ভারতে ফের শুরু হয়েছে প্রাণঘাতী রোগ করোনার প্রাদুর্ভাব। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, বেশ কয়েকটি রাজ্যে করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি পরিলক্ষিত হচ্ছে এবং রোববার চার জনের মৃত্যু হয়েছে এই রোগে।
স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, ভারতে বর্তমানে করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৩ হাজার ৯৬১ জন। আর দৈনিক আক্রান্তের হিসেবে রোববার সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে- ৪৪ জন। রাজ্যে বর্তমানে করোনায় আক্রান্ত রোগীর মোট সংখ্যা ৩৩১ জন।
মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা অবশ্য সবচেয়ে বেশি কেরালাতে। রাজ্য প্রশাসনসূত্রে জানা গেছে, ভারতের সর্বদক্ষিণের এই রাজ্যটিতে বর্তমানে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৪৩৫ জন। রোববার কেরালায় করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ৩৫ জন।
এছাড়া রোববার দিল্লিতে ৪৭ জন (মোট আক্রান্ত ৪৮৩ জন) এবং মহারাষ্ট্রে ২১ জন (মোট আক্রান্ত ৫০৬ জন) করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন।
যে কারণে ভারতে বাড়ছে করোনা
ভারতের চিকিৎসা গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্চের (আইসিএমআর) মহাপরিচালক ড. রাজীব বাহেল দেশটির জাতীয় দৈনিক বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেছেন, ভারতে বর্তমানে করোনা ছড়িয়ে পড়ার মূল কারণ ওমিক্রন ভাইরাসের দু’টি সাব-ভ্যারিয়েন্ট- এনবি.১.৮.১ এবং এনএফ.৭। এই দু’টি সাব-ভ্যারিয়েন্টই অত্যন্ত দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং বর্তমানে যারা আক্রান্ত হচ্ছেন— তাদের বেশিরভাগই দু’টি সাব-ভ্যারিয়েন্টের যেকোনো একটিতে আক্রান্ত।
“বর্তমানে বিভিন্ন রাজ্যে যারা করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন, তাদের নমুনা পরীক্ষা করে মোট ৬টি ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। এগুলো হলো এলএফ.৭, এনবি.১.৮.১, এক্সএফজি, জেএন.১, এনএফ.৭ এবং এনবি.১.৮.১। এই ছয় ভাইরাসের মধ্যে সবচেয়ে কমন এনবি.১.৮.১ ও এনএফ.৭। উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর রোগীদের অধিকংশই এই দুই সাব-ভ্যারিয়েন্টের কোনো একটিতে আক্রান্ত,” বলেছেন ড. রাজীব বাহেল।
গৃহীত পদক্ষেপ
ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য এবং মেডিকেল গবেষণা বিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়ুশের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী প্রতাপরাও যাদব টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেছেন, “আমি এবং কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও আয়ুষ মন্ত্রণায়ের কর্মকর্তারা নিবিড়ভাবে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করছি। বিভিন্ন রাজ্য সরকারের কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করা হচ্ছে। করোনা মহামারির সময় যেসব অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছিল সেগুলো ফের সক্রিয় করা হচ্ছে। আইসিইউতে শয্যার সংখ্যা বাড়াতে সব রাজ্যকে নোটিশ পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে আমাদের যে প্রস্তুতি, তাতে করোনার যে কোনো বড় ঢেউ আমরা সামাল দিতে পারব।”
সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া, বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড