বৃহস্পতিবার , ২২শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ৮ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - গ্রীষ্মকাল || ২৪শে জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি

ডিআরইউতে পিস্তল-লাঠিসোটা নিয়ে সন্ত্রাসী হামলা, সভাপতিসহ আহত একাধিক

প্রকাশিত হয়েছে- বৃহস্পতিবার, ২২ মে, ২০২৫

পিস্তল, দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে অতর্কিতভাবে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে দখলবাজ ও বহুল আলোচিত আওয়ামী ঘনিষ্ঠ সন্ত্রাসী জাকির হোসেন ও তার সহযোগীরা। হামলায় ডিআরইউ সভাপতি আবু সালেহ আকন, দপ্তর সম্পাদক রফিক রাফি, সদস্য মশিউর রহমান, মাহবুব হাসান, দেলোয়ার মহিন, মফিজুল সাদিকসহ একাধিক সাংবাদিক গুরুতর আহত হন।

বুধবার (২১ মে) রাতে ডিআরইউ কার্যালয়ের সামনে অবস্থিত ‘চেয়ারম্যান টি স্টল’ নামের একটি দোকানের মালামাল তারা লুট করে নিয়ে যাওয়ার সময় কারণ জানতে চাইলে এই বর্বর হামলা চালানো হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাতের অন্ধকারে সন্ত্রাসী জাকির ও তার স্ত্রী, কন্যা, ভাগনেসহ শতাধিক সশস্ত্র সন্ত্রাসী ডিআরইউ প্রাঙ্গণে হামলা চালায়। তারা প্রথমে ডিআরইউ কার্যালয়ের সামনে থাকা ‘চেয়ারম্যান টি স্টল’ নামে একটি দোকান ঘিরে ফেলে এবং দোকানের প্রায় ৫০ হাজার টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। দোকান ভাঙচুর করে দোকানটি পুরোপুরি গায়েব করে দেয় হামলাকারীরা।

সাংবাদিকরা জানান, দোকান লুটের বিষয়ে জানতে চাইলে ডিআরইউ-এর সিনিয়র সদস্য মশিউর রহমানকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে মারধর করা হয়। খবর পেয়ে ডিআরইউ সভাপতি আবু সালেহ আকন ঘটনাস্থলে গেলে তাকেও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়। হামলাকারীরা শুধু সদস্যদের ওপরই নয়, ডিআরইউ নেতৃত্বকেও লাঞ্ছিত করেছে।

ডিআরইউ সভাপতি আবু সালেহ আকন বলেন, “জাকির গং হঠাৎ করেই আমাদের ওপর হামলা করেছে। এর আগে তারা গরিব মানুষের একটি দোকান লুট করেছে। আমরা জানতে চাইলে আমাদের সদস্যদের উপর হামলা চালায়। পরে রাতের আধারে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে অতর্কিতে আক্রমণ চালানো হয়। এই কাপুরুষোচিত হামলার তীব্র নিন্দা জানাই এবং সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবি জানাচ্ছি।”

ডিআরইউ সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল বলেন, “সাংবাদিকদের উপর হামলার ঘটনায় বৃহস্পতিবার আমরা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি। জাকির গং গত ১৬ বছর ধরে সাংবাদিক ও নিরীহ এলাকাবাসীর উপর নির্যাতন চালিয়ে আসছে। এই দখলদার চক্রের রামরাজত্ব আর চলতে দেওয়া যায় না।”

হামলার বিষয়ে ভুক্তভোগী দোকানদার আজিমের স্ত্রী জানান, “জাকিরের লোকজন আমাদের দোকান লুট করে নিয়ে গেছে। দোকান ভেঙে তুলে নিয়ে গেছে। তারা পিস্তল ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়েছে। অনেক মানুষ আহত হয়েছে। জাকির আমার জায়গা জোর করে দখল করে রেখেছে এবং সেখানে তারা মাদক ব্যবসা চালায়। আমি এর বিচার চাই।”

ডিআরইউ সদস্যরা এই বর্বর ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, একটি পেশাজীবী সংগঠনের ওপর এমন সন্ত্রাসী আক্রমণ গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, নিরাপত্তা ও মতপ্রকাশের অধিকারকে হুমকির মুখে ফেলেছে। অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা।

ডিআরইউর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরা হবে এবং মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া শুরু হবে। সাংবাদিক সমাজ একযোগে এ ঘটনায় প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ গড়ে তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।