মান্দায় বাঁশের পাতা কাটা নিয়ে বিরোধে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ; আহত-২
মান্দা (নওগাঁ) প্রতিনিধিঃ নওগাঁর মান্দায় বাঁশের পাতা কাটাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের মারপিটে একই পরিবারের স্বামী-স্ত্রীসহ ২ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
আহতরা হলেন, মৈনম গ্রামের সামসুল আলমের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (৪৩) এবং জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী মরিয়ম বেগম (২৮)। উপজেলার মৈনম ইউনিয়নের মৈনম গ্রামে (ডাকাতের মোড়ের পার্শ্বে) এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় প্রতিকার চেয়ে শনিবার (২৭ জানুয়ারি) রাতে ১০ জনের বিরুদ্ধে মান্দা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভূক্তভোগী জাহাঙ্গীর আলম।
অভিযোগসূত্রে জানাগেছে, মৈনম মৌজার ১১২৬ নং হাল খতিয়ানের ৬৪০৫ ও ৬৪৪১ নং দাগে পৈত্রিকসূত্রেপ্রাপ্ত জমিগুলো জাহাঙ্গীর আলম গংদের দখলে রয়েছে। অথচ, মৃত আব্দুল মোল্লার ছেলে জালাল হোসেনসহ অন্যান্যরা তাদের পূর্বপুরুষের নামে একটি ভূয়া এস.এ খতিয়ান তৈরী করে সম্প্রতি একটি বাটোয়ারা ও ১৪৪/১৪৫ ধারার মামলা দায়ের করেন। সম্প্রতি ১৪৪/১৪৫ এর মামলাটি নথিজাত করে তাদের পক্ষে রায় দেয়া হয়েছে।
প্রতিপক্ষের লোকজন নিজেরা বাটোয়ারা মামলা দায়ের করার পর সেই মামলা অদ্যবধি চলমান থাকাবস্থায় আদালতের আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ভূয়া কাগজমূলে জোরপূর্বকভাবে বিবাদমান জমিগুলো জবর দখল করার পায়তারা চালিয়ে যাচ্ছেন। এরই জের ধরে গত শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে বিবদিমান জমির বাঁশ ঝাড়ে বাঁশের পাতা কাটাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের লোকজনের মারপিটে জাহাঙ্গীর আলম এবং তার স্ত্রীসহ মোট ২ জন আহত হন। আহতদের উদ্ধার করে ওইদিনই মান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়। এরপর চিকিৎসা গ্রহণ শেষে তারা ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি ফিরে যান। বাড়িতে যাওয়ার পর প্রতিপক্ষের লোকজনের অব্যাহত হুমকির কারণে জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছেন বলে জানিয়েছেন আহতরা।
এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের করা সত্ত্বেও রবিবার (২৮ জানুয়ারি) সকালে প্রতিপক্ষের লোকজন বিবাদমান জমির বরই গাছের বরই নামানোর সময় লাঠিসোটা নিয়ে এসে বাধা প্রদান করেন এবং বাড়ির ভিতর অবরুদ্ধ করে রাখেন। এমতাবস্থায় কোন উপায় না পেয়ে থানা পুলিশের স্মরনাপন্ন হন ভূক্তভোগী পরিবারের লোকজন। কিন্ত একাধিকবার যোগাযোগ করার পরেও পুলিশ কোন ব্যাবস্থা গ্রহণ না করায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভূক্তভোগীরা।
এতে ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলেও জানান তারা। তারা আরও জানান যে, প্রতিপক্ষের লোকজন নিজেদের আত্মরক্ষার্থে বিষয়টিকে ভিন্নখাতে প্রবাহের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এরই ধারাবাহিকতায় একটি প্রভাবশালী মহলের ইন্ধনে মিথ্যা ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ দায়ের করেন। যার কোন ভিত্তি নেই। এর থেকে পরিত্রাণ পেতে স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগীতা কামনা করেন তারা।
এ বিষয়ে প্রতিপক্ষের লোকজন জানান যে, মধ্য মৈনম মৌজার ৩৪৮ নং খতিয়ানের ৬৪৪১, ৬৪০৫ দাগে ২ একর ৪৭ শতাংশ জমি নিয়ে মধ্য মৈনম গ্রামের সামসুর সরদারের ছেলে জাহাঙ্গীর সরদার গংদের সঙ্গে তাদের দীর্ঘদিন যাবৎ বিরোধ চলে আসছিলো। তাদের দাবি যে, ২০ এবং ৬২ সালের খতিয়ানে তাদের অংশ রয়েছে। অথচ, ৭২ সালের রেকর্ডে আর এস খতিয়ানে ভূলক্রমে বিবাদীদের নাম অন্তর্ভূক্ত হয়। পরবর্তীতে তারা বিষয়টি জানতে পেরে আদালতের সরনাপন্ন হয়ে একটি বাটোয়ারা (রেকর্ড সংশোধনী) ও একটি ১৪৪/১৪৫ ধারায় নিষেধাজ্ঞার মামলা দায়ের করেন। তাদের দাবি যে, উচ্চ আদালতে বাটোয়ারা মামলা চলমান থাকায় নিম্ন আদালতের মামলাটি নথিজাত করা হয়েছে। তবে, বর্তমানে বাটোয়ারা মামলা চলমান রয়েছে।
এ ব্যাপারে মান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোজাম্মেল হক কাজী বলেন, এ ঘটনায় উভয় পক্ষের অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।