নিজেকে খুন করার জন্য ‘কিলার’ ভাড়া করেছিলেন অ্যাঞ্জেলিনা জোলি
বিশ্বজোড়া খ্যাতি, কোটি টাকার সম্পদ, সুপারহিট সব ছবি—সব কিছুর মধ্যেও নিজেকে হারিয়ে ফেলেছিলেন হলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী অ্যাঞ্জেলিনা জোলি। একসময় নিজের জীবনের ইতি টানতে নিজেই ভাড়া করেছিলেন একজন ‘কিলার’!
দুই দশক আগের কথা। বয়স তখন মাত্র ২০। ভয়াবহ হতাশা আর মানসিক অস্থিরতার মাঝে নিজেকে শেষ করার পরিকল্পনা করেন জোলি। আত্মহত্যা করলে পরিবার কষ্ট পাবে—এই ভাবনা থেকেই খুন হওয়াটাকে সহজ সমাধান ভেবেছিলেন। এজন্য যোগাযোগ করেছিলেন এক পেশাদার খুনির সঙ্গে।
কিন্তু সেই খুনি তাকে বলেন, ‘একবার নিজের জীবন নিয়ে পুনরায় ভেবে দেখো। এরপর পরবর্তী দুই মাসের মধ্যে আমাকে নতুন সিদ্ধান্ত জানাও।’
সেই কথাই বদলে দেয় জোলির জীবনের মোড়। আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন তিনি। পর্দার ঝলকানির পেছনে লুকানো সেই অন্ধকার থেকেই তিনি আজ উঠে এসেছেন —একজন মা, এক মানবিক কর্মী, এবং এক অনুপ্রেরণাদায়ী নারী হিসেবে। হলিউডে নিজের শক্ত অবস্থান গড়েছেন অসংখ্য ছবির মাধ্যমে।
মাত্র ১৪ বছর বয়সে অভিনয়ে হাতেখড়ি। বাবা জন ভয়েটের সঙ্গে ১৯৮২ সালে ‘Looking to Get Out’ ছবিতে প্রথম অভিনয় করেন। ১৯৯৯ সালে ‘Girl, Interrupted’ ছবির জন্য অস্কার জিতে নেন সেরা পার্শ্ব অভিনেত্রী হিসেবে। এরপর জনপ্রিয় কিছু ছবিতে অভিনয় করে হয়ে ওঠেন বিশ্বের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত অভিনেত্রীদের একজন। শুধু ‘Maleficent’ থেকেই আয় করেন ৩৩ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ২৮২ কোটি)।
অভিনয়ের পাশাপাশি জড়িত আছেন নানা ব্যবসায়িক উদ্যোগে। Saint John ব্র্যান্ডের সঙ্গে ১২ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি করেন। তৈরি করেছেন নিজস্ব ফ্যাশন লাইন ‘Atelier Jolie’, যার লক্ষ্য গৃহহীনদের সহায়তা করা।
ব্যক্তিগত জীবনও কম আলোচনার নয়। ১৯৯৬ সালে প্রথম বিয়ে করেন অভিনেতা জনি লি মিলারকে। বিয়ের দিনে নিজের রক্ত দিয়ে স্বামীর নাম লিখেছিলেন পোশাকে! সেই সম্পর্কের ইতি ঘটে ১৯৯৯ সালে। এরপর ২০০০ সালে বিয়ে করেন বিলি বব থর্নটনকে, যেটি ভেঙে যায় ২০০৩-এ।
সবচেয়ে আলোচিত ছিল ব্র্যাড পিটের সঙ্গে সম্পর্ক। ২০১৪ সালে তাঁরা বিয়ে করেন। দম্পতি হিসেবে তিন সন্তান দত্তক নেন: ম্যাডক্স, প্যাক্স ও জাহারা। পরবর্তীতে জন্ম দেন আরও তিন সন্তান—শিলোহ, নক্স ও ভিভিয়েন। তবে ২০১৬ সালে সেই সম্পর্কের ইতি ঘটে।
বর্তমানে ছয় সন্তানের মা অ্যাঞ্জেলিনা। মা হিসেবেই নিজেকে খুঁজে পেয়েছেন তিনি। জাতিসংঘের বিশেষ দূত হিসেবে যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চল ও শরণার্থী শিবিরে কাজ করেছেন। নারী অধিকার ও বাস্তুচ্যুত মানুষের পক্ষে বারবার সোচ্চার হয়েছেন।
নিজেকে হত্যা করার সিদ্ধান্ত থেকে ফিরে আসা সেই অ্যাঞ্জেলিনা জোলি আজ একজন জীবন্ত কিংবদন্তি। ব্যক্তিগত জীবনের দুঃখবোধ ও হতাশাকে শক্তিতে রূপান্তর করে হয়ে উঠেছেন এক অনুপ্রেরণার নাম।
সূত্র: ডেইলি মেইল