ধারের জিনিস চুরি হলে যা করবেন
নিজের কাছে প্রয়োজনীয় কিছু না থাকলে তাৎক্ষণিক ধার নেওয়ার প্রচলন আছে আমাদের সমাজে। প্রয়োজনের সময় কাউকে ধার দেওয়া মানবিকতার অংশ। ধার নেওয়ার পর গ্রহীতার প্রধান দায়িত্ব হলো প্রয়োজন শেষে দাতাকে সেই জিনিসটি সঠিকভাবে বুঝিয়ে দেওয়া এবং তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা। এতে দাতা অন্যকে সাহায্য করতে উৎসাহ পাবেন।
রাসুল (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না, সে আল্লাহর প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না। অথবা যে ব্যক্তি মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞ নয়, সে আল্লাহর প্রতিও অকৃতজ্ঞ। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৮১১) তাই প্রয়োজনের সময় সাহায্যকারীর প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা জরুরি।
কখনো কারো কাছ থেকে কোনো জিনিস ধার নেওয়ার পর যদি বস্তুটি হারিয়ে যায়, তাহলে গ্রহীতার কর্তব্য হলো— ক্ষতিপূরণ হিসেবে দাতাকে এমন একটি জিনিস কিনে দেওয়া। এমন পরিস্থিতির ক্ষেত্রে ইসলামী বিধান হলো—
ধার নেওয়া বস্তু যদি গ্রহীতার অবহেলার কারণে চুরি হয়, হারিয়ে যায় বা নষ্ট হয়, তাহলে তার পূর্ণ জরিমানা দিতে হবে মালিককে। কিন্তু ধারগ্রহীতা যদি দাতাকে তা ফিরিয়ে না দেয়, তাহলে তিনি অন্যের হক বিনষ্টকারী ও জালেম হিসেবে গণ্য হবেন। (ফতোয়ায়ে ফকীহুল মিল্লাত, ১২/৬০)
অন্যের হক নষ্টকারীর জন্য কঠিন শাস্তির হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছে কোরআন ও হাদিসে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন—
তোমরা নিজেদের মধ্যে একে অন্যের অর্থ-সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না এবং মানুষের ধন-সম্পদের কিয়দংশ জেনে-শুনে অন্যায়ভাবে গ্রাস করার উদ্দেশ্যে তা বিচারকের কাছে পেশ করো না। (সূরা আল-বাকারা, আয়াত : ১৮৮)
কোরআনে আরও বলা হয়েছে, নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের নির্দেশ দিচ্ছেন, তোমরা আমানতকে তার মালিকের কাছে প্রত্যার্পণ করো বা ফেরত দাও। (সূরা আন-নিসা, আয়াত : ৫৮)
হজরত আবু সিরমা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি অন্য কারো ক্ষতিসাধন করে, আল্লাহ তায়ালা তা দিয়েই তার ক্ষতিসাধন করেন। যে ব্যক্তি অন্যকে কষ্ট দেয়, আল্লাহ তায়ালা তাকে কষ্টের মধ্যে ফেলেন।’ (তিরমিজি, হাদিস : ১৯৪০)
অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, আবু সিরমাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেছেন, ‘কেউ অন্যের ক্ষতি করলে আল্লাহ তার ক্ষতিসাধন করবেন। কেউ অযৌক্তিকভাবে কারো বিরোধিতা করলে আল্লাহ তার বিরোধী হবেন।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৬৩৫)