পবিত্র মাহে রমজানের প্রথম রোজাকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) গণ-ইফতার কর্মসূচি পালিত হয়েছে। বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের ঢাবি শাখার উদ্যোগে এই গণ-ইফতারের আয়োজন করা হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।
রোববার (২ মার্চ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) মাঠে এই আয়োজন করা হয়। ইফতারের আগে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের পক্ষ থেকে সবার মধ্যে মেসওয়াক বিতরণ করা হয়।
ইফতারের আগে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের নেতাকর্মীরা হামদ ও নাতে রাসূল (সা.) পরিবেশন করা হয় এবং রোজার বরকত হাসিল ও ২৪ এর অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের স্মরণে দোয়া করা হয়।
সরজমিনে দেখা যায়, টিএসসির মাঠে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের নেতারা ইফতার সাজাচ্ছেন। পরে ইফতার সামগ্রী শিক্ষার্থী ও অন্যান্যদের মধ্যে পরিবেশন করা হয়। গণ-ইফতার কর্মসূচিতে ছেলে ও মেয়েদের জন্য আলাদা বসার ব্যবস্থা করা হয়েছিল।
ইফতারে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী সৌরভ বলেন, আজকের এই চমৎকার আয়োজন অত্যন্ত গুরুত্ব বহন করে। এটা ইসলামের সম্প্রতি ও সহনশীলতার প্রকাশ ঘটায়। গতবছর স্বৈরাচারী সরকার যে সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিয়েছিলো তার প্রতিবাদে প্রথম এই গণ-ইফতার আয়োজিত হয়েছিলো। এবারও তার ধারাবাহিকতা বজায় রাখা হয়েছে। এতে শিক্ষার্থীরা একসাথে ইফতার করতে পারছে। এমন আয়োজনের সাধুবাদ জানাই।
ইফতার পূর্ব সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার বলেন, গতবছর সাস্টে যখন ইফতারে বাধা দেয় তখন আমরা পায়রা চত্বরে গণ-ইফতার করেছিলাম। এবছর সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে গণ-ইফতারের আয়োজন করেছি। আজকে আমাদের ধারণার চেয়েও বেশি শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছেন। আমরা সম্মিলিতভাবে ইফতার আনন্দ উপভোগ করবো।
আর্থিক বিষয় তুলে ধরে বলেন, আমাদের ইফতার এর খরচ শুভাকাঙ্ক্ষী ও গণ চাঁদার মাধ্যমে তোলা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই যারা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন তারাও আমাদের আর্থিক সহায়তা করেছেন।
ঢাবি আহ্বায়ক আব্দুল কাদের বলেন, গতবার বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী আমাদের গণ-ইফতার এ অংশ নিয়ে স্বৈরাচারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে জবাব দিয়েছিলো। আমরা চাই ইসলামফোবিয়ার সম্প্রসার না ঘটুক। ইফতারের মাধ্যমে সম্প্রতির পরিবেশ বজায় থাকুক।
প্রসঙ্গত, গত বছর শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) এবং নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) ইফতার পার্টির উপর নিষেধাজ্ঞা দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পরে এর প্রতিবাদ জানিয়ে প্রথম রোজাতে (১২ মার্চ) গণ-ইফতারি কর্মসূচি গ্রহণ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। পরে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়েও গণ-ইফতার কর্মসূচি পালন করা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় এ বছরও গণ-ইফতারের আয়োজন করা হয়।