রবিবার , ২৪শে আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ৯ই ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - শরৎকাল || ১লা রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

বাহার ফিরলেন, না ফেরার দেশে মা-স্ত্রী-সন্তানসহ ৭ স্বজন

প্রকাশিত হয়েছে- বুধবার, ৬ আগস্ট, ২০২৫

আড়াই বছর পর দেশে ফেরার আনন্দে ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ‘স্বপ্ন যাবে বাড়ি আমার’— লিখে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন ওমান প্রবাসী মো. বাহার উদ্দিন। তাকে বিমানবন্দরে আনতে যান তার স্ত্রী কবিতা, মেয়ে মীম, মা মুরশিদা বেগমসহ স্বজনেরা। কিন্তু বাহার দেশে ফিরলেও মুহূর্তেই তার স্বপ্ন রুপ নিয়েছে ভয়াবহ এক দুঃস্বপ্নে। পথে চালক ঘুমিয়ে পড়ায় তাদের বহনকারী মাইক্রোবাসটি খালে পড়ে প্রাণ হারিয়েছেন বাহারের মা-স্ত্রী-সন্তানসহ পরিবারের সাতজন।

বুধবার (৬ আগস্ট) ভোরে বেগমগঞ্জ উপজেলার আলাইয়াপুর ইউনিয়নের জগদীশপুর এলাকায় চৌমুহনী-লক্ষ্মীপুর আঞ্চলিক মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার উত্তর জয়পুর ইউনিয়নের চৌপল্লী এলাকার কাশারি বাড়ির ওমান প্রবাসী মো. বাহার উদ্দিনের স্ত্রী কবিতা আক্তার (২৪), মেয়ে মীম আক্তার (২), মা মুরশিদা বেগম (৫০), নানী ফয়জুন নেছা (৭০), ভাতিজি রেশমা আক্তার (৯), লামিয়া আক্তার (৮) এবং বড় ভাইয়ের স্ত্রী লাবনী আক্তার (২৫)।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী শাহাদাত হোসেন ফাহিম বলেন, ভোর ৫টা ১৫ মিনিটের দিকে হঠাৎ দ্রুত গতিতে মাইক্রোবাসটি খালের পানিতে নেমে যায়। এরপরই চালক খালের পানি থেকে বের হয়ে পালিয়ে যায়। বাহার উদ্দিনসহ পাঁচজন গ্লাস ভেঙে বের হয়ে আসতে পারলেও বাকি সাতজন গাড়ির ভেতরে আটকা পড়ে। তারা প্রায় দুই ঘণ্টা পানির নিচে ছিল। আমরা ফায়ার সার্ভিসের কাছে ডুবুরি চাইলে তারা জানায়, এখানে ডুবুরি নেই। বেগমগঞ্জ ও মাইজদী থেকে দুটি ইউনিট এলেও হাইওয়ে পুলিশের রেকার দিয়ে গাড়িটি ওঠানোর পর মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়।

বাহার উদ্দিনের আত্মীয় মো. সুমন বলেন, কীভাবে এ শোক সহ্য করব জানি না। পুরো পরিবারটা শেষ। এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

চন্দ্রগঞ্জ হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোবারক হোসেন ভূঁইয়া বলেন, চালক ঘুমিয়ে পড়ায় গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খালে পড়ে যায়। চালকসহ গাড়িটিতে মোট ১৩ জন ছিল। চালক পালিয়ে গেলেও গাড়িটি জব্দ করা হয়েছে। মরদেহগুলো উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের নোয়াখালীর সহকারী পরিচালক মো. ফরিদ আহমেদ বলেন, আমাদের মাইজদী ও চৌমুহনী স্টেশন থেকে দুটি ইউনিট উদ্ধার কাজ চালিয়েছে। তারা ডুবুরি চেয়েছিল, কিন্তু আমাদের নিজস্ব ডুবুরি নেই। আমরা চাঁদপুর থেকে ডুবুরি দল আনলেও তার আগেই উদ্ধারকাজ শেষ হয়ে যায়।