সোমবার (২৪ জুন) দুপুর ১টার দিকে উপজেলার আমিনপুরের রানীনগর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এলাকাবাসীর ব্যানারে ঘণ্টাব্যাপী এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
মানববন্ধনে মৃত আল-আমিন হোসেনের বড় ভাই আলমগীর হোসেন বলেন, আমার নিরপরাধ ভাইকে প্রকাশ্যে এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা কুপিয়ে হত্যা করেছে। ভাইকে তো আর ফিরে পাব না কিন্তু আমি এ হত্যার দৃষ্টান্তমূলক বিচার দেখে যেতে চাই।
দুদকে চাকরি করে হাফিজুর রহমান। মূলত তার প্রশ্রয়েই এই হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এর আগেও তিনি আমার ভাইকে হত্যার ঘোষণা দিয়েছিলেন। আল আমিনকে হত্যা করতে কত টাকা লাগবে এলাকায় এই ঘোষণা কয়েকবার দিয়েছে। হাফিজ নামে বেনামে টাকার পাহার গড়েছে। স্ত্রী-সন্তান ও শ্বশুর-শাশুড়ির নামে অঢেল সম্পদ রয়েছে। ব্যাংকে রয়েছে কোটি কোটি টাকা। আমিও তো সরকারি চাকরি করি। মাস শেষে তো বাজার করার টাকাই থাকে না।
তিনি আরও বলেন, হত্যাকারীরা এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও তাদের ধরা হচ্ছে না। আসামিরা মামলা তুলে নেওয়ার জন্য বাড়িতে এতে হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। আমরা এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার না করলে বড় ধরনের কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হবে।
মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন, স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. বিল্লাল হোসেন, মো. রাসু মেম্বার, মো. খাইরুল মাস্টার ও এলাকার সর্বস্তরের মানুষজন।
এর আগে, শুক্রবার (২১ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। এর আগে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলার রানিনগর ইউনিয়নের রানিনগর ক্লাবের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত আল আমিন উপজেলার রানিনগর ইউনিয়নের মৃত শহিদুর রহমান মিয়ার ছেলে। তিনি রানিনগর ইউনিয়ন যুবলীগের সদস্য ছিলেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রথম ধাপে গত ৯ মে সুজানগর উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল ওহাব ও সাবেক চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহিনুজ্জামান শাহীনের সমর্থকদের মধ্যে রানিনগরে বেশ কিছু দিন ধরে অস্থিরতা বিরাজ করছে
এরই সূত্র ধরে ২১ জুন বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে যুবলীগ নেতা (শাহীনুজ্জামান শাহীন গ্রুপের) আল আমিন আত্মীয়ের বাড়ি থেকে দাওয়াত খেয়ে মোটরসাইকেলযোগে বাড়িতে আসছিলেন। পথিমধ্যে রানিনগর ক্লাবের সামনে পৌঁছালে পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা দুর্বৃত্তরা মোটরসাইকেল থেকে নামিয়ে তাকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে অবস্থার অবনতি হলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করলে মাঝপথে গিয়ে মৃত্যু হয় তার।