সোমবার , ২৫শে আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ১০ই ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - শরৎকাল || ২রা রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

পদ্মা সেতু প্রকল্প এলাকা রক্ষা বাঁধে ধস, আতঙ্কে নদীপাড়ের মানুষ

প্রকাশিত হয়েছে- রবিবার, ৮ জুন, ২০২৫

বর্ষার শুরুতেই পদ্মা সেতু প্রকল্প এলাকা রক্ষা বাঁধে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে শরীয়তপুরের জাজিরায়। গতকাল শনিবার (৭ জুন ) হঠাৎ করেই বাঁধটির প্রায় ২৫০ মিটার এলাকা নদীতে ধসে পড়ে। এর ফলে আশপাশের এলাকাজুড়ে চরম উদ্বেগ ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। বহু পরিবার ঘরবাড়ি সরিয়ে নিতে শুরু করেছে। 

স্থানীয়দের দাবি, অবিলম্বে কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে রাস্তাঘাট, বাজার এবং শতাধিক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১০-১১ অর্থবছরে পদ্মা সেতু থেকে মাঝিরঘাট হয়ে পূর্ব নাওডোবা পর্যন্ত নির্মিত হয় প্রায় ২ কিলোমিটার দীর্ঘ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড বাঁধ। বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে নির্মিত এই বাঁধে ব্যয় হয় ১১০ কোটি টাকা। ২০২৩ সালের ৩ নভেম্বর নাওডোবা ইউনিয়নের মাঝিরঘাট এলাকায় বাঁধের ধস শুরু হয় এবং কয়েক দিনের ব্যবধানে প্রায় ১০০ মিটার অংশ নদীতে তলিয়ে যায়। পরে পানি উন্নয়ন বোর্ড ২ কোটি ৮৭ লাখ টাকা ব্যয়ে জিওব্যাগ ও সিসি ব্লক ফেলে ক্ষতিগ্রস্ত অংশ মেরামতের কাজ শুরু করে। তবে বর্ষা শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই নতুন করে ধস দেখা দেয় একই এলাকায়। ঈদের দিন পুরোনো ধসের স্থানসহ আরও একটি অংশে বড় আকারের ভাঙন দেখা দেয়। এতে একদিনেই ২৫০ মিটার অংশ নদীতে বিলীন হয়ে যায়।

মাঝিরঘাটের বাসিন্দা মো. সেলিম বলেন, ঈদের রাতে ঢাকা থেকে ফিরেছি। কিন্তু ঘুম ভাঙতেই দেখি ভাঙন শুরু। ঈদের নামাজও পড়তে পারিনি, পরিবারের সবাইকে নিয়ে আতঙ্কে আছি।

দেলোয়ার হোসেন নামে আরেক ভুক্তভোগী বলেন, ঈদের দিনেও আমার ঘর সরাতে হয়েছে। নদীতে আমার ঘরবাড়ি চলে যাচ্ছিল। এদ্রুত ব্যবস্থা না নিলে পুরো গ্রাম নদীতে চলে যাবে।

স্থানীয় বাসিন্দা বাদশা শেখ বলেন, বছরের পর বছর ধরে পদ্মায় অবৈধভাবে বালু তোলা হচ্ছে। ফলে নদীর গতিপথ বদলে গেছে। এবার ভাঙনে রক্ষা বাঁধের দুটি জায়গা পুরোপুরি ধসে পড়েছে।

মাঝিরঘাট বাজারের ব্যবসায়ী আব্দুল কাদের মিয়া জানান, এখানে প্রায় ২০০টি দোকান আছে। সবই ধ্বংস হয়ে যাবে যদি দ্রুত কিছু না করা হয়। সরকারের কাছে জোর দাবি- এখনই কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী সুমন চন্দ্র বনিক বলেন, আমরা খবর পাওয়ার পরপরই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। দ্রুত ভাঙন ঠেকাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। ইতোমধ্যে জিওব্যাগ ফেলার প্রস্তুতি চলছে।