বুধবার , ২রা এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ১৯শে চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - বসন্তকাল || ৪ঠা শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

ম্যারাডোনার সাবেক নিরাপত্তারক্ষী গ্রেপ্তার

প্রকাশিত হয়েছে- বুধবার, ২৬ মার্চ, ২০২৫

আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি দিয়েগো ম্যারাডোনার প্রয়াণের ঘটনাক্রমটা নিঃসন্দেহে বেদনার। কিন্তু তার মৃত্যুর পেছনে দায়ী ‘অবহেলা’র অভিযোগে চলমান বিচারপ্রক্রিয়ায় যেসব তথ্য সামনে আসছে, তা এই ফুটবল ম্যাজিশিয়ানের অনুরাগীদের হতাশা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। এতদিন ম্যারাডোনার চিকিৎসক দলের ৭ সদস্যকে বিচারপ্রক্রিয়ায় মুখোমুখি করা হয়েছিল। এবার নতুন করে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা জুলিও সিজার কোরিয়াকে।

আর্জেন্টিনার বুয়েন্স আয়ার্সে সান ইসিদ্রোর তৃতীয় অপরাধ আদালতে চলছে ম্যারাডোনার মৃত্যুতে অবহেলার অভিযোগে করা মামলার বিচার। সেখানে গতকাল (মঙ্গলবার) এক শুনানিতে অভিযোগ আনা হয় আলবিসেলেস্তে কিংবদন্তির সাবেক এক নিরাপত্তাকর্মীর বিরুদ্ধে। প্রসিকিউটর প্যাট্রিসিও ফেরারির অভিযোগ– মিথ্যা স্বাক্ষ্য দিয়েছেন জুলিও সিজার এবং তার দেওয়া তথ্যে গড়মিল রয়েছে।

পাবলিক প্রসিকিউটর অফিসের আবেদনের ভিত্তিতে বিচারক ‘মিথ্যা স্বাক্ষ্য দেওয়ার’ অভিযোগ আমলে নেওয়ার আদেশ দেন। পরে আদালত থেকেই জুলিও সিজারকে হ্যান্ডকাপ পরিয়ে কারাগারে নেওয়া হয়। সংবাদ সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, ম্যারাডোনার সাবেক এই নিরাপত্তারক্ষী আপাতত কারাগারে থাকবেন, এরপর তাকে মিথ্যা স্বাক্ষ্য দেওয়ার বিষয়ে অভিযুক্ত করে বিচারের মুখোমুখি করা হবে। সেখানে অপরাধ প্রমাণিত হলে ৫ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে জুলিও সিজারের।

ম্যারাডোনাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়ার পথে অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত তার নিউরোসার্জন লিওপোল্ডো লুক। স্বাক্ষ্যপ্রমাণে তার সঙ্গে কখনোই কথা হয়নি বলে উল্লেখ করেছিলেন জুলিও সিজার। তবে ম্যারাডোনা পরিবারের আইনজীবি ওই দুই পক্ষের মাঝে বার্তা আদান-প্রদানের কিছু প্রমাণ হাজির করেছেন। এ ছাড়াও অভিযুক্তদের ‘স্মরণ করতে পারছেন না’ বলেও উল্লেখ করেছিলেন সাবেক ওই নিরাপত্তাকর্মী।

ম্যারাডোনার পরিবারের আইনজীবীদের দাবি– লুক ও জুলিও সিজার কোরিয়ার মধ্যকার কথোপকথন হয়েছে ম্যারাডোনার মৃত্যুর পর। যেখানে তারা বারবিকিউ খাওয়ার ফাঁকে মিলিত হন। ওই প্রমাণ দেখানোর পরই সাবেক এই নিরাপত্তাকর্মীকে ‘স্পষ্টভাষী মিথ্যুক’ উল্লেখ করে গ্রেপ্তারের আবেদন জানানো হয়। এর আগে ম্যারাডোনার চিকিৎসায় জড়িত সাতজনকে তার মৃত্যুতে ইচ্ছাকৃত কিছু কার্যক্রমের অভিযোগ তুলে মামলায় অন্তর্ভূক্ত করা হয়। বলা হচ্ছে– সেসব কাজ করলে ম্যারাডোনা ক্রমাগত মৃত্যুর দিকে ধাবিত হবেন বলে তারা জানতেন!

প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ২৫ নভেম্বর ৬০ বছর বয়সী ম্যারাডোনাকে নিজ ঘরের বিছানায় মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। মৃত্যুর আগে তিনি মস্তিষ্কের অস্ত্রোপচারের পরে বাড়িতেই বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। তার মৃত্যুর ঘটনায় ব্যাপক আলোড়ন তৈরি হয় বিশ্বজুড়ে। এরপর তার চিকিৎসকসহ আটজনের বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ ওঠে। পরে ওই আট চিকিৎসক আদালতে হাজির হয়ে নিজেদেরকে নিরাপরাধ দাবি করেন। তখন প্রসিকিউটররা ম্যারাডোনাকে ‘অবহেলা’ ও চিকিৎসায় ‘ঘাটতি’র অভিযোগ তোলেন।