বৃহস্পতিবার , ১৩ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ২৮শে ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - বসন্তকাল || ১৩ই রমজান, ১৪৪৬ হিজরি

ধর্ষকদের শাস্তির দাবিতে ঢাবির বাংলা বিভাগের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন

প্রকাশিত হয়েছে- রবিবার, ৯ মার্চ, ২০২৫

সারাদেশে অব্যাহত ধর্ষণের প্রতিবাদ ও ধর্ষকদের প্রকাশ্য ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে শিক্ষার্থীরা ধর্ষকদের শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেন।

রোববার (৯ মার্চ) দুপুরে কলা ভবনের সামনে থেকে মিছিল বের করেন বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা। পরে মিছিলটি ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ স্থান প্রদক্ষিণ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হয়। এসময় বিভাগের কয়েকশ শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

এসময় তারা- ‘We want we want, Justice Justice’, ‘we want Justice, hang the rapist’; ‘আমার সোনার বাংলায়, ধর্ষকদের ঠাঁই নাই’; ‘তুমি কে আমি কে, আসিয়া আসিয়া’; ‘আমার বোন তোমার বোন, আসিয়া আসিয়া’; ‘আমার বোনের কান্না, আর না আর না’; ‘একটা একটা ধর্ষক ধর, ধরে ধরে কবর দে’; ‘রশি লাগলে রশি নে, ধর্ষকদের ফাঁসি দে’; ‘ধর্ষকদের কালো হাত, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’; ‘২৪ এর বাংলায়, ধর্ষকদের ঠাঁই নাই’; ‘জাহাঙ্গীর করে কি? খায় দায় ঘুমায় নাকি?’- ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।

বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী ঈশিতা জাহান অর্না বলেন, ধর্ষণ এখন নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটার কোনো সমাধান পাওয়া যাচ্ছে না। আমরা আজকে এখানে আমাদের মা বোনদের সম্ভ্রম রক্ষার জন্য দাঁড়িয়েছি। আমাদের নিরাপত্তা নেই। আমরা ভয়ে আছি আমরা কি আদৌও সুস্থ স্বাভাবিক অবস্থায় ঘরে ফিরতে পারবো? আমাদের ক্যাম্পাসেও আমরা নিরাপদ বোধ করছি না। আমি জানি না তারা এত সাহস কোথা থেকে পাচ্ছে।

বিভাগের ১৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী তামান্না আক্তার বলেন, আমি জন্মের পরে এখন পর্যন্ত কোনো ধর্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেখিনি। যার ফলে প্রতিদিন নতুন নতুন ধর্ষকের জন্ম হচ্ছে। তারা ধর্ষণ ও নারী নিপীড়নের ঘটনায় ভয় পাচ্ছে না। আজকের সমাবেশ থেকে আমরা ক্লাস পরীক্ষা বয়কট ঘোষণা করছি। আমরা এই ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবো না।

শিক্ষার্থী মোসাদ্দেক আলী ইবনে মোহাম্মদ বলেন, বিভিন্ন দীর্ঘসূত্রিতার মাধ্যমে ধর্ষকদের যথাযথ বিচার হতে আমরা খুব একটা দেখি না। যে কারণে ধর্ষকরা বারবার এই ধরনের ঘৃণ্য কর্মকাণ্ড করার দুঃসাহস দেখিয়ে যাচ্ছে। রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় ধর্ষকদের পার পাইয়ে দেওয়ার মতো বিভিন্ন ঘটনা আমরা অতীতে দেখেছি। আমরা চাই অনতিবিলম্বে বিশেষ ট্রাইবুনালের মাধ্যমে ধর্ষকদের বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে।

তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যর্থ হয়েছেন। তাকে অনতিবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে। তার ব্যর্থতার জন্য তাকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিপীড়ন বিরোধী সেলকে শক্তিশালী করে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ গুলো যথাযথভাবে উপস্থাপনের ব্যবস্থা করে দিতে হবে।