমজানের কাজা রোজা হিসেবেই আদায় হবে।
রমজানের পরে শাওয়াল মাসের রোজা রাখা সুন্নত। মহানবী সা. নিজে এই রোজা রেখেছেন, অন্যদেরও রাখতে উৎসাহিত করেছেন।
শাওয়ালের ছয় রোজার ফজিলত বর্ণনা করে আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, যারা রমজানে রোজা পালন করবে এবং শাওয়ালে আরও ছয়টি রোজা রাখবে; তারা যেন সারা বছরই রোজা পালন করল। (সহিহ মুসলিম)
ইমাম নববি (রহ.) শাওয়ালের ছয় রোজার এ ফজিলতের তাৎপর্যের ব্যাপারে বলেছেন, রমজান মাস ২৯ বা ৩০ দিনের হয়ে থাকে। রমজানের ৩০টি রোজা ও শাওয়ালের ৬টি রোজা মিলে মোট ৩৬টি রোজা হয়। আল্লাহ তায়ালার কোরআনে বলেছেন,
مَنۡ جَآءَ بِالۡحَسَنَۃِ فَلَهٗ عَشۡرُ اَمۡثَالِهَا
যে সৎকাজ নিয়ে এসেছে, তার জন্য হবে তার দশ গুণ। (সুরা আনআম: ১৬০)
এ হিসেবে ৩৬টি রোজায় ১০ গুণ সওয়াব পেলে ৩৬০ দিন বা পুরো বছর রোজা রাখার সওয়াব পাওয়া যায়।
কেউ পুরো বছর রোজার ফজিলত পেতে শাওয়াল মাসে রোজা রাখতে চাইলে তাকে শাওয়ালের রোজা আলাদা রাখতে হবে। রমজানের কাজা রোজার সঙ্গে এই রোজার নিয়ত করা যাবে না।
কেউ চাইলে টানা ৬ দিনে শাওয়ালের রোজা পালন করতে পারবেন, আবার একাধারে রাখতে না পারলে বিরতি দিয়ে দিয়ে রাখতে পারবেন। যেমন, একদিন রেখে আরেকদিন বিরতি দিয়ে এভাবে রাখতে পারবেন।
কারো কাজের চাপ বা ব্যস্ততা থাকলে তিনি একদিন রোজা রেখে আরেকদিন বিরতি নেওয়ার পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারেন। এভাবেই দুই সপ্তাহ সময় নিয়ে তার ৬টি রোজা পূর্ণ হয়ে যাবে।
এছাড়াও আরেকটি পদ্ধতি অবলম্বন করা যেতে পারে। তাহলো— প্রতি সপ্তাহের সোম-বৃহস্পতিবার নফল রোজা রাখা সুন্নত। অনেকেই সপ্তাহের এই দুইদিন রোজা রাখেন। যারা এই রোজা রাখেন, তারা এ সময় শাওয়ালের রোজার নিয়ত করে নিতে পারেন, এতে করে শাওয়ালের রোজাও আদায় হয়ে যাবে।
এর বাইরে অনেকে আইয়ামে বিজের (প্রতি আরবি মাসের ১৩, ১৪, ১৫ তারিখে হাদিসে বর্ণিত নফল রোজা।) রোজার আমল করে থাকেন। তারা এই রোজার সঙ্গে শাওয়ালের রোজার নিয়ত করতে পারেন। এবং আগে-পরে মিলিয়ে আরও তিন দিন রোজা রাখলেই সহজেই শাওয়ালের রোজা আদায় হয়ে যাবে।