সোমবার , ২৫শে আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ১০ই ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - শরৎকাল || ২রা রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

ফিশারিতে ডেকে নিয়ে কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, তিনজনের মৃত্যুদণ্ড

প্রকাশিত হয়েছে- সোমবার, ২৮ জুলাই, ২০২৫

নেত্রকোণায় চাঞ্চল্যকর কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও আত্মহত্যার প্ররোচনা মামলায় তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন নেত্রকোণা জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল। একই সাথে তাদের ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, ঠাকুরকোনা গ্রামের কাজল চন্দ্র সরকারের ছেলে অপু চন্দ্র সরকার (২৮), আব্দুর গফুরের ছেলে মামুন (৩৩) ও একই গ্রামের মৃত মিয়াচানের ছেলে সুলতান (৩০)। সোমবার (২৮ জুলাই) দুপুরে আসামিদের উপস্থিতিতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ ড. এ কে এম এমদাদুল হক।

মামলার এজাহার ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় নেত্রকোণা সদর উপজেলার ঠাকুরাকোনা ইউনিয়নের এক রিকশাচালকের ১৪ বছরের মেয়েকে জোর করে ডেকে নিয়ে পাশের মাছের ফিশারি খামারের ঘরে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে। পরিবারের সদস্যরা মেয়েটিকে অনেক খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে খামার থেকে তাকে উদ্ধার করে বাড়ি নিয়ে আসে। ঘটনার পর ধর্ষকরা ভুক্তভোগি পরিবারকে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য হুমকি দেয়। পরদিন সকালে মেয়েটির ঝুলন্ত মরদেহ পাশের আরেকটি পরিত্যক্ত ঘর থেকে উদ্ধার করা হয়। ধর্ষকরা প্রভাবশালী হওয়ায় বিষয়টি তারা আত্মহত্যা বলে প্রচার করে। পরে ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফন করতে বাধ্য হয়।

এ ঘটনায় মেয়েটির মা বাদী হয়ে তিনজনের নাম উল্লেখ করে নেত্রকোণা মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।

এ ঘটনা এলাকাবাসীর মাঝে ক্ষোভ প্রকাশ পেলে আদালতের মাধ্যমে ২০১৭ সালে ১০ সেপ্টেম্বর কবর থেকে লাশ উত্তোলন করে সুরতহাল প্রতিবেদন ও ময়নাতদন্তের পর পুনরায় লাশ দাফন করা হয়। পরবর্তীতে ধর্ষক অপু ও মামুনকে ২০১৭ সালের ১২ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদের দেওয়া জবানবন্দিমূলক স্বীকারোক্তি অনুযায়ী মামলাটি পুনরায় ফাইল হয়। পরে তিন নম্বর আসামি খামার মালিক সুলতান মিয়াকেও আটক করে পুলিশ।

পরবর্তীতে ২০১৮ সনের ৫ এপ্রিল আদালতে পুলিশ চূড়ান্ত চার্জশিট দাখিল করে। ১৬ জন সাক্ষির সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালতে অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক এ রায় দেন। রায় ঘোষণাকালে তিনজন আসামিই উপস্থিত ছিলেন।