সোমবার , ২৫শে আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ১০ই ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - শরৎকাল || ২রা রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে হত্যা, স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

প্রকাশিত হয়েছে- বুধবার, ২৮ মে, ২০২৫

ফরিদপুরে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে মারধর করে হত্যার দায়ে স্বামী আসাদ শেখ ওরফে বাচ্চু শেখকে (৪৩) মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছে।

বুধবার (২৮ মে) দুপুর ১টার দিকে ফরিদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক শামীমা পারভীন এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে পুলিশ প্রহরায় তাকে জেল হাজতে পাঠানো হয়।

আদালত সূত্র জানায়, ২০২২ সালের জুলাই মাসে ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার ভাটিকান্দি গ্রামের মৃত মতিয়ার শেখের মেয়ে শান্তা আক্তারের (২২) সঙ্গে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার কানাই মাতুব্বরেরবাড়ি গ্রামের ছাত্তার শেখের ছেলে আসাদ শেখের বিয়ে হয়। বিয়ের পর স্বামী-স্ত্রী দুজনই ফরিদপুর সদর উপজেলার অম্বিকাপুর ইউনিয়নের দিরাজতুল্লা মাতুব্বরের ডাঙ্গী এলাকায় ইদ্রিসের এগ্রো ফার্মে কর্মরত ছিলেন। শান্তা শ্রমিক হিসেবে এবং আসাদ ফার্মের সুপারভাইজার হিসেবে কাজ করতেন। তারা ফার্মের একটি আবাসিক কক্ষে বসবাস করতেন।

২০২২ সালের ২৬ মে বেলা ১১টার দিকে সেই আবাসিক কক্ষ থেকে শান্তার মৃতদেহ উদ্ধার করে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানা পুলিশ। ঘটনার পর থেকে আসাদ পলাতক ছিলেন। পরবর্তীতে ওই বছরের ২৮ অক্টোবর শান্তার মা জরিনা বেগম বাদী হয়ে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন করে হত্যা করার অভিযোগে আসাদ শেখকে একমাত্র আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. জাহাঙ্গীর আলম তদন্ত শেষে ২০২৩ সালের ১৬ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

মামলার রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে ফরিদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) গোলাম রব্বানী ভূইয়া বলেন, এই রায় যৌতুকের দাবিতে স্ত্রী নির্যাতন ও হত্যার বিরুদ্ধে এক সাহসী বার্তা। এর মাধ্যমে সমাজে নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে আইনের শক্তিশালী ভূমিকা প্রতিফলিত হলো।

তিনি আরও বলেন, আসামি আসাদের এটি ছিল তৃতীয় বিয়ে। এর আগে তার প্রথম স্ত্রীকেও হত্যা করা হয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। সেই ঘটনায় রাজবাড়ী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে তার বিরুদ্ধে আরেকটি হত্যা মামলা বিচারাধীন রয়েছে।