রবিবার , ২৪শে আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ৯ই ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - শরৎকাল || ১লা রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

বিক্রয়.কমে পণ্য বিক্রির নামে প্রতারণা, চক্রের চার সদস্য গ্রেফতার

প্রকাশিত হয়েছে- বুধবার, ১০ মে, ২০২৩

বিক্রয়.কমে মোবাইল ফোন, বিদেশি পণ্য, পুরানো গাড়িসহ নানা সামগ্রীর ছবিসহ চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে বিক্রির নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একটি চক্র। এজন্য তারা নিজেদের পুলিশ হিসেবে পরিচয় দিত। ডেলিভারি দেয়ার কথা বলে নেয়া হতো অগ্রিম টাকা। এরপরই হয়ে যেতো লাপাত্তা। গ্রামের সাধারণ মানুষের এনআইডি দিয়ে বিকাশ ও নগদ একাউন্ট খুলেও প্রতারণা করতো তারা। এই চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপির সিটি সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ডিভিশনের সাইবার টেরোরিজম ইনভেস্টিগেশন টিম।

রাজধানীর রূপনগরের সামিম মোল্লা বিক্রয়.কম-এ একটি টয়োটা গাড়ির বিজ্ঞাপন দেখে গাড়িটি কিনতে চাইলে প্রতারক মোবাইলের মাধ্যমে জানায়, গাড়িটি সুনামগঞ্জে আছে এবং বায়না হিসেবে ৪০০০০ টাকা দাবি করে। সামিম মোল্লাকে গাড়িটি কেনার জন্য দ্রুত সুনামগঞ্জে যেতে বলে। সামিম মোবাইল ব্যাংকিং এবং ডাচবাংলা ব্যাংকের মাধ্যমে অগ্রিম অর্থ প্রদান করে সুনামগঞ্জ গিয়ে প্রতারকদের ফোন নম্বরগুলো বন্ধ পান এবং বুঝতে পারেন যে তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন।

একই অবস্থা ঢাকার খিলক্ষেতের সজীব মিয়ার। তিনি বিক্রয়.কম থেকে মোবাইল ফোন অর্ডার দিলে বিক্রেতা তার কাছে বিকাশে অগ্রিম টাকা চান। পরে টাকা নিয়ে মোবাইল ফোনটি বাসার ঠিকানায় ডেলিভারি দেয়া হয়েছে বলে জানায়। প্রমাণ স্বরূপ সুন্দরবন কুরিয়ারের একটি চালানও পাঠানো হয়। কিন্তু মাস পেরিয়ে গেলেও ফোনের খোঁজ মেলে না। হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে যায় প্রতারকদের ফোন নম্বরগুলো। এমনকি বিক্রয় ডটকম থেকেও লাপাত্তা হয়ে যায় তাদের তথ্য।

তারা সবাই একই প্রতারকের কাছ থেকে পণ্য কিনতে গিয়ে ফাঁদে পড়েন। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, প্রতারকদের একজন নিজেকে পুলিশ সদস্য পরিচয় দিয়ে আইডি কার্ডও দেখাতো।

কয়েকমাস ধরে অনেকের সঙ্গে প্রতারণার পর অবশেষে চক্রের চার সদস্য মোঃ রফিকুল ইসলাম বাপ্পি, নাজমুস সাকিব, রাশেদ মিয়া ওরফে রাকিব ও মোঃ আদিল হোসেনকে গ্রেফতার করে সিটি সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ডিভিশনের সাইবার টেরোরিজম ইনভেস্টিগেশন টিম। রফিকুল ইসলাম বাপ্পিকে গত শুক্রবার কুড়িগ্রামের রাজারহাট থেকে ও তার দেওয়া তথ্য মতে গত সোমবার রংপুরের কোতয়ালী থানা এলাকা থেকে তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় তাদের হেফাজত থেকে ৩টি মোবাইল ফোন ও ১৭টি সিমকার্ড উদ্ধার করা হয়।

সাইবার টেরোরিজম ইনভেস্টিগেশনের টিম লিডার আরিফুল হোসেইন তুহিন বলেন, চক্রটি ভুয়া ফোন নম্বর, ই-মেইল এবং ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানে ভুয়া আইডি খুলে প্রতারণা করতো। সুন্দরবন কুরিয়ারের মতো প্রতিষ্ঠান থেকে টাকার বিনিময়ে খালি চালানপত্রের বই কিনে আনতো। এসব ঘটনায় কুরিয়ার সার্ভিস ও ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর দায় রয়েছে। তাই ঝুঁকি এড়াতে পণ্য হাতে পাওয়ার আগে টাকা পরিশোধ না করার পরামর্শ দেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।