1. numanashulianews@gmail.com : kazi sarmin islam : kazi sarmin islam
  2. islamkazisarmin@gmail.com : newstv : Md newstv
  3. admin@newstvbangla.com : newstvbangla : Md Didar
বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস আগামীকাল - NEWSTVBANGLA
রবিবার, ১১ মে ২০২৫, ০৫:০৯ অপরাহ্ন

বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস আগামীকাল

প্রতিনিধি

 আগামীকাল বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস। বিকল্প খাদ্য ফসল উৎপাদন ও বিপণনের সুযোগ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং টেকসই ও পুষ্টিকর ফসল চাষে তামাক চাষিদের উৎসাহিত করতে এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘গ্রো ফুড, নট টোব্যাকো’।
তামাক উৎপাদনে কোম্পানির কূটকৌশল উন্মোচনও এবারের বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবসের একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য। ‘তামাক নয়, খাদ্য ফলান’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে  বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে দিবসটি উদযাপিত হবে। দিবসটি উদযাপন উদযাপন উপলক্ষে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রনালয়ের স্বাস্থ্য বিভাগের আওতাধীন জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রন সেল (এনটিসিসি) প্রতিবছরের মত এবারও যথাযথ গুরুত্বের সাথে দিবসটি উদযাপনের উদ্যোগ গ্রহন করেছে। এ লক্ষ্যে এদিন সকাল ৮ টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যায়য়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে থেকে একটি বর্ণঢ্য শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়েছে।
তামাক চাষ কৃষকের স্বাস্থ্য, মাটির স্বাস্থ্য এবং সার্বিকভাবে গোটা জনস্বাস্থ্য ও পৃথিবীর স্বাস্থ্যের ক্ষতি সাধন করে। দীর্ঘমেয়াদে বৈশ্বিক প্রতিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং খাদ্য সংকট সৃষ্টিতেও ভুমিকা রাখে তামাক। বিশ্বব্যাপী ক্রমবর্ধমান খাদ্য সংকটের পিছনে সংঘাত-যুদ্ধ, জলবায়ু পরিবর্তন এবং কোভিড-১৯ মহামারির অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রভাবের পাশাপাশি তামাক চাষের একটি প্রভাব রয়েছে। বর্তমানে, পৃথিবীর ১২৫টিরও বেশি দেশের প্রায় ৪ মিলিয়ন হেক্টর জমিতে তামাক চাষ হয় এবং শীর্ষ তামাক উৎপাদনকারী দেশগুলোর অধিকাংশই নিম্ন ও মধ্যম আয়ভুক্ত দেশ। অন্যদিকে পৃথিবীব্যাপী উৎকৃষ্ট মানের জমি ক্রমবর্ধমানহারে তামাকচাষে ব্যবহৃত হওয়ায় খাদ্য ফসলের জমি ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে। এসব জমি খাদ্যফসল ফলানোর কাজে ব্যবহার করা গেলে লক্ষ লক্ষ মানুষের খাদ্য চাহিদা পুরণের পাশাপাশি খাদ্য নিরাপত্তার সংকট মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা সম্ভব।
বাংলাদেশে আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ খুবই কম, মাত্র ৩ কোটি ৭৬ লক্ষ ৭ হাজার একর। অথচ তামাক চাষে ব্যবহৃত মোট জমির পরিমাণের দিক থেকে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান ১৩তম।  বিশ্বের মোট তামাকের ১.৩ শতাংশই উৎপাদিত হয় বাংলাদেশে।  তামাকচাষের কারণে খাদ্য ফসলের জমি ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে। বাংলাদেশে রবি মৌসুমের প্রধান খাদ্য ফসলগুলোর মধ্যে বোরো, গম এবং আলু অন্যতম এবং এ মৌসুমেই তামাক চাষ হয়ে থাকে।
অন্য দিকে বাংলাদেশে তামাকজনিত অসুস্থতায় প্রতি বছর ১ লক্ষ ৬১ হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করে। দেশে মৃত্যু এবং পঙ্গুত্বের প্রধান চারটি কারণের একটি তামাক।  তামাকজনিত রোগের চিকিৎসা ব্যয় ও কর্মক্ষমতা হ্রাসের আর্থিক ক্ষতি প্রায় ৩০ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা।  তামাকের এসব ক্ষতিকর দিক বিবেচনা করেই তামাক নিয়ন্ত্রণকে জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টের অন্তর্ভুক্ত (টার্গেট ৩এ) করা হয়েছে।  কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে তামাকের সরবরাহ এবং চাহিদা কমিয়ে আনাই হতে পারে তামাকের নেতিবাচক প্রভাব কাটিয়ে ওঠার সঠিক উপায়।
বাংলাদেশে সাম্প্রতিক এক গবেষণায়  দেখা গেছে, তামাক চাষে অতিরিক্ত যে লাভের কথা প্রচার করা হয়, তার প্রায় সবটাই বানোয়াট। আপাতদৃষ্টিতে তামাক চাষে বেশি আয় উপার্জন হলেও এই আয় থেকে পারিবারিক শ্রমের পারিতোষিক, জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত নিজস্ব গাছের বা কাঠের দাম, পরিবেশের ক্ষতি, স্বাস্থ্য ব্যয় ইত্যাদি বাদ দিলে তামাক চাষে লাভের বদলে ক্ষতি হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, তামাক চাষে নেট সোশ্যাল রিটার্ন ঋণাত্মক, প্রতি একরে ক্ষতি ৯১৬.১১ ডলার।
টোব্যাকো অ্যাটলাসের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের প্রায় ৩১ শতাংশ বন নিধনের পেছনে তামাক চাষ দায়ী।  গবেষণায় দেখা গেছে কক্সবাজার ও বান্দরবান জেলার তিনটি উপজেলায় তামাকপাতা শুকানোর (কিউরিং) কাজে এক বছরেই প্রায় ৮৫ হাজার মেট্রিক টন জ্বালানি কাঠ ব্যবহৃত হয়েছে।  স্থানীয় বন থেকে এইসব কাঠ সংগ্রহ করায় পাহাড়গুলো বৃক্ষহীন হয়ে পড়ছে এবং সেখানকার অধিবাসীরা আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধ্বসের উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। এছাড়া তামাক চাষে ব্যবহৃত অতিরিক্ত কীটনাশক ও সার বৃষ্টির পানিতে ধুয়ে নিকটস্থ জলাশয়ে মিশে মৎস্য উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
তামাক বিরোধী সংগঠন প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের বলেন, তামাক চাষের ক্ষতি থেকে দৃষ্টি সরানোর জন্য তামাক কোম্পানিগুলো প্রায়শই নিজেদের অত্যন্ত পরিবেশ বান্ধব হিসেবে উপস্থাপন করে। তথাকথিত সামাজিক দায়বদ্ধতামূলক কর্মসূচির (সিএসআর) মাধ্যমে তামাক কোম্পানিগুলো তাদের ঘটানো ক্ষতি আড়াল করে এবং দায় এড়ানোর চেষ্টা করে।
তিনি বলেন, তামাক জনস্বাস্থ্য , পরিবেশ, খাদ্য নিরাপত্তা ও অর্থনীতির জন্য হুমকি। তামাক নিয়ন্ত্রন আইন শক্তিশালী করনের মাধ্যমেই এসব ক্ষয়ক্ষতি এড়ানোর পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনের ঘোষনা বাস্তবায়ন করা সম্ভব।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2015
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: রায়তাহোস্ট