1. numanashulianews@gmail.com : kazi sarmin islam : kazi sarmin islam
  2. islamkazisarmin@gmail.com : newstv : Md newstv
  3. admin@newstvbangla.com : newstvbangla : Md Didar
বারো রকমের মানুষ "মোহাম্মাদ রবিউল" - NEWSTVBANGLA
রবিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৫, ০১:৪০ অপরাহ্ন
শিরোনাম
ঢাকায় রাতে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে জুলাই বিপ্লব নতুনভাবে দেশ গঠনের সুযোগ করে দিয়েছে খালেদা জিয়াকে বাদ দিয়ে দেশের ইতিহাস লেখা যাবে না : চসিক মেয়র ‘হঠাৎ বিকট শব্দ, দৌড়ে গিয়ে দেখি বাড়ির ভেতরে আগুন আর কান্নাকাটি’ পরিবেশ দূষণমুক্ত চাইলে দূষণকারী শিল্পকারখানা বন্ধ করার আহ্বান না ফেরার দেশে নয়া দিগন্তের সাবেক সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন মাহিন সরকারের বিরুদ্ধে ৭.৫ কোটি টাকার ভুয়া গল্প, আসলেই কি ঘটেছে বেলকুচিতে রাতের মধ্যে যেসব এলাকায় ঝড় হতে পারে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতা হত্যা মামায় জাবি ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ললিপপ জনি কেরানীগঞ্জে এসি বিস্ফোরণ, একই পরিবারের ৪ জন হাসপাতালে

বারো রকমের মানুষ “মোহাম্মাদ রবিউল”

প্রতিনিধি

আমার বর্তমান যা বয়স তাতে গড় আয়ু হিসেব করলে অর্ধেক পার করে ফেলেছি। সামনে আছে বাকিটা সময়। এই নাতিদীর্ঘ জীবনে বিচিত্র মানুষের সন্ধান পেয়েছি। কেউ কেউ তো একদম জাদুঘরে রেখে দেওয়ার মতো। আবার পেয়েছি উল্লেখ করার মতো ভালো মানুষও। যাদের দেখলে নিজেকে অনেক ক্ষুদ্র মনে হয়। আজকের লেখাটি সব ধরনের মানুষ নিয়ে লেখা। বিভিন্ন মানুষের স্বভাব ও আচরণ পর্যবেক্ষণ করে সময় নিয়ে লেখা।

মানুষ তার স্বভাবের দাস। স্থান কাল পাত্র যতই বদলাক, উন্নত বা অবনতি ভালো বা মন্দ যেকোনো অবস্থায় মানুষ তার চিরাচরিত স্বভাবে অটল থাকে, সে তার স্বভাব থেকে বের হতে পারে না। আগে ভাবতাম উন্নত পরিবেশে মানুষ হয়তো বদলায়, নিজের ভেতরের ভুলগুলো অনুধাবন করে শোধরায় আর নিজের ভালো গুণগুলোর আরো প্রসার ঘটায়।

কিন্তু না সেই সংখ্যা খুবই নগন্য বা ধরার মধ্যে পড়ে না। মানুষ তার এই স্বভাবের কারণেই কখনো নন্দিত কখনো বা নিন্দিত। ছোটবেলায় শুনেছি মানুষ বারো রকমের। আসলেই কি তাই? মানুষ হতে পারে বারো রকম বা তেরো বা সতেরো! আজকে নিজের অভিজ্ঞতার আলোকে কিছু স্বভাবগত বৈশিষ্টর ওপর ভিত্তি করে বারো রকমের প্রকারভেদ করার চেষ্টা করলাম, কিছু বাদ পড়লে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাতে অনুরোধ রইলো। কারণ আমিও মানুষ, ভুল ত্রুটির উর্ধ্বে নই।

১. কিছু মানুষ আছেন দরবেশ লেভেলের ভোলেভালে ভেক ধরা। কিছুই জানে না, কিছুই বোঝে না কিন্তু সানি লিওনের ভিডিও ছাড়া এদের একদিনও চলে না। বাইরের মানুষদের জন্য জীবনও দিয়ে দিতে রাজি, টাকা-পয়সা তো কোনো ব্যাপারই না লাগলে শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গও দান করে দিতে রাজি। কিন্তু তবুও সবার কাছে ভালো হতে হবে, হোক না রাত কালো। দিনরাত ভালোর ভেক, বাসায় ফিরে ভাল্লুকের বেশ। তার বাড়ির মানুষরা তার অত্যাচারে আধমরা হয়ে বাঁচে নাকি মরে উপরওয়ালা ভালো জানেন কিন্তু এরা একদম এমনই থাকেন, লাগ ভেলকি লাগ দেখিয়ে কিছু বেকুবদেরও পটিয়ে ফেলেন।

২. কিছু মানুষ আছেন, তারা জন্মেছেন অন্যের ভুল ধরতে, অন্যের ভুল ধরার আগে তার সেটা নিয়ে কথা বলার বা ধরার যোগ্যতা তার আছে কি-না তা নিজেরাও জানে না, জানার চেষ্টা করে না। অন্যের যতো রকমের ভুল আছে, তাদের মুখস্ত কিন্তু তাকে যদি বলেন আপনার নিজের কোনো দোষ বা ভুল কি নেই! খুঁজে দেখেন তো? তারা একদম আকাশ থেকে পড়বেন, তাদের ভুল হয় কেমনে? তারা তো সদ্য ভূমিষ্ঠ শিশু, এখনি ওয়া ওয়া করে কান্না শুরু করবেন। তারা শুধুই উপদেশ আর পরামর্শ দেবেন, সর্বজ্ঞানী কিনা। ভুল সবই ভুল, এদের জীবনের পাতায় পাতায় যা লেখা সব ভুল।

৩. কিছু মানুষ আছেন, সবসময়ই হীনমন্যতায় ভোগেন, সব কিছু নিয়ে। সে চায় সবাই তাকে সম্মান করুক, কিন্তু নিজে কাউকেই সম্মান দিতে চায় না। অপরকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে কথা বলে, হতে চায় নেতা গোছের কিছু। সারাজীবনের শিক্ষাগত যোগ্যতা অতি হাস্যকরভাবে নিজের আকিকা দিয়ে রাখা নামের সামনে বসিয়ে দেয়! প্রায়ই নিজের বংশ মর্যাদা নিয়েও ঢাকঢোল পেটায়, জীবনে কাউকে দুই টাকার খাওয়ালে তিন টাকা খরচ করে সেটার প্রচার করে। প্রচন্ড মাত্রায় বৈষয়িক এবং হিংসা। কারো ভালো কিছু সহ্য হয় না। এসবই ওই যে হীনমন্যতা! সেখান থেকেই শুরু। এর শেষ কোথায় কেউ জানে না। লোক দেখানো ভাব-সাব চলতে থাকে এভাবে তাও যদি কেউ দাম দেয়! মাঝখান থেকে যেটুকু সম্মানের যোগ্য ছিল সেটাও হারায়।

৪. কিছু মানুষ আছেন অসম্ভব কর্মঠ, কথা কম কাজ বেশি, নিজের পরিধি এবং সীমারেখা জানেন। তাই কাজের মধ্যেই ব্যস্ত থাকেন, অসামাজিক হন না। আবার ঢলে পড়ে গলেও যান না। যেকোনো পরিস্থিতিতে উপস্থিত বুদ্ধি খাঁটিয়ে সাবলীল থাকার চেষ্টা করেন। কেউ খেপালে তেমন একটা খেপেও যান না কারণ জীবনবোধ সম্পর্কে ধারণা আছে। মনের ভেতরে রসবোধ প্রবল কিন্তু বাইরে প্রকাশ কম। এ ধরনের মানুষ সমাজের ইদানিং বিরল! কিন্তু রয়েছে। দেখার চোখ থাকলে খুঁজে পাওয়া যায়।

৫. কিছু মানুষ আছেন চরম পর্যায়ের স্বার্থপর। দিন দুনিয়া উল্টে গেলেও এরা নিজেকে নিয়েই ব্যস্ত, নিজেকে ছাড়া এই দুনিয়ায় যে আরো মানুষ আছে এটা তারা ভাবতেই পারে না। কেয়ামত শুরু হয়ে গেলেও এরা নিজেদের নিয়ে নিমগ্ন থাকবে কোনো সন্দেহ নাই, আজরাইল এসে দাঁড়ালেও এরা সময় চেয়ে নেবে একটা হাসিমুখের সেলফি তোলার জন্য, মরার আগে কেমন চেহারা হলো দেখতে চায়! এরা আপনার সরাসরি কোনো ক্ষতি করবে না কিন্তু স্বার্থে আঘাত লাগলে সর্বনাশ। এ ধরনের মানুষ থেকে যতদূরে থাকা যায়, ততো মনের জন্য ভালো কারণ মানবতার এতো চরম অবক্ষয় বেশিক্ষণ কাছে থেকে সহ্য করা যায় না।

৬. কিছু কিছু মানুষ আছে, সারাক্ষণ কথা বলে। কথা বলতে না পারলে এরা মরে যাবে। কোথায় শুরু কোথায় শেষ তারা নিজেরাও জানে না, বলতেই থাকে, বলতেই থাকে, বলতেই থাকে। এদের কথার জ্বালায় কেউ কোনো কথাই বলতে পারে না। এরাই সব বলবে, বাকিরা কিছু জানে নাকি যে বলবে? খালি তারাই সব জানে। তারাই সব বলবে। থামলে তো অন্যরা বলবে! তবে এরা মানুষ হিসেবে খারাপ হয় না, খারাপ হওয়ার সময় কই? কথাই তো শেষ হয় না।

৭. কিছু মানুষ আছেন জগৎ অলস। মনে মনে চিন্তা করে আইনস্টাইনের থিওরি ও মিলিয়ে ফেলেন। কিন্তু বাস্তবে একটা পা ও কম্বল থেকে বের করেন না। একটি কলমও হাতে ধরবেন না কিন্তু বিদ্যাসাগর। তবে বিদ্যার কোনো প্রসার নেই এটা ইচ্ছেকৃত দেরি বা অদক্ষতা নয় কিন্তু। সবার মূলে ওই যে ‘অলসতা’। একটা জীবন এদের ভাবতে ভাবতেই গেলো। নড়াচড়া করতে খুবই কষ্ট, যদি নোবেল প্রাইজ পেয়ে যান! হায় হায় তখন তো আবার আনতে যেতে হবে। ধুর ছাই, তার চেয়ে ঝিমানো ভালো।

৮. কিছু মানুষ রয়েছে এ জগতে, আবার নাই। তাদের শরীর আছে কিন্তু মন নাই। মনের ঠিকানা কোথায় কেউ জানে না। তিনি নিজেও জানে না। কখনো ধ্যানে থাকেন, কখনো আকাশে ভাসেন, কখনো জিন, পরীর রাজ্যে কখনো কল্পনার সপ্তম স্তরে।অনেক বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডার মাঝে বসে আছেন কিন্তু তিনি সেখানে নাই অন্য কোনোলোকে, ভুলোকে, দুলোকে, ছায়াপথে খালি পৃথিবীতে নাই। এত দিবাস্বপ্ন দেখেন যে আসল স্বপ্ন দেখার সময় নাই। ভাবের জগৎ থেকে পিঁপড়ের কামড় খেয়ে ধরাধামে জ্ঞান ফিরলেও মুচকি হাসি দিয়ে আবারো ভাবতে বসে যান। তারা প্রেমিক পুরুষ/নারী। জগতের সবার সাথেই এদের প্রেম হয়, মনে মনে ফ্যান্টাসিতে প্রেমিক/প্রেমিকাকে নিয়ে ঘুরতে থাকেন, গল্প করতে থাকেন, হাসতে থাকেন খালি বাস্তব জীবনে বউ/স্বামীর জন্য এদের কোনো সময় নাই। যত দ্রুত সম্ভব মনোচিকিৎসক দেখানো প্রয়োজন।

৯. ইদানীং কিছু মানুষ দেখা যায় যারা ধর্ম, রাষ্ট্র, সমাজকে পুঁজি করে চলেন। সস্তা জনপ্রিয়তার আশায় বিভিন্ন জনবহুল জায়গায়, ফেসবুকে তারা নিজ ধর্মের দোষ ধরবেন। কোনো ধর্ম সম্পর্কে সুগভীর জ্ঞান নেই কিন্তু সংখ্যালঘু, মৌলবাদ, নারীবাদ, ধর্মান্ধ এসব শব্দের বহুল ব্যবহার করে ব্লগ লিখবেন, যেকোনো বিতর্কিত বিষয়কে আরও বিতর্কিত করতে ফুলিয়ে ফাপিয়ে রঙ চড়িয়ে বিশাল স্ট্যাটাস লিখবেন। তারা খুবই দ্রুত টিকটিকির ন্যায় রং বদলায় প্রায়শই নতুন রংয়ের আবির্ভাব ঘটে। কিন্তু ব্যক্তিগত জীবনে নীতিহীন, প্রায়শই দেশপ্রেমের ভং ধরে, দেশি পণ্যের জন্য মুখে ফেনা তুলে বিদেশি পণ্য ও সুযোগ-সুবিধা সুদে আসলে আদায় করে দাঁত কেলানো হাসির ছবি একটার পর একটা পোস্ট করতে থাকেন। আমার জীবনে দেখা সর্বনিকৃষ্ট মানুষ এরা, এদের জন্য চিড়িয়াখানায় ঘর বরাদ্দ সময়ের দাবি। এরা সুস্থ সমাজের পরিপন্থী।

অনেক দূর থেকে দেখা পদ্ম ফুলটি পানি থেকে তুলে এনে কাছে থেকে দেখতে তেমন একটা ভালো লাগে না, তেমনি অনেক দূর থেকে দেখা মানুষও কাছে এলে তাকে আর তেমন আর ভালো লাগে না। তখন তার ভেতরের কদর্যতা, স্বার্থপরতা আর লোক দেখানো চাটুকারিতা বিষের ফলার মতো লাগে। তাই কিছু মানুষ দূরে থাকাই সবার জন্য পক্ষের জন্যই মঙ্গল। মনের শান্তি বড় শান্তি।

১০.এমন কিছু মানুষ আছেন, তারা যেকোনো সময় বা পরিস্থিতিতে বিনয়ী থাকতে পারেন। অনেক গুণের অধিকারী হলেও কখনো গর্ব বা বলে বেড়ান না। নিজের মতো থাকতে পছন্দ করেন, অন্যকে ঘাটান না। ঝামেলা এড়িয়েই চলেন। কিন্তু কেউ খোঁচালে বিরক্ত হন মনে মনে। বারবার খোঁচানো হলে একটা সময় অপরপক্ষকে থামাতে রূঢ় হতেই হয় তাকে। তখন হয়তো অপরপক্ষ উচিত জবাব পেয়ে চুপসে যায় অথবা উল্টা-পাল্টাও বলে বেড়ায়। তাতে অবশ্যই এ ধরনের মানুষদের তেমন কোনো সমস্যা হয় না।

১১. কিছু মানুষ রয়েছেন অতি চালাক, বুদ্ধিমান নয় কিন্তু। চালাক আর বুদ্ধিমানের মধ্যে পার্থক্য আছে। তারা সবসময় দুই নৌকায় পা দিয়ে বেড়াবেন। এক নৌকার মাঝিকে অন্য নৌকার মাঝির কীর্তন ইনিয়ে বিনিয়ে শোনাবেন। সে খুবই ব্যথিত আপনার প্রতি বলে আপনার কাছে থেকে তথ্য সংগ্রহ করে অন্য মাঝির কাছে যাবেন একই কাজে। কিছুদিন পর দুই নৌকা থেকেই লাথি খেয়ে ডোবায় পড়ে কাঁদাপানি খাবেন। অতি চালাকি করতে গিয়ে তার যে আম-ছালা (মান-সম্মান) সবই গেলো, তা তার মাথার রাডারে ঢুকবে না, ঢুকলেও স্বীকার করবে না, বরং ওই কাদা পানিতে বসেই দুই মাঝিকে গালাগালি করবেন। নিজে যে ডুবে গেছেন সেই খেয়াল নাই।

১২. কিছু মানুষ আছেন দিন দুনিয়ার সবকিছুর ওপরে তারা বিরক্ত। কোনো কিছুই তাদের মনপুত হয় না, পছন্দ হয় না, ভুল সবই ভুল। ফেরেস্তারা নেমে এলেও বিরক্তি আর কালো মুখ নিয়েই থাকবেন। সবসময় ভ্রু কুঁচকে থাকার জন্য মধ্যে ললাটে স্থায়ী দাগ পড়ে যায় দুই তিনটে। তাতে তাদের কোনো বিকার হয় না। তারা হাসেন ও কপাল কুঁচকে, হাসির সময়েও বিরক্তি প্রকাশ পায়। কাজে যান বিরক্তি নিয়ে, কাজ করেন বিরক্তি নিয়ে, বাসায় ফিরেও বিরক্তি। কারো জীবনেই যে কোনোকিছুই মনমতো হয় না তারপরও যে সবাই চলছে সেটা তারা বুঝতে পারেন অনেক অনেক দেরিতে কিন্তু ততদিনে কপালে স্থায়ী ৩-৪টা ভাঁজ পড়ে যায় ও চেহারায় বিরক্তির।

আমি বিশ্বাস করি মানবিক বোধ সম্পন্ন ভালো মানুষের সাহচর্যে থাকতে পারাটাও আশীর্বাদ কারণ আপনি তার থেকে অন্তত খারাপ কিছু শিখবেন না যা আপনার মনকে বিষণ্ন করে দেবে বরং কিছু ভালো কিছুই শিখবেন এজন্যই গুরুজনরা বলেছেন ‘সৎ সঙ্গে স্বর্গবাস, অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2015
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: রায়তাহোস্ট