সোমবার , ২৫শে আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ১০ই ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - শরৎকাল || ২রা রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

ঢাকা জেলা ডিবির অভিযানে ১১ অটোরিকশাসহ চোর চক্রের ১২ সদস্য গ্রেপ্তার

প্রকাশিত হয়েছে- বৃহস্পতিবার, ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আব্দুল্লাহ আল নোমান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, সাভার (ঢাকা):  ঢাকার দক্ষিণ কেরানিগঞ্জে যাত্রীবেশে অভিনব কায়দায় নেশাজাতীয় দ্রব্য খাইয়ে অটোরিকশা চুরি চক্রের মূলহোতাসহ ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা জেলা দক্ষিণ গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এসময় তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী ১১টি চোরাই অটোরিকশা উদ্ধার করা হয়। বৃহস্পতিবার (০৯ ফেব্রুয়ারী) দুপুরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানান ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিবি) মোবাশশীরা হাবিব খান।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- শানু খাঁ (৪১), মো. মোজাফ্ফর আকন্দ ওরফে স্বপন (৩৫), মো. আবু তাহের (৪৫), মো. সুজন হাওলাদার(২৭), আঁখি আক্তার (২৩), মো. রাশেদ (৪০), মাসুদ হাওলাদার (৪৮), মো. সাইফুল ইসলাম ওরফে জয় রাজবংশী (২৭), মো. আকাশ মৃধা (২৫), মো. কাদির মৃধা (৪৫), মো. তপন (২৭) এবং মো. আসলাম হোসেন (৪৮)। এদের মধ্যে শানু খাঁ চক্রের মূলহোতা বলে জানিয়েছে পুলিশ।

ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিবি) মোবাশশীরা হাবিব খান জানান, দীর্ঘদিন ধরে দক্ষিণ কেরানিগঞ্জে একটি সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্র অটোরিকশা চুরি করে তা বিভিন্ন গ্যারেজে বিক্রি করে আসছিল। এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান এর নির্দেশনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিবি) মোবাশশীরা হাবীব খান এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে ঢাকা জেলা দক্ষিণ ডিবির অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সরকার আব্দুল্লাহ আল মামুন এর নেতৃত্বে এসআই জহিরুল ইসলামের একটি চৌকশ টিম অভিযান পরিচালনা করে উক্ত চোর চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা আন্তঃজেলা অটোরিকশা চোর চক্রের সক্রিয় সদস্য।

উদ্ধারকৃত অটোরিকশা।

মোবাশশীরা হাবিব খান আরও জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়- গ্রেপ্তার আসামিরা প্রায় সাত-আট বছর ধরেই কেরানীগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যাটারী চালিত অটোরিকশা চুরি করে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে চোরাই অটোরিকশা ক্রয়-বিক্রয়কারী চক্রের নিকট বিক্রয় করত। পরবর্তীতে চোরাই ক্রয়-বিক্রয়কারী চক্র অটোরিকশা গুলোর রং পরিবর্তন করে সেগুলো ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকায় দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করত। তাদের হেফাজত হতে চুরি করা ১১টি অটোরিকশা উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে ইতোপূর্বেও নেশাজাতীয় দ্রব্য খাইয়ে অটোরিকশা চুরি ও চোরাই অটোরিকশা ক্রয়-বিক্রয়সহ মাদক আইনে মামলা রয়েছে।

এ ব্যাপারে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আসাদুজ্জামান জানান, চুরি চক্রে সাধারনত ৪ জন থাকে। মূলত গভীর রাত বা ভোরবেলায় কখনো কখনো দুপুর বেলাতেও সহজ সরল দরিদ্র অটোরিকশা চালকদের টার্গেট করে যাত্রী বেশে চালকের আস্থা অর্জন করে কৌশলে চা, জুস বা ক্রীম বিষ্কুটের সাথে নেশা জাতীয় দ্রব্য মিশিয়ে খাইয়ে দেয় । কয়েক মিনিটের মধ্যে চালক অজ্ঞান হয়ে গেলে তাকে নির্জন স্থানে ফেলে দিয়ে অটোরিকশা চুরি করে নিয়ে যেত তারা। এছাড়াও সামনে থেকে কোন কিছু নিতে হবে সেখানে চালকের সাহায্য প্রয়োজন বলে চালককে অটো থেকে নামিয়ে নিত তারা। চালক দৃষ্টিসীমার বাইরে চলে গেলে অটোতে বসে থাকা চোর চক্রের সদস্য অটোরিকশাটি চালিয়ে নিয়ে যেত। চালকের সাথে থাকা চোর চক্রের সদস্যরা আবার চালককে মালামাল পরিষ্কার করার জন্য জুট নেকরা বা কিছু একটা আনার জন্য পাঠিয়ে দিয়ে সেও পালিয়ে যেত। এই চোর চক্রে অটোরিকশা চালকের আস্থা অর্জনের জন্য নারী সদস্য রাখা হয়। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে থানায় নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। অদূর ভবিষ্যতে অপরাধী চক্রের বিরুদ্ধে ডিবি পুলিশের এমন অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান পুলিশ সুপার।