সোমবার , ২৫শে আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ১০ই ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - শরৎকাল || ২রা রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের প্রায় সাড়ে ৬ কোটি টাকা উদ্ধার ডাকাতির ঘটনায় আটক ৮

প্রকাশিত হয়েছে- রবিবার, ১২ মার্চ, ২০২৩

রাজধানীর তুরাগ থানা এলাকায় ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের লুট করা টাকার মধ্যে ৬ কোটি ৪৩ লক্ষ ৪৮ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার ও এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৮ জনকে আটক করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা-মিরপুর বিভাগ ও গোয়েন্দা-উত্তরা বিভাগের একাধিক টিম।

আটককৃতরা হলো মোঃ সানোয়ার হাসান, মোঃ ইমন ওরফে মিলন, মোঃ আকাশ মাদবর, সাগর মাদবর, মোঃ বদরুল আলম, মোঃ মিজানুর রহমান, মোঃ সনাই মিয়া ও মোঃ এনামুল হক বাদশা।

গত শনিবার সিলেটের সুনামগঞ্জ, ঢাকা ও আশপাশ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।

রবিবার (১২ মার্চ ২০২৩) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বিপিএম (বার), পিপিএম (বার)।

তিনি বলেন, গত ৯ মার্চ ২০২৩ রাজধানীর তুরাগ থানা এলাকা থেকে ডাচ্ বাংলা ব্যাংকের বুথে পৌঁছে দেওয়ার পথে মানি প্ল্যান্ট লিংক প্রাইভেট লিমিটেডের ভাষ্যমতে ১১ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা ডাকাতি হয়। এ ঘটনার পরপরই গোয়েন্দা বিভাগের তৎপরতায় ঐ দিনই ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকার খিলক্ষেত এলাকায় অভিযান চালিয়ে ডাকাতি করা ৩ কোটি ৮৯ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ১১ মার্চ ২০২৩ তারিখে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গোয়েন্দা-মিরপুর বিভাগ ও গোয়েন্দা-উত্তরা বিভাগের বিভিন্ন টিম রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ও সুনামগঞ্জে ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করে ডাকাতির ঘটনায় জড়িত অভিযুক্তদের আটক করে এবং ডাকাতিকৃত ২ কোটি ৫৩ লক্ষ ৯৮ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার করে। এসময় ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি প্রাইভেটকার উদ্ধার করা হয়।

আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য সম্পর্কে তিনি বলেন, আটককৃতরা ৮ মার্চ একটি মাইক্রোবাস সিলেট যাওয়ার উদ্দেশ্যে ভাড়া করে। ৯ মার্চ সকাল ৫:৩০টায় ড্রাইভার কথামতো কুর্মিটোলা যাত্রী ছাউনীর সামনে আসলে আটককৃতরা তাকে পেছনে সিট ঠিক করার কথা বলে। ড্রাইভার পেছনে গেলে তার হাত পা ও চোখ বেধে ফেলে ও গাড়ি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়। এরপর টাকা লুট করার জন্য মিরপুর ডিওএইচএস এলাকায় নির্দিষ্ট নম্বরের গাড়িকে অনুসরণ করার জন্য ওৎপেতে থাকে। এক পর্যায়ে গাড়িটি এলে তারা পিছন পিছন অনুসরণ করে। নির্জন জায়গায় যাওয়ার পর তাদের ব্যবহৃত গাড়ি দিয়ে টার্গেটকৃত গাড়িকে ধাক্কা দিয়ে গাড়িটি থামায়। এরপর তারা তর্কবিতর্ক শুরু করে ও গাড়িটি তাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়। পরবর্তীতে টাকাসহ গাড়িটি নিয়ে তারা ৩০০ ফিট এলাকায় নিয়ে যায়। পথে গাড়িতে থাকা ৫ জনকে তারা নামিয়ে দেয়। দুইটি ট্রাংক ভেঙ্গে টাকা বের করে তাদের সংগ্রহে থাকা ২টি চালের বস্তা ও ৫টি ব্যাগে টাকা ভর্তি করে। তখন আর ব্যাগ না থাকায় বাকি ট্রাংকে থাকা টাকা দেখে তারা ভয় পায়। তারা গাড়ির ড্রাইভারের সিটে বড় একটি টাকার ব্যাগ ফেলে রাখে এবং গাড়িতে কাপড় পরিবর্তন করে চলে যায়। অবশিষ্ট ব্যাগটি ড্রাইভার সুস্থ হয়ে নিজ হেফাজতে নেয়। এছাড়াও সে ফেলে রাখা ট্রাংক থেকে অবশিষ্ট টাকা ভরে সে তার ভাইয়ের হেফাজতে দেয়। পরবর্তীতে ড্রাইভারের স্বীকারোক্তি মতে তাদের বাসা থেকে টাকা উদ্ধার করা হয়।

তিনি আরো বলেন, তাদের ভাষ্যমতে ১১ কোটি টাকা পরিবহনের সময় নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা অর্থাৎ অস্ত্রসহ কোন নিরাপত্তা কর্মী ছিল না। অধিকাংশ সময় এভাবে অধিক টাকা পরিবহন হয় যা পরিবহনকৃত টাকার নিরাপত্তা রক্ষায় পর্য়াপ্ত নয়। টাকা পরিবহনের সময় স্থানীয় থানাকে তারা অবহিত করেনি।

ডাকাতির ঘটনায় জড়িত অন্যান্য অভিযুক্তদের গ্রেফতার ও ডাকাতিকৃত অবশিষ্ট টাকা উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত আছে। আটককৃতদের বিরুদ্ধে তুরাগ থানায় রুজুকৃত মামলায় রিমান্ড আবেদনসহ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।