বটগাছটি শতবর্ষী নয়, ব্যক্তিগত প্রয়োজনে বিক্রি করেন মালিক
মাদারীপুরের আলোচিত সেই বটগাছটি শত বছরের পুরোনো নয়। ‘শিরক’ ঠেকাতেও গাছটি কাটা হয়নি। মালিক তার ব্যক্তিগত প্রয়োজনে গাছটি কেটেছেন। এ ঘটনায় উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। বুধবার (২১ মে) সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াদিয়া শাবাবের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে দন্ত কমিটি।
তদন্ত প্রতিবেদনে দেখা যায়, গাছটি শত বছরের দাবি করা হলেও মূলত বয়স মাত্র ৩৫ বছর। আর শিরক নয়, গাছের মালিকের ব্যক্তিগত জায়গায় বাড়ি করার জন্য গাছটি কাটা হয়।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াদিয়া শাবাব বলেন, গত ৫ মে দুপুরে মাদারীপুর সদর উপজেলার শিরখাড়া ইউনিয়নের আড়িয়াাল খাঁ নদের পাশে থাকা একটি বটগাছ করাত দিয়ে কাটা শুরু করেন কয়েকজন আলেম ও মাদরাসার ছাত্ররা। এ সময় একটি ভিডিও ধারণ করে সেটিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। যেখানে লেখা হয়- শত বছরের একটি বটগাছকে ‘শিরক’ আখ্যা দিয়ে কেটে ফেলছে আলেম সমাজ। মুহূর্তের মধ্যেই ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে যায়। এ ঘটনায় পর দিন ৬ মে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে গাছটি কাটা বন্ধ করা হয়। পরে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। সেই তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন দাখিল করেছে। সেখানে ওই ভিডিওর সাথে তথ্যের গড়মিল পাওয়া যায়।
তিনি আরও বলেন, গাছের মালিক হান্নান হাওলাদার ওই স্থানে একটি বাড়ি নির্মাণ করবেন। যে কারণে জায়গাটি খালি করার প্রয়োজন ছিল। কিন্তু বটগাছটি কমমূল্যের হওয়ায় কেউ দাম দিয়ে কিনতে রাজি হয়নি। পরে মাত্র ১৫০০ টাকায় গাছটি একটি মাদরাসায় দিয়ে দেন। এতিমখানায় রান্নার জন্যে জ্বালানি কাঠ হিসেবে ব্যবহার করতে গাছটি নেয় মাদরাসা কর্তৃপক্ষ। পরে গাছটি নিজেরাই কাটা শুরু করেন। এ সময় কেউ একজন ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন। প্রশাসন খবর পেয়ে গাছটি কাটা বন্ধ করে দেয়। গাছটি কাটার জন্যে কোনো ধরনের ‘শিরক’ আখ্যা দেওয়ার বিষয়টি সঠিক নয়।
এ ব্যাপারে গাছের মালিক হান্নান হাওলাদার বলেন, আমরা নদী ভাঙনের মানুষ। প্রতি বছর আগে আড়িয়াল খাঁ নদ ভাঙে। যে কারণে নদী থেকে একটু দূরে বাড়ি করার জন্যে আমার পৈতৃক জায়গার বটগাছটি বিক্রি করে দেই। তারা গাছও কাটা শুরু করে। কিন্তু পরে লোকজন গিয়ে তাদের গাছ কাটতে দেয়নি। আমার ব্যক্তিগত জায়গার গাছ কাটতে বাধা পাওয়াটা দুঃখজনক।